হালুয়া–রুটির ভাগের জন্য বিএনপি গঠিত হয়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস স্মরণে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। আজ চট্টগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনেছবি: সংগৃহীত

ক্ষমতার হালুয়া রুটির ভাগ-বাঁটোয়ারার জন্য মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররা বিএনপি দল গঠন করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

আজ শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বাঙালির মুক্তি সনদ ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস স্মরণে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ওয়ান ইলেভেন–পরবর্তী দুই বছরসহ টানা ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির পক্ষে এখন আর সহ্য হচ্ছে না। হালুয়া–রুটি মিলছে না। এ জন্য তারা সরকারের কোনো উন্নয়ন অগ্রগতিও সহ্য করতে পারছে না। সে কারণে তারা এখন নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

হাছান মাহমুদ বলেন, গত ১৫ বছরে বাজেটের অঙ্ক সাড়ে ১১ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো একটা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের টার্নওভার বৃদ্ধি পাওয়া মানে সেই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ভালো চলছে। দেশের বাজেটের আকার যখন বৃদ্ধি পায়, তখন বুঝতে হবে দেশ উন্নতি ও সমৃদ্ধির দিকে যাচ্ছে। বিএনপি-জামাত বাজেট ঘোষণার আগেই বিবৃতি প্রস্তুত করে রাখে। গত ১৫ বছরের তাদের বিবৃতি-বক্তব্য যদি দেখেন, তখন হুবহু মিল খুঁজে পাবেন।

হাছান মাহমুদ আরও বলেন, পূর্ব বাংলার মানুষের মধ্যে স্বাধীনতার পক্ষে মনন তৈরি করার জন্যই বঙ্গবন্ধু ছয় দফা ঘোষণা করেছিলেন। ছয় দফার পক্ষে মানুষ ব্যাপক সাড়া দেন। বঙ্গবন্ধু ছয় দফা নিয়ে সারা দেশ ঘুরে বেড়ান, যেখানেই বক্তব্য দেন, সেখান থেকে গ্রেপ্তার করা হতো। ’৬৯–এর গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু মুক্তি লাভ করেন। মুক্তি পাওয়ার পর আইয়ুব খান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দেন বঙ্গবন্ধুকে। বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রিত্বের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু যদি আপস করতেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন। বঙ্গবন্ধুর লক্ষ্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়া নয়, বাংলাদেশের মানুষের মুক্তি। সেই কারণে প্রধানমন্ত্রিত্বের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দিয়ে তিনি স্বাধীনতার লক্ষ্যেই এগিয়ে যান।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিশ্বের ২৭টি দেশকে পেছনে ফেলে বর্তমানে বাংলাদেশ পৃথিবীর ৩৩তম অর্থনীতির দেশ। ১৫ বছর আগে ছিল পৃথিবীর ৬০তম অর্থনীতির দেশ। এই ২৭ দেশের মধ্যে মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরও আছে। জিডিপির আকারে আমরা তাদেরও অতিক্রম করেছি। জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব ও চিন্তা এবং কঠোর পরিশ্রমের কারণেই এগুলো সম্ভব হয়েছে।’

হাছান মাহমুদ বলেন, সব সংকট–ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার দৃঢ়তার কারণে আওয়ামী লীগ আজ পরপর চারবার রাষ্ট্রক্ষমতায়। বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছে। সে কারণে তারা ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। আওয়ামী লীগের সব স্তরের নেতা-কর্মীদের চোখ–কান সব সময় খোলা রাখতে হবে।

হাছান মাহমুদ বিএনপি-জামাত ও কতিপয় বুদ্ধিজীবীর প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, বাজেট জনগণের কল্যাণে যদি না আসে, তাহলে গত ১৫ বছরে দারিদ্র্য ৪০ শতাংশ থেকে নেমে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে কেমনে এল? আর অতি দরিদ্র ২২ শতাংশ ছিল, সেখান থেকে ৫ দশমিক ৭ শতাংশে কীভাবে নেমে এসেছে? এটি সম্ভবপর হয়েছে বাজেট বাস্তবায়নের কারণেই।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, সহসভাপতি ইব্রাহীম হোসেন চৌধুরী, জাতীয় শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি সফর আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, কাউন্সিলর নিছার উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।