জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর মানুষ নির্ভয়ে কথা বলতে পারছে। যেসব কথা বললে জুলুম-জবরদস্তির শিকার হতে হতো, এমনকি গুম হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকত, তা অনায়াসে বলা যাচ্ছে। চারদিকে প্রচুর বয়ান তৈরির আয়োজন। মনে হচ্ছে, এত সব বয়ানের আড়ালে আমরা কি জরুরি সত্যটা হারিয়ে ফেলছি? ঠিক কী কারণে স্বৈরাচারের পতন ঘটল, অভ্যুত্থান–পরবর্তী এক বছরের ঘটনাবলি দেখে মনে হয়, আমরা যেন তা ভুলতে বসেছি।
অভ্যুত্থানের শক্তি এবং তার ব্যাপকতা দেখে অনেকেই ভেবেছিল, এর ভেতর থেকে বেরিয়ে আসা রাজনৈতিক শক্তির কাজ হবে অভ্যুত্থানকে বিপ্লবের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। দেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিপ্লবের জন্য তা সংগঠিত শক্তি হিসেবে কাজ করবে। এমন প্রত্যাশাকে উচ্চাকাঙ্ক্ষাই বলতে হবে। তবে এমন ভাবনা দুরূহ ছিল যে অভ্যুত্থানের অভাবনীয় ঘটনার পর নতুন এক কর্তৃত্ববাদ জনসংস্কৃতির ওপর চড়াও হবে এবং পরিকল্পিত মব–সহিংসতার মাধ্যমে বহু মানুষকে হত্যা করা হবে। এ রকম বহু ঘটনা ঘটতে পেরেছে। সুফি-সন্ত, পীর-দরবেশ ও বাউল-ফকিরদের আস্তানায় হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, সাম্প্রদায়িক সহিংসতার আগুন পুড়িয়ে দিয়েছে সংখ্যালঘুদের ঘরবাড়ি।
আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধকে তাদের ফ্যাসিবাদী সাংস্কৃতিক ভাবাদর্শে পরিণত করেছিল। শত্রু চিহ্নিত করার কাজে এক মোক্ষম অস্ত্র ছিল তাদের সেই নির্মিত বয়ান। আওয়ামী রেজিমের পতনের সঙ্গে সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের সেই আওয়ামী বয়ানেরও পতন ঘটেছে, সন্দেহ নেই। কিন্তু তা কোনোক্রমেই মুক্তিযুদ্ধের পতন নয়; কিংবা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তির বিজয়ও নয়। যারা চব্বিশের অভ্যুত্থানকে মুক্তিযুদ্ধের বিপরীতে দাঁড় করাচ্ছে, তারা একভাবে মুক্তিযুদ্ধের ফ্যাসিবাদী বয়ানেরই বৈধতা দিচ্ছে এবং এই প্রক্রিয়ায় মুক্তিযুদ্ধকে আক্রমণ করে রাজনৈতিক সুবিধা নিশ্চিত করতে চাইছে। আমরা দেখেছি, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী এই শক্তি ফ্যাসিবাদের স্মারক আইকনগুলো মুছে ফেলতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সব চিহ্ন ধ্বংস করতে চাইছে। এটা ভুলে গেলে চলবে না যে মুক্তিযুদ্ধ মানেই আওয়ামী বয়ান নয়। মুক্তিযুদ্ধ এবং এর সাংস্কৃতিক ভাবাদর্শ আমাদের স্বাধীন সত্তার অংশ।
একটি সাংস্কৃতিক ভাবাদর্শ নির্মাণ করতে গিয়ে কেন জনসংস্কৃতির অন্য অভিব্যক্তিগুলো ধ্বংস করতে হবে? এ রকম চেষ্টার নামই সাংস্কৃতিক ফ্যাসিবাদ। দলবদ্ধ হয়ে বাউল-ফকিরদের আস্তানায় হামলা, মাজার জ্বালিয়ে দেওয়া, ওরস অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া, খানকা গুঁড়িয়ে দেওয়া নির্জলা সাংস্কৃতিক ফ্যাসিবাদ।
যেসব ভাবাদর্শ কোনো দল বা শ্রেণিকে রাষ্ট্রক্ষমতায় টিকিয়ে রাখে, সাংস্কৃতিক ভাবাদর্শ সেগুলোর একটি। অভ্যুত্থানের পর সব রাজনৈতিক দল যার যার মতো সাংস্কৃতিক ভাবাদর্শ নির্মাণ করতে চাইবে, এটাই স্বাভাবিক এবং এটা ইতিবাচকও বটে। সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তি হিসেবে উত্সব-অনুষ্ঠান সমাজে থাকা মানুষগুলোকে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত করে, তাদের মধ্যে আত্মিক বন্ধন সৃষ্টি করে, যা একটি রাষ্ট্রকে জনভিত্তির ওপর দাঁড় করায়। এ কারণে বৈশাখী শোভাযাত্রার মতো ঈদমিছিলের প্রত্যাবর্তনও আশাব্যঞ্জক ঘটনা। গজল, হাম্দ, নাত, কাওয়ালি, নাশিদের আয়োজনেও এ দেশের জনসংস্কৃতি সমৃদ্ধ হয়। কিন্তু একটি সাংস্কৃতিক ভাবাদর্শ নির্মাণ করতে গিয়ে কেন জনসংস্কৃতির অন্য অভিব্যক্তিগুলো ধ্বংস করতে হবে? এ রকম চেষ্টার নামই সাংস্কৃতিক ফ্যাসিবাদ। দলবদ্ধ হয়ে বাউল-ফকিরদের আস্তানায় হামলা, মাজার জ্বালিয়ে দেওয়া, ওরস অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া, খানকা গুঁড়িয়ে দেওয়া নির্জলা সাংস্কৃতিক ফ্যাসিবাদ।
২.
ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার বহুল ব্যবহৃত একটি কৌশল হলো জনগোষ্ঠীর একটা অংশকে শত্রু হিসেবে দাগিয়ে দেওয়া এবং তারপর অন্যদের ক্ষোভ ও হিংসাকে কাজে লাগানোর মাধ্যমে তাদেরকে অনুগত ও সংগঠিত করা। কর্তৃত্ববাদী শাসকেরা সব সময় ফ্যাসিবাদের এই কৌশল কমবেশি ব্যবহার করে। ভারতে নরেন্দ্র মোদির হিন্দুত্ববাদী ফ্যাসিবাদ শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করেছে মুসলমান জনগোষ্ঠীকে। এই কৌশল প্রয়োগে বিজেপি এতটাই সফল যে কারও কারও কাছে মানুষের চেয়ে গরুর জীবন বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পেরেছে। উত্তর প্রদেশের দাদরি লিঞ্চিংয়ের ঘটনা তার প্রমাণ। এই ঘটনা সংবেদনশীল মানুষকে হতবাক করে দিয়েছে। ঈদুল আজহায় গরু কোরবানি করেছে সন্দেহে দাদরিতে মোহাম্মদ আখলাক নামের এক গ্রামবাসীকে হত্যা করা হয়। গোরক্ষা আন্দোলন, এনআরসি, সিএএ আইনসহ মুসলিমবিরোধী সব তত্পরতাই মোদির ফ্যাসিবাদী কৌশলের অংশ। অন্যদিকে বাংলাদেশের ধর্মীয় ফ্যাসিবাদীদের প্রধান শত্রু হয়ে উঠেছে সুফি-দরবেশ, পীর-আউলিয়া, বাউল-ফকিরদের পাশাপাশি এ দেশের বামপন্থী ও নারীবাদীরা।
সুফি ও পীর-দরবেশরা বাংলাদেশে ইসলামের প্রথম প্রচারক। তাঁদের কয়েক শ বছরের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, তাঁরা সাংস্কৃতিকভাবে সব সময়ই ছিলেন অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সমন্বয়ধর্মী। সুফি সাধক হিসেবে তাঁরা কেবল মারেফত অবলম্বন করে মরমি ভাবসাধনা করেননি। তাঁরা শরিয়ত, হকিকত, তরিকত ইত্যাদি সবই মেনেছেন। এখনো তাঁদের মধ্যে সেই সমন্বয়ধর্মিতা দেখতে পাওয়া যায়। দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে মাজার জ্বলার সময় আমরা দেখেছি, জ্বলন্ত মাজারের সামনে দাঁড়িয়ে তাঁরা নামাজ পড়ছেন।
বামপন্থীরা সব রকমের ফ্যাসিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের বিরোধী। তাঁরা আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে আসছেন জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের বহু আগে থেকে। গণ-অভ্যুত্থানের ভিত্তিভূমি তৈরি করতে তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। কিন্তু আমরা দেখি, ধর্মীয় ফ্যাসিবাদীরা তাদের ‘দোসর’ বানাতে ব্যস্ত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে নতুন আপদ হিসেবে দেখা দিয়েছে যে ভার্চ্যুয়াল মব, তারা রাবণের দশমাথা নিয়ে হাজির হয়ে বামপন্থী ও নারীবাদীদের আক্রমণ করে যাচ্ছে। তাদের ভাষা এতটাই কুরুচিপূর্ণ যে ইসলামি আদর্শের তুল্য কোনো কিছু তাদের অন্তরে আছে, এটা ভাবা যায় না।
ফ্যাসিবাদের প্রতিমা ভাঙতে গিয়ে তারা মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য, ম্যুরালসহ সব চিহ্ন ধ্বংস করে ফেলতে চায়। বিভিন্ন স্থাপনার নতুন নামকরণের ভেতর দিয়ে একাত্তরকে ঢেকে দেওয়া হচ্ছে চব্বিশ দিয়ে।
নারীবাদীরাও এই পক্ষের আদর্শিক শত্রু। তাঁরা ভার্চ্যুয়াল মবের শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। কখনো কখনো পরিস্থিতি এমন হয় যে ফেসবুকে আক্রান্ত কোনো নারীকে বোধ করি ‘ভার্চ্যুয়াল গ্যাং রেপ’–এর শিকার বলে চিহ্নিত করা যায়। বাস্তবেও নিপীড়নের ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে। আমরা দেখেছি, নারী–নিপীড়ককে জেল থেকে বের করে যেভাবে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়েছে, যেন নারী নিপীড়নকেই উদ্যাপন করা হলো। নারীর পোশাক এই গোষ্ঠীর উদ্বেগের কারণ। পোশাকের কারণে নারীরা আক্রমণের শিকার হচ্ছেন। ঘটনাগুলো ঘটছে প্রকাশ্য রাস্তায়, গণপরিবহনে, শপিং মলে কিংবা সমুদ্রসৈকতে। অভ্যুত্থান-উত্তরকালে নারীদের জন্য এক নতুন ভয়ের কারণ হয়ে উঠেছে এই নীতি পুলিশেরা, যারা একটি বিশেষ ভাবাদর্শ প্রতিষ্ঠার নামে সাংস্কৃতিক ফ্যাসিবাদের শিকড় ছড়াচ্ছে।
অভ্যুত্থান-উত্তর বাংলাদেশে মব–সহিংসতা ফ্যাসিবাদের এক নতুন চেহারা নিয়ে হাজির হয়েছে। মনে হচ্ছে, একচেটিয়া আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতনের পর দেশে দানা বেঁধে উঠছে নব্য ফ্যাসিবাদ। বিবিসি মানবাধিকার সংগঠনগুলোর বরাত দিয়ে বলছে, গত ছয় মাসে ১৪১টি মব–সহিংসতার ঘটনায় ৮৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। অবশ্য আমরা গণমাধ্যমগুলোতে মব–সহিংসতার বাইরের দিকটাই দেখিমাত্র। আমরা দেখি, চাঁদাবাজি এবং রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর কাজে এটা ব্যবহৃত হচ্ছে। কিন্তু মব–অপসংস্কৃতির পুরো অবয়ব সমাজের নানা স্তরে বিপুল শিকড় গজিয়ে ফেলেছে এবং জটিল রূপ নিয়েছে। প্রতিশোধ নেওয়া, শায়েস্তা করা, দখলদারত্ব প্রতিষ্ঠা, প্রভাব খাটানো এবং ক্ষমতায়নের কাজে এর ব্যবহার হচ্ছে।
মব–সহিংসতা বা মব লিঞ্চিংয়ের ঘটনা থেকে দুটি স্পষ্ট ইশারা পাওয়া যায়। প্রথমত, এসব ঘটনা থেকে ধরে নেওয়া যায়, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক, নয়তো সামর্থ্য থাকলেও রাষ্ট্রযন্ত্র ঠিকমতো কাজ করছে না, কিংবা উভয়ই সত্য। কোনো ক্ষেত্রেই সরকার তার দায় এড়াতে পারে না।
৩.
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর মুক্তিযুদ্ধকে ফ্যাসিবাদী নির্মাণ থেকে মুক্ত করা জরুরি। এই জরুরি কাজটি কেউ কেউ করছেন অবশ্যই। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, একটি অংশ একাত্তরকে চব্বিশ দিয়ে ঢেকে ফেলতে চাইছে। ফ্যাসিবাদের প্রতিমা ভাঙতে গিয়ে তারা মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য, ম্যুরালসহ সব চিহ্ন ধ্বংস করে ফেলতে চায়। বিভিন্ন স্থাপনার নতুন নামকরণের ভেতর দিয়ে একাত্তরকে ঢেকে দেওয়া হচ্ছে চব্বিশ দিয়ে।
আমরা দেখি, নৃশংস জোটবদ্ধ হত্যাযজ্ঞে অংশ নেওয়া ঘাতকেরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়ায়, নিপীড়ক এবং হামলাকারীরা দায়মুক্তি পায়, যেন পুরো বিচারব্যবস্থা ও আইনের শাসন জুলাইয়ের আগুন-ঘোর থেকে এখনো বেরোতে পারছে না।রায়হান রাইন, অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
একই সঙ্গে সাঁওতাল বিদ্রোহের স্মারক সিধু-কানুর ভাস্কর্য, বেগম রোকেয়ার ভাস্কর্য কিংবা ময়মনসিংহের শশী লজের ভেনাসের ভাস্কর্যও ভেঙে ফেলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে জগদীশচন্দ্র বসু, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, জীবনানন্দ দাশের নামে করা একাডেমিক ভবনের নামও বদলে ফেলা হয়েছে। এগুলো থেকে খুব স্পষ্ট যে দেশে নতুন এক সাংস্কৃতিক ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে, যার পেছনে কাজ করছে আধিপত্যবাদী এক রাজনৈতিক অভিলাষ।
এই রাজনীতি তার সাংস্কৃতিক ভাবাদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে জুলুম-জবরদস্তি দিয়ে। বিস্ময়কর ব্যাপার যে মব তৈরির মাধ্যমে হত্যা, হামলা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট করা হচ্ছে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের নামে কিংবা জুলাইয়ের পটভূমিতে। নব্য ফ্যাসিবাদী চর্চার নাম হয়ে উঠেছে ইনসাফ, যেন প্রতিহিংসা আর প্রতিশোধের মধ্যেই নিহিত আছে জুলাইয়ের অভিপ্রায়, যেন এভাবেই ন্যায্যতা ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা যাবে!
এসব ক্ষেত্রে সরকারের নিষ্ক্রিয়প্রায় অবস্থান এবং পক্ষপাতমূলক নীরবতা সাংস্কৃতিক ফ্যাসিবাদকে আশকারা দিয়েছে। আমরা দেখি, নৃশংস জোটবদ্ধ হত্যাযজ্ঞে অংশ নেওয়া ঘাতকেরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়ায়, নিপীড়ক এবং হামলাকারীরা দায়মুক্তি পায়, যেন পুরো বিচারব্যবস্থা ও আইনের শাসন জুলাইয়ের আগুন-ঘোর থেকে এখনো বেরোতে পারছে না। কিন্তু বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘাতকেরা যখন বিচারের বাইরে থাকে, সংগঠিত হামলা, নিপীড়ন যখন আশকারা পায়, তখন নিশ্চয়ই পরাজিত ফ্যাসিবাদীরা মুচকি হাসে। তারা হয়তো বলে, এসেছে নতুন ফ্যাসিবাদ, তাকে ছেড়ে দিতে হবে স্থান।
* রায়হান রাইন: লেখক; অধ্যাপক, দর্শন বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়