রাষ্ট্রদূতেরা সীমারেখা লঙ্ঘন করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সমসাময়িক নানা বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন
ছবি: প্রথম আলো

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, বিদেশি রাষ্ট্রদূতেরা যদি তাঁদের কাজের সীমারেখা অতিক্রম করেন, তাহলে সরকার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। আজ সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।

জাপানের রাষ্ট্রদূত ইয়ামা কিমিনোরির বিএনপির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল কি না, প্রশ্নের জবাবে শাহরিয়ার আলম এ কথা বলেন।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমার বিস্তারিত (জাপানের রাষ্ট্রদূতের দুই বৈঠক সম্পর্কে) জানা নেই। ছয় মাস আগে অবশ্যই একটা পর্ব গেছে। যদি কোনো দেশের রাষ্ট্রদূত আবার সে ধরনের কর্মকাণ্ডে জড়িত হন, যেটা আমরা মনে করি যে তাঁদের কাজের সীমারেখা অতিক্রম করছে, তাহলে আমরা অবশ্যই তা বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। তবে এখন পর্যন্ত এ রকম কিছু আমাদের চোখে পড়েনি।’

প্রসঙ্গত, জাপানের রাষ্ট্রদূত গতকাল রোববার গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলটির নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে তাঁর দপ্তরে দেখা করেন। এ সময় জাপানের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন–সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সিইসির কাছে জানতে চান।

আরও পড়ুন
আরও পড়ুন

ছয় কংগ্রেস সদস্যের চিঠি  

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে দেশটির ছয় কংগ্রেসম্যানের চিঠি দেওয়াকে সরকার কীভাবে দেখছে, জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চিঠিটা সংগ্রহ করেছি। অন্যান্য চিঠিপত্রের মতো এখানেও অসামঞ্জস্য আছে। অন্যান্য চিঠির মতো বাড়াবাড়ি আছে। তথ্যের একটা বড় ধরনের ঘাটতি আছে। কংগ্রেসম্যানদের প্রচেষ্টা দুর্বল ও সস্তা।’

এ প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা নিজেরাও (চিঠির) লাইন বাই লাইন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখতে পারেন।

কংগ্রেসম্যানদের এই চিঠি বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে ফাটল ধরাতে পারবে না বলে মন্তব্য করেন শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, এদেশেও রাজনীতিবিদেরা, সংসদ সদস্যরা বিশেষ করে অন্য দলের সংসদ সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীকে অনেক কিছু বলেন, অনেকে হয়তো লেখেনও। হয়তো তাঁর বিরুদ্ধেও লেখা হয়, যেটা তিনি জানেন না। তবে এটা নির্ভর করে সরকারপ্রধান বিষয়টিকে কীভাবে নেবেন।

নির্বাচন সামনে রেখে এ ধরনের আরও চিঠি চালাচালি হতে পারে বলে মনে করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। তিনি বলেন, এ রকম চিঠি অতীতেও এসেছে। ভবিষ্যতে আরও বেশি আকারে আসতে পারে। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে, এ ধরনের কর্মকাণ্ড আরও বাড়বে। তবে গণমাধ্যমকে এটা যাচাই করে নিতে হবে।

বাংলাদেশে নির্বাচন সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্টদের তৎপরতা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তাঁরা তাঁদের কাজ করবেন। আমরা আমাদের কাজ করব।’

শাহরিয়ার আলম বলেন, বিদেশি কারও কাছে ধরনা দিয়ে অথবা কারও চাপে পড়ে অথবা তার সঙ্গে সম্পর্কটা শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতেই হবে, এভাবে এগিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে পেছনে ফেলার নীতিতে আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে না। সরকার সেই নীতিতেই কাজ করছে।