মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় দায়ীদের জবাবদিহি নিশ্চিতের দাবি ব্লাস্টের

মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় ভুক্তভোগীকেন্দ্রিক সেবা, ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের পাশাপাশি বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ সব ধরনের সহিংসতায় দায়ীদের জবাবদিহি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আজ বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইনি সহায়তা প্রদানকারী সংগঠনটি এ দাবি জানায়।

বিজ্ঞপ্তিতে ব্লাস্ট জাতিসংঘের মানবাধিকার–বিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের সুপারিশের কথা তুলে ধরে। সেখানে ভুক্তভোগী পরিবার ও ব্যক্তিকেন্দ্রিক সহায়তা প্রদান এবং সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায্য বিচার নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।

ব্লাস্ট বলেছে, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ঘটে যাওয়া মানবাধিকার লঙ্ঘন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত দেশে যেসব সহিংসতার ঘটনা ঘটছে, তার সুষ্ঠু তদন্ত ও যথাযথ বিচার নিশ্চিত করা জরুরি।’

ব্লাস্ট বিশেষভাবে রাজনৈতিক বা স্বার্থসংশ্লিষ্ট কারণে হয়রানিমূলক মামলা, গণগ্রেপ্তার, সংঘবদ্ধ সহিংসতা (মব ভায়োলেন্স), নারী ও শিশুর প্রতি ক্রমবর্ধমান সহিংসতার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছে। এ ছাড়া মিথ্যা ও অপতথ্যের মাধ্যমে হয়রানি, সাংস্কৃতিক কর্মী বিশেষ করে বাউলশিল্পীদের প্রতি সহিংসতা, আদালতে বিচারপ্রার্থীদের ওপর প্রাণঘাতী হামলা এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতসংক্রান্ত ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্ত ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বলেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় নিহত ১১৪ জনের পরিচয় শনাক্ত করতে পুলিশের মরদেহ উত্তোলনের উদ্যোগকে ‘প্রশংসনীয়’ বলে উল্লেখ করা হয়। একই সঙ্গে ব্লাস্ট সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে, যাতে নিহত ব্যক্তিদের পরিবার মরদেহ যথাযথভাবে পুনরায় সৎকারের সুযোগ পায়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সর্বশেষ তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, গত তিন মাসে সারা দেশে ৬৩৬ জন নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। ব্লাস্ট মনে করে, এই পরিসংখ্যান সমাজে নারী ও শিশুর নিরাপত্তাহীনতা এবং তাঁদের প্রতি সহিংসতাকে স্পষ্টভাবে তুলে ধরে।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসের প্রতিপাদ্য ‘মানবাধিকার: প্রতিদিনের জীবনে অপরিহার্য’ উল্লেখ করে ব্লাস্ট সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। সব মানুষের মানবাধিকার, আইনের শাসন ও সাংবিধানিক অধিকার সুরক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং ভবিষ্যতে এমন মানবাধিকার লঙ্ঘনের পুনরাবৃত্তি রোধ করা অত্যাবশ্যক বলে মনে করে সংগঠনটি।