আধুনিকায়নের পর পুনরায় বিচারকাজের সূচনা উপলক্ষে বসল বিশেষ অধিবেশন

নানা মাত্রায় সংস্কারসহ আধুনিকায়ন করা হয়েছে প্রধান বিচারপতির এজলাস। এজলাসকক্ষে পুনরায় বিচারিক কার্যক্রম শুরুর আগে আজ সোমবার বিকেলে বসে এক বিশেষ অধিবেশনছবি: সংগৃহীত

নানা মাত্রায় সংস্কারসহ আধুনিকায়ন করা হয়েছে প্রধান বিচারপতির এজলাস, যেটি আপিল বিভাগের ১ নম্বর কোর্ট হিসেবে পরিচিত। এজলাসকক্ষে পুনরায় বিচারিক কার্যক্রম শুরুর আগে আজ সোমবার বিকেলে বসে এক বিশেষ অধিবেশন।

পুনরায় বিচারিক কার্যক্রমের সূচনা উপলক্ষে নতুনভাবে সুসজ্জিত বিচারকক্ষটিতে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে সবচেয়ে আধুনিক অনুষঙ্গগুলো এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চ্যুয়াল কোর্টের মাধ্যমে বিচারকার্য পরিচালনা করতে এ আদালত এখন সম্পূর্ণ সক্ষম।’

অধিবেশন বসার আগে প্রধান বিচারপতির এজলাস আধুনিকায়নের নামফলক উন্মোচন করা হয়। এরপর বিশেষ ওই অধিবেশনে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে এজলাসে বসেন সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিরা।

অধিবেশনে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বিচার বিভাগীয় পরিকল্পনার একটি উল্লেখযোগ্য স্থান দখল করে আছে দেশের আদালতগুলোর ভৌত অবকাঠামোর সংস্কার, সংরক্ষণ ও উন্নয়ন। আজ বাংলাদেশের শীর্ষ আদালত তথা প্রধান বিচারপতির এজলাসকক্ষ সুসজ্জিত হয়ে উঠেছে। আমি বিশ্বাস করি, এই আয়োজন নতুন দিনের সূচনামাত্র। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের অধস্তন আদালতের ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন নতুন করে প্রাণ পাবে।’

অধিবেশনে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বক্তব্য দেন। উপস্থিত ছিলেন পাঁচজন সাবেক প্রধান বিচারপতি। তাঁরা হলেন বিচারপতি সৈয়দ জে আর মোদাচ্ছির হোসেন, বিচারপতি মো. রুহুল আমিন, বিচারপতি মো. তাফাজ্জাল ইসলাম, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। এ ছাড়া সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বেশ কয়েকজন সাবেক বিচারপতি, আইনজীবী ও সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বিশেষ এ অধিবেশন উপলক্ষে প্রথমবারের মতো দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিচারকক্ষে গণমাধ্যমকর্মীদের ক্যামেরাসহ প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে সংবাদ ছাড়া স্থিরচিত্র ও ভিডিও অন্য মাধ্যমে ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে।

এর আগে ছাদ চুইয়ে পানি পড়ার কারণে গত ২১ মার্চ আপিল বিভাগের (প্রধান বিচারপতির কোর্ট) বিচারকাজ কিছু সময়ের জন্য ব্যাহত হয়। এরপর সুপ্রিম কোর্টের অবকাশ শুরু হয়। ছুটি শেষে গত ২১ এপ্রিল থেকে সুপ্রিম কোর্টের নিয়মিত কার্যক্রম শুরু হয়। এর মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আপিল বিভাগের ১ নম্বর কোর্টের এজলাসকক্ষের সংস্কার চলমান থাকায় ২১ এপ্রিল থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ২ নম্বর কোর্টের এজলাসকক্ষে আপিল বিভাগের বিচারিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এর পর থেকে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ২ নম্বর কোর্টের এজলাসকক্ষে বিচারিক কার্যক্রম চলে আসছিল।

আজ সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামীকাল (মঙ্গলবার) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আপিল বিভাগের ১ নম্বর কোর্টের বিচার কার্যক্রম প্রধান বিচারপতির এজলাসকক্ষে এবং ২ নম্বর কোর্টের বিচার কার্যক্রম ২ নম্বর কোর্টের এজলাসকক্ষে যথারীতি পরিচালিত হবে।