এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ। যার প্রভাব সারা বিশ্বের বিভিন্ন খাতে পড়েছে। প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের ডাকসেবাতেও। যুদ্ধের পর থেকে ফ্লাইট না পাওয়ায় রাশিয়া ও ইউক্রেনে ডাক অধিপ্তরের সেবা বন্ধ রয়েছে। অধিদপ্তর জানিয়েছে, ফ্লাইট পেলে সেবা চালু হবে।
জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থা ইউনিভার্সাল পোস্টাল ইউনিয়নের সদস্যভুক্ত সব দেশের সঙ্গেই বাংলাদেশের ডাক যোগাযোগ করতে পারে। তবে ডাক অধিদপ্তরের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ এয়ারলাইনসের সেবা যেসব দেশে আছে, সেখানেই ডাকসেবা চালু থাকে।
ডাক অধিদপ্তরের ডাকসেবার জন্য আইপিএস শাখা থেকে জানা যায়, বিমান বাংলাদেশ, এমিরেটস এয়ারলাইনস, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস, মালয়েশিয়া এয়ারলাইনস ও কুয়েত এয়ারওয়েজের সঙ্গে তাদের চুক্তি রয়েছে। পাঁচটি এয়ারলাইনসের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে ডাকসেবা দেয় ডাক অধিদপ্তর।
যেসব দেশের সঙ্গে বর্তমানে লেটার সেবা বন্ধ আছে, সেসব দেশের নাম লাল চিহ্নিত করা আছে অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে। তাতে দেখা যায় আফগানিস্তান, রাশিয়াতে লেটার সেবা এখন বন্ধ। যদিও ইউক্রেন লাল চিহ্নিত নয়, তবে অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সে দেশেও সেবা বন্ধ আছে।
বিদেশে দ্রুত মেইল বা ডাক পাঠানোর জন্য ডাক অধিদপ্তরের ইএমএস সেবা রয়েছে। বিশ্বের ৪৪টি দেশে এ সেবা দিচ্ছে তারা। তাদের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়া, আইসল্যান্ড, ইরান, লুক্সেমবার্গ ও ইয়েমেনে এখন ইএমএস সেবা বন্ধ।
ডাক অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, রাশিয়াতে ডাক যেত এমিরেটস এয়ারলাইনসে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এমিরেটসের ফ্লাইট অধিদপ্তর পাচ্ছে না। রাশিয়ায় তাদের কিছু বুকিংয়ের চাহিদা আছে, কিন্তু সেবা বন্ধ থাকায় পাঠাতে পারছেন না।
অধিদপ্তরের আইপিএস শাখা কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ভারত ও বেলারুশের মাধ্যমে ডাক পাঠানোর চেষ্টা করা হয়েছিল, তবে তেমন সাড়া মেলেনি। তাঁরা চেষ্টা করছেন চুক্তিবদ্ধ কোনো এয়ারলাইনসের মাধ্যমে সেবা আবার চালু করতে। এ ছাড়া জানান, ইএমএস সেবার জন্য বাকি তিন দেশে চুক্তিবদ্ধ এয়ারলাইনসগুলোর ফ্লাইট না পাওয়ায় সেবা বন্ধ আছে।
ডাক অধিদপ্তর ছাড়াও জার্মানভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ডিএইচএল এবং যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ফেডেক্সও বাংলাদেশে তাদের সেবা পরিচালনা করছে। ডিএইচএল তাদের ওয়েবসাইটেই জানিয়েছে, রাশিয়ায় তারা এখন সেবা দিচ্ছে না। এ ছাড়া ফেডেক্সে খোঁজ নিয়েও জানা যায়, যুদ্ধ শুরুর পর বাংলাদেশ থেকে রাশিয়াতে সেবা বন্ধ রয়েছে। ডাক বিভাগ লিখিত বক্তব্যে জানিয়েছে, তারা বন্ধ থাকা দেশগুলোতে ডাক পাঠানোর বিকল্প উপায় খুঁজছেন।