চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক

উদীয়মান দেশগুলোর জোট ব্রিকসের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। এ সময় কুশল বিনিময় করেন তাঁরা। জোহানেসবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকা, ২৩ আগস্ট
ছবি: বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে হোটেল হিলটন স্যান্ডটনে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং জোহানেসবার্গ সফর করছেন। বুধবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় এই দুই নেতার বৈঠক শুরু হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার ৭০টি দেশের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ফ্রেন্ডস অব ব্রিকস লিডারস ডায়ালগে (ব্রিকস-আফ্রিকা আউটরিচ ও ব্রিকস প্লাস ডায়লগ) ‘ব্রিকসের নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের’ সদস্য হিসেবে বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্য দেবেন।

চীনের প্রেসিডেন্ট চিন পিংয়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকের সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কন্যা ও ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের থিম্যাটিক অ্যাম্বাসেডর এবং অটিজম অ্যান্ড নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন সায়মা ওয়াজেদ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মাসুদ বিন মোমেন উপস্থিত ছিলেন।

দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারের তাগিদ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল আফ্রিকার দেশগুলোতে নিয়োজিত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূতদের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, ব্যবসা ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী গতকাল তাঁর আবাসস্থল হোটেল র‌্যাডিসন ব্লু স্যান্ডটনে ‘আফ্রিকাতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সম্মেলনে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, ‘অর্থনৈতিক কূটনীতিকে গুরুত্ব দিন। কারণ, রাজনীতির পাশাপাশি অর্থনীতিও গুরুত্বপূর্ণ। আপনি এখানকার যে দেশে কাজ করছেন, সেখানে বাণিজ্য, ব্যবসা ও বিনিয়োগসংক্রান্ত সম্ভাবনা খুঁজে বের করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী আফ্রিকার দেশগুলোতে আরও বাংলাদেশি দক্ষ জনশক্তি পাঠানো, প্রবাসী আয় বাড়ানোর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং আফ্রিকার দেশগুলোতে জাতিসংঘ মিশনে কর্মরত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রদূতদের নির্দেশ দেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মাসুদ বিন মোমেন সম্মেলন সঞ্চালনা করেন।

দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার নূর-ই-হেলাল সাইফুর রহমান, মরক্কোয় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন, মিসরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মনিরুল ইসলাম, মরিশাসের পোর্ট লুইসে বাংলাদেশ হাইকমিশনের হাইকমিশনার রেজিনা আহমেদ, নাইজেরিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মাসুদুর রহমান, আলজেরিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. জুলকার নাইন, কেনিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার তারেক মুহাম্মদ, লিবিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মোহাম্মদ খায়রুল বাশার ও সুদানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন।

স্বপ্ন ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণ আফ্রিকার বিনিয়োগকারীদের, বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি), অবকাঠামো, টেক্সটাইল ও পর্যটন খাতে ব্যাপক বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, তাঁর স্বপ্ন বাংলাদেশকে একটি ট্রিলিয়ন (এক লাখ কোটি) ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত করা।

প্রধানমন্ত্রী গতকাল জোহানেসবার্গে র‌্যাডিসন হোটেল অ্যান্ড কনভেনশন সেন্টারে ‘দ্য রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার: বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড বিজনেস সামিট’ শীর্ষক এক রোড শো অনুষ্ঠানে তাঁর বাসস্থান থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে দেওয়া বক্তৃতায় এ কথা বলেন। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার একটি স্বপ্ন আছে, যা বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষেরও স্বপ্ন, আর তা হলো ২০৪১ সালের মধ্যে একটি ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি এবং একটি সম্পূর্ণ উন্নত স্মার্ট জাতিতে পরিণত করা।’ তিনি আরও বলেন, স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে তাঁরা সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির জন্য দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য নির্ধারণে একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রচেষ্টা শুরু করেছেন।