সাক্ষাৎকার: লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কামাল আকবর

জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের হাতে এখন আছে মাত্র পৌনে ৩ কোটি টাকা

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন’ গঠন করা হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ফাউন্ডেশনে সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।

সরকার অনুমোদিত অরাজনৈতিক, স্বেচ্ছাসেবামূলক ও জনকল্যাণমূলক বেসরকারি সংস্থাটিতে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কামাল আকবর। ফাউন্ডেশনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কামাল আকবরের সঙ্গে কথা বলেছেন মানসুরা হোসাইন

প্রথম আলো:

প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে ১০০ কোটি টাকা অনুদানে ফাউন্ডেশন যাত্রা শুরু করেছিল। আলোচনায় আছে, ফাউন্ডেশনের তহবিল কমতে কমতে তলানিতে ঠেকেছে

কামাল আকবর: ১০০ কোটি টাকা অনুদান পেয়েছিল ফাউন্ডেশন। এরপর ৫ কোটি টাকা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ৫ কোটি টাকা দিয়েছিলেন নাম প্রকাশ না করা এক নারী। ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইট ও ফেসবুকে এবং আরও কিছু জায়গা থেকে সংখ্যাটি হয় ১১২ কোটি টাকা। ১০০ কোটি টাকা প্রথম বরাদ্দের পর আরও প্রায় ২৩৪ কোটি টাকা পাওয়ার কথা ছিল মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় থেকে। কিন্তু পরে আর পাওয়া যায়নি। জুলাই ফাউন্ডেশনের কোনো বাজেট কোড নেই। এমনকি ফাউন্ডেশনের বেতনভুক্ত কর্মীদের বেতন দেওয়ারও কোনো কোড নেই।

এ মুহূর্তে ফাউন্ডেশনের হাতে পৌনে তিন কোটি টাকার মতো আছে। তাই আর্থিক সহায়তা কার্যক্রম একেবারেই সীমিত পরিসরে পরিচালনা করতে হচ্ছে। তবে আমরা বসে নেই, দেশি–বিদেশি সংস্থার কাছ থেকে অনুদান পাওয়ার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। অনেকেই আগ্রহও প্রকাশ করেছে।

আরও পড়ুন
প্রথম আলো:

এ পর্যন্ত ফাউন্ডেশন কতজনকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে?

কামাল আকবর: বর্তমানে সরকারের গেজেটভুক্ত আহত ব্যক্তির সংখ্যা ১৩ হাজার ৮০০। আর শহীদের সংখ্যা ৮৩৬। ফাউন্ডেশন থেকে এ পর্যন্ত (৪ সেপ্টেম্বর) ৮২০টি শহীদ পরিবারকে ৪১ কোটি টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ১৫টি শহীদ পরিবারে ওয়ারিশ–সংক্রান্ত জটিলতা চলছে। ৫ হাজার ৬৯৬ জন আহত যোদ্ধাকে ৭১ দশমিক ৭ কোটি টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে। ৮ হাজার ৫০০ জনের বেশি আহত ব্যক্তিকে কোনো অনুদান দেওয়াই সম্ভব হয়নি।

প্রথম আলো:

২ হাজার ৪০০ বর্গফুট কার্যালয়ের ভাড়া, কর্মরত ৪৪ জনের বেতন–ভাতা কোন খাত থেকে পাচ্ছেন?

কামাল আকবর: ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ ২ দশমিক ৫ কোটি টাকা এবং ০ দশমিক ৫ কোটি টাকা আপত্কালীন ও জরুরি ব্যয়সহ ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল ২০২৪-২৫ অর্থবছরে। এটাকে অপারেশনাল ফান্ড বলে। এ টাকা বরাদ্দ হয়েছিল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) থেকে। কার্যালয় ভাড়া এবং কর্মীদের বেতন–ভাতা বাবদ ফাউন্ডেশনের মাসে খরচ হচ্ছে ৩১ লাখ টাকা। সত্যি কথা বলতে তিন কোটি টাকার যে বরাদ্দ পেয়েছিলাম, তা দিয়েই চলছে। পরবর্তী সময়ে বরাদ্দ না পেলে সমস্যায় পড়তে হবে। সরকারকে দাতব্য কোনো কোড থেকে এ খাতে বরাদ্দ দেওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছি। এ ছাড়া এ ফান্ড থেকে আহত যাঁদের হুইলচেয়ার কেনা বা আর যাওয়ার কোনো জায়গা নেই; তাদের স্বল্প পরিসরে সহায়তা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন
প্রথম আলো:

গত ৮ মে ফাউন্ডেশনের সিইও পদ থেকে পদত্যাগ করেন শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর যমজ ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। সেদিনই আপনি আনুষ্ঠানিকভাবে এ পদে এলেন। তবে শহীদ পরিবারের সদস্য এবং আহত ব্যক্তিদের অনেকেই আপনাকে এ পদে দেখতে চান না বলে প্রতিবাদ ও মানববন্ধন করেন। বিষয়টিকে আপনি কীভাবে দেখছেন?

কামাল আকবর: আমার জায়গায় আগে যিনি ছিলেন, তিনি হলেন শহীদ পরিবারের সদস্য। আমি হচ্ছি মিলিটারি ব্যাকগ্রাউন্ডের একজন অফিসার। এর আগে বিশ্বব্যাপী আমার কাজের এলাকাটা ছিল বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা, যুদ্ধ–পরবর্তী দেশে পুনর্বাসনসহ বিভিন্ন কাজ। তাই হয়তো প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস স্যার আমাকে দায়িত্বটা দিয়েছেন। কিন্তু শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহত ব্যক্তিদের কাছে আমি অজানা একজন মানুষ। প্রাথমিকভাবে এমন একজনকে অভিভাবক হিসেবে মানতে পারেননি অনেকে, বিষয়টিকে আমি স্বাভাবিকভাবেই মেনে নিয়েছি। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমি আমার আন্তরিকতা দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছি। আমি তো বলেছি আপনাকে, এ দায়িত্ব নেওয়ার বিষয়টিকে আমি পেশা হিসেবে দেখছি না। যদিও ফাউন্ডেশন থেকে বেতন পাচ্ছি।

সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কামাল আকবর
ছবি: মানসুরা হোসাইন
প্রথম আলো:

মীর মাহবুবুর রহমানকে প্রথমে ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক, পরে সিইও করা হয়। এরপর তো পদত্যাগ করলেন। অন্যদিকে গত ২২ জানুয়ারি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। কোনো ঝামেলার জন্য তাঁরা পদত্যাগ করলেন?

কামাল আকবর: না, কোনো ঝামেলার জন্য তাঁরা পদত্যাগ করেননি। ফাউন্ডেশনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কেউ সরাসরি রাজনীতিতে যোগ দিলে তিনি আর ফাউন্ডেশনের দায়িত্বে থাকতে পারবেন না, তাই সারজিস আলম দায়িত্ব ছেড়েছেন। আর মীর মাহবুবুর রহমান উচ্চশিক্ষার জন্য দায়িত্ব ছেড়েছেন। তবে তিনি এখনো ফাউন্ডেশনের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

আরও পড়ুন
প্রথম আলো:

আপনি দায়িত্ব নেওয়ার পর জুলাই মাসে দ্বিতীয় ধাপের টাকা না পেয়ে আহত কয়েকজন রাজধানীর শাহবাগে ফাউন্ডেশনের অফিসে ভাঙচুর করেন...

কামাল আকবর: প্রাথমিকভাবে প্রত্যেক শহীদের পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা এবং আহত প্রত্যেক ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা করে দেওয়ার কথা ছিল। এ ছাড়া ক্ষতি অনুযায়ী জরুরি আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কথা ছিল। ফাউন্ডেশন সবাইকে এখনো আর্থিক সহায়তা দিতে পারেনি।

আহত ব্যক্তিদের কোনো ক্যাটাগরির কেউ কেউ হয়তো দ্বিতীয় ধাপের টাকা পেয়েছেন, আবার কেউ কেউ প্রথম ধাপের টাকাই পাননি। সংক্ষুব্ধ হওয়ার জায়গা যে আমি তো এক টাকাও পাইনি। উত্তর হলো, আহত ব্যক্তিদের সবার ধরন কিন্তু এক না। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত, কর্মক্ষমতা হারিয়ে উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে, অথবা হাত-পা হারিয়েছেন, তাঁরা অগ্রাধিকার পেয়েছেন। যেমন সি ক্যাটাগরির আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৮ হাজার ৭০০ জনের মতো এক টাকাও পাননি। আবার তহবিল পেলে এভাবেই অগ্রাধিকারভিত্তিতে সহায়তা দেওয়া হবে, এটা সবাইকে বুঝতে হবে।

সাক্ষাৎকারের একটি মুহূর্তে লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কামাল আকবর
ছবি: প্রথম আলো
প্রথম আলো:

গত ১৭ জুন সরকার ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ ২০২৫’–এর আওতায় ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর’ গঠন করেছে। এ অধিদপ্তরের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহায়তা, ভাতা দেওয়া, শিক্ষা বা কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসহায়তা, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ইতিহাস ও স্মৃতি সংরক্ষণ, পুনর্বাসনসহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করবে। ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও জুলাই যোদ্ধা কল্যাণ ও পুনর্বাসন তহবিল’ও থাকবে অধিদপ্তরের। জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনও একই কাজ করছিল বা করছে। তাহলে সমন্বয়টা হচ্ছে কীভাবে?

কামাল আকবর: মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে সমন্বয়ের ক্ষেত্রে ঝামেলা হচ্ছে। আসলে সমন্বয়ের ব্যবস্থাটাই নেই। এ মন্ত্রণালয় আমাদের কিছু জানাতে বাধ্য নয়। কারণ, সরকার থেকে এমন কোনো নির্দেশনা নেই। এ মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, অনেক ক্ষেত্রে আমরা বিষয়টি অবগত না। এ সমস্যা সমাধানে আন্তমন্ত্রণালয় বা ওপর থেকে সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে।

প্রথম আলো:

সরকারি গেজেট থেকে ভুয়া আট শহীদের নাম বাতিল করা হয়েছে। ভুয়া আহত ব্যক্তিদেরও বিভিন্নভাবে শনাক্ত করা হচ্ছে। এই ভুয়া ব্যক্তিরা ফাউন্ডেশন থেকে সহায়তা পেয়েছিলেন?

কামাল আকবর: গেজেট বাতিল হওয়া ভুয়া আট শহীদের মধ্যে তিনজন ফাউন্ডেশন থেকে সহায়তা পেয়েছিলেন। এই তিনজনকে টাকা ফেরত দিতে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ভুয়া আহত ব্যক্তিদের ১৫ জন সহায়তা নিয়েছিলেন। পাঁচজন টাকা ফেরত দিয়েছেন। একজনের চেক হোল্ড করা হয়েছে। অন্যদের কাছ থেকে টাকা ফেরত আনার প্রক্রিয়া চলমান। এ পর্যন্ত তিনজন ভুয়া আহত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফাউন্ডেশন থেকে প্রতারণার মামলা করা হয়েছে, আসামিরা বর্তমানে জামিনে আছেন।

প্রথম আলো:

আপনার বা ফাউন্ডেশনের সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ কোনটি?

কামাল আকবর: এই মুহূর্তে আমার সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে আহত যোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের সম্মানজনক একটি জায়গায় পুনর্বাসিত করা। পুনর্বাসন বলতে শুধু একটি চাকরি না যে কোনো প্রতিষ্ঠান বলে দিল তালিকা দেন ২০০ জনের চাকরি দিয়ে দিচ্ছি। চাকরির পাশাপাশি সম্মানটা যাতে পান, তা নিশ্চিত করা। এরপর বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে অভ্যুত্থানের পর থেকে ট্রমার মধ্যে থাকা মানুষদের সন্তুষ্ট করা। এক পা হারানো আহত ব্যক্তি এলেন, তিনি হাসপাতালের এই দরজা সেই দরজায় ঘুরছেন। কোথায় ফলোআপ চিকিৎসাটা পাবেন বুঝতে পারছেন না। তাঁর বোঝার এবং চিকিৎসার জায়গাটা দুটিই আমাকে ডিল করতে হলো। বুঝিয়ে দিতে হয়। হাসপাতালে সরকারিভাবে ওষুধ পাওয়ার কথা; কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে না। আমার ও তো এ রকম বাজেট নেই। কিন্তু আমাদের বিষয়টি হচ্ছে যে কাউকে আমরা ফিরিয়ে দিতে চাই না। যাবে কোথায় তাহলে? ঢাকায় এসে আটকে গেছেন, বাড়িতে যাওয়ার পয়সা নেই, তো এই লঞ্চ বা বাসভাড়ার জন্যও অনেকে আমাদের কাছে আসেন। ফাউন্ডেশনকে পরিবার মনে করেই আসেন।

জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কামাল আকবর
ছবি: প্রথম আলো
প্রথম আলো:

পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আলাদা বাজেট আছে ফাউন্ডেশনের?

কামাল আকবর: পুনর্বাসনের জন্য আমরা আসলে সরকারের কাছ থেকে আলাদা করে ফান্ড চাইনি। পরীক্ষামূলকভাবে পুনর্বাসনের অংশ হিসেবে ছোট আকারে বিভিন্ন কাজ করা হচ্ছে। এ থেকে একটি ধারণা করা যাবে আসলে কতগুলো প্রকল্পের জন্য কত টাকা লাগবে। এ ছাড়া মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, বিজিএমইএ, কর্মসংস্থান ব্যাংক, এসএমই ফাউন্ডেশন, জাপান সরকারসহ সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা পুনর্বাসন কার্যক্রমে সহযোগিতা করছে। ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের তথ্য যাচাই–বাছাই করা, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মৃতি জাদুঘর তৈরিতে বিভিন্নভাবে সহায়তা করা, স্মৃতি রক্ষাসহ সমন্বয়ের কাজটি করছেন ফাউন্ডেশনে কর্মরতরা।

প্রথম আলো:

জুলাই আন্দোলনটাকে কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন

কামাল আকবর: আন্দোলনটা ৩৬ দিনের হলেও এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব আছে। এ আন্দোলন পৃথিবীকে নাড়া দিয়েছে। তবে আমাদের অনেকেই বুঝে উঠতে পারছি না যে এই ৩৬ দিনে একটি দেশের কতটুকু পরিবর্তন হয়েছে। জাতিসংঘে কাজের অভিজ্ঞতায় আফ্রিকার প্রায় সব যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে কাজ করার সুযোগ হয়েছিল আমার। একদম রুট থেকে আন্দোলনে অংশ নিয়ে ১৫-১৬ বছরের একটি শাসনকে উৎখাত করে একেবারে চলে যেতে বাধ্য করাকে ‘লামসাম’ বলার উপায় নেই। মানুষের মধ্যে মুক্তির প্রত্যাশা ছিল এবং এখনো আছে। অন্তর্বর্তী সরকারের মতো আমরাও আর্থসামাজিক জায়গায় একটি অন্তর্বর্তী জায়গায় আছি। বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামা মানুষগুলো এখনো বৈষম্যবিরোধী একটি বাংলাদেশ দেখতে চান। তবে সবকিছুর সমাধান ঠাস করে আসবে না। সমাধানটা আসতে হলে সমাজের সবাইকে এক যোগে সময় দিতে হবে, কাজ করতে হবে।

প্রথম আলো:

সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

কামাল আকবর: প্রথম আলোকেও অনেক ধন্যবাদ।