বুয়েট ছাত্র ইমতিয়াজের হলে থাকতে আইনগত বাধা নেই

হাইকোর্ট ভবনফাইল ছবি

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেনের আবাসিক হলের সিট (আসন) বাতিলের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। তাঁর করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার রুলসহ এ আদেশ দেন। এর ফলে হলে থাকতে ইমতিয়াজের আইনগত কোনো বাধা নেই বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

গত ২৭ মার্চ মধ্যরাতে বুয়েট ক্যাম্পাসে সংঘটিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পরদিন বুয়েট কর্তৃপক্ষ তিন দফা সিদ্ধান্ত–সংবলিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে দেয়। এতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ ব্যাচের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেনের হলের সিট বাতিল করা হলো। এই সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে ইমতিয়াজের পক্ষে গত বৃহস্পতিবার রিট দায়ের করেন আইনজীবী এম হারুনুর রশীদ খান।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান ও তৌফিক সাজাওয়ার।

পরে রিট আবেদনকারীর আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্ট রুল দিয়ে রিট আবেদনকারীর ক্ষেত্রে বিজ্ঞপ্তির অংশবিশেষ স্থগিত করেছেন। ফলে রিট আবেদনকারী আবাসিক হলে থাকতে পারবেন।

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার পর ২০১৯ সালের ১১ অক্টোবর ‘জরুরি বিজ্ঞপ্তি’ জারি করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে বলা হয়, ‘এতদ্বারা সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল রাজনৈতিক সংগঠন এবং এর কার্যক্রম কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে নিষিদ্ধ করা হলো।’এর পরিপ্রেক্ষিতে ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ হয়।

এর প্রায় সাড়ে চার বছর পর গত ২৭ মার্চ মধ্যরাতের পর ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মী বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন এবং রাজনৈতিক কার্যক্রম চালান, এমনটি উল্লেখ করে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের অংশ হিসেবে তাঁরা টার্ম ফাইনাল পরীক্ষাসহ সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, ২৭ মার্চ মধ্যরাতের পর ক্যাম্পাসে ‘বহিরাগতদের’ প্রবেশ ও রাজনৈতিক সমাগমের ‘সংগঠক’শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে বুয়েটের হল থেকে তাঁর সিট বাতিল করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ইমতিয়াজ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।

‘জরুরি বিজ্ঞপ্তি’র বৈধতা নিয়ে ইমতিয়াজ হাইকোর্টে রিট করেন। এর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ১ এপ্রিল হাইকোর্ট রুল দিয়ে ওই বিজ্ঞপ্তির কার্যক্রম স্থগিত করেন। ফলে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি করার ক্ষেত্রে বাধা কাটে। এরপর বুয়েটের হলে সিট ফেরত পেতে রিট করেন তিনি।