ফিলিস্তিনের জন্য ২০২৩ সাল দ্বিতীয় মহাবিপর্যয়: ঢাকায় ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসন নিয়ে প্রতিবাদী চিত্রকর্মের আয়োজন করা হয়। এ সময় বক্তব্য দেন ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান। ঢাকা, ২৯ নভেম্বর
ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলের আগ্রাসন আর দখলদারির বিরুদ্ধে প্রতিবাদী চিত্রকর্ম নিয়ে প্রদর্শনী হয়ে গেল বুধবার রাতে। বুধবার (২৯ নভেম্বর ছিল) ফিলিস্তিনের প্রতি ‘আন্তর্জাতিক সংহতি দিবস’। দিবসটি উপলক্ষে রাজধানীর বারিধারায় ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে এক দিনের সংহতিমূলক শিল্প প্রদর্শনীর আয়োজন করে ঢাকায় ফিলিস্তিন দূতাবাস।

ঢাকায় নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এস ওয়াই রামাদান প্রদর্শনীতে আসা সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি প্রকাশ অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘১৯৪৮ সাল ছিল ফিলিস্তিনের জন্য প্রথম নাকবা বা মহাবিপর্যয়। ২০২৩ আমাদের জন্য দ্বিতীয় নাকবা হয়ে এসেছে।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, সারা বিশ্ব দেখছে কীভাবে নিরপরাধ নারী-শিশুদের ওপর ইসরায়েল হামলে পড়ছে। এই যুদ্ধকে এখন আর ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে ইসরায়েল বা জায়নবাদের যুদ্ধ বলা যায় না। এই যুদ্ধ মানবতার বিরুদ্ধে ইসরায়েল ও জায়নবাদের যুদ্ধ।

প্রদর্শনীটিতে বাংলাদেশি শিল্পী তাহিয়া তাবানির ৩৯টি শিল্পকর্ম জায়গা পেয়েছে। এসব শিল্পকর্মের মধ্যে রয়েছে ক্যানভাসে তেল, জল ও অ্যাক্রিলিকে আঁকা ফিলিস্তিনের দৃশ্য ও ক্যালিগ্রাফি। বাংলাদেশি একদল কার্টুনিস্টের আঁকা প্রতিবাদী ও ব্যঙ্গাত্মক বেশ কিছু কার্টুনও প্রদর্শিত হয়েছে।

প্রদর্শনীতে দেখা যায় ট্যাংকের ওপর দাঁড়িয়ে আছে এক ফিলিস্তিনি শিশু। তার ডান হাত নেই। বাঁ হাতে পতাকা উঁচিয়ে চিৎকার করছে শিশুটি। ক্যানভাসে অ্যাক্রিলিকে আঁকা ছবিটিতে ইংরেজিতে লেখা রয়েছে একটি স্লোগান, ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’। নিচে ছোট করে লেখা ‘এ ব্যাপারে কথা বলা বন্ধ কোরো না’। একই মাধ্যমে আঁকা আরেকটি ছবিতে পিতার কাঁধে এক আহত শিশু। সেই ছবিতে লেখা রয়েছে ‘আমরা মুছে যাব না, আমরা স্বদেশ ছেড়ে কোথাও যাচ্ছি না।’

১৯৭৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ প্রতিবছর ২৯ নভেম্বর ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি প্রকাশে আন্তর্জাতিক দিবসটি পালনের আহ্বান জানায়। এর ১০ বছর পরে ১৯৮৭ সালের ২৯ নভেম্বর ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রস্তাব অনুমোদিত হয়। এরপর থেকে দিনটি আন্তর্জাতিক ফিলিস্তিনি সংহতি দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

এ বছর গাজা উপত্যকায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির অব্যাহত আহ্বানের মধ্যে দিবসটি এসেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নানা আয়োজনে দিবসটি পালন করেছে। এসব আয়োজনের মতোই ঢাকায় এই চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। প্রদর্শনীতে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত ছিলেন। ঢাকার ফিলিস্তিন দূতাবাস স্বাধীন ফিলিস্তিনের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করতে প্রদর্শনীটির আয়োজন করে।

গত ৭ অক্টোবর থেকে দেড় মাসের বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ১৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।