নষ্ট হওয়ার ঝুঁকিতে ইতিহাসের বহু দলিল

চেষ্টা করলে এই প্রতিষ্ঠান একদিন দেশের সবচেয়ে সমৃদ্ধ সংগ্রহশালায় পরিণত হতে পারে বলে বিশ্বাস করেন গবেষকেরা।

জাতীয় আর্কাইভসে গবেষণায় সেবাগ্রহীতার সংখ্যা বাড়েনি পাঁচ বছরেও
ফাইল ছবি

১৮৯৬ সালে বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করেছিল ফেমিন কমিশন। এর কপি সংরক্ষিত আছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আর্কাইভসে। তবে প্রতিবেদনটি আর পাঠযোগ্য নেই। ওলটানোর আগে পাঁপড়ের মতো ভেঙে যায় পৃষ্ঠা। পলাশীর যুদ্ধের মানচিত্র, ১৭৬০ সালের বিভিন্ন জেলা রেকর্ডস বা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার নথির মতো ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার প্রামাণিক দলিল পাওয়া যাবে সেখানে।

প্রতিষ্ঠানের আর্কাইভস ও গ্রন্থাগার দুই শাখায় নথি, সংবাদপত্রসহ সব মিলিয়ে সংগ্রহের পরিমাণ প্রায় ৯ কোটি পৃষ্ঠা। তবে সংরক্ষণব্যবস্থার দুর্বলতায় নষ্ট হচ্ছে এর অনেকখানি। প্রতিষ্ঠানটির কাছে নেই মুক্তিযুদ্ধের কোনো দলিল। এখান থেকে তথ্যসেবা পাওয়ার প্রক্রিয়া জটিল বলে মনে করেন গবেষকেরা।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত জাতীয় আর্কাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তরের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে ও বুঝতে একাধিকবার সরেজমিনে নেওয়া হয়েছে তথ্যসেবা। প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, সাবেক তিনজন মহাপরিচালক, আর্কাইভ বিশেষজ্ঞ, গবেষকদের বক্তব্যে উঠে এসেছে ৫০ বছরেও প্রতিষ্ঠানটির গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে পৌঁছাতে না পারার কথা। তাঁরা বলছেন, কাঠামোগত দুর্বলতার সঙ্গে আছে জনবলের অদক্ষতা ও স্বল্পতা। অনেক গবেষকের কাছেই প্রতিষ্ঠানটি পরিচিত নয়। কারণ, প্রচারে পিছিয়ে আছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের এই অধিদপ্তর।

জাতীয় আর্কাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হিসেবে একসময় দায়িত্ব পালন করেছেন অধ্যাপক মো. তাইবুল হাসান খান। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, সংগ্রহের পাশাপাশি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সংরক্ষণও জরুরি। এর সবকিছুর জন্য দরকার দক্ষ জনবল। দক্ষ জনবল যেমন তৈরি করতে হয়, তেমনি নিয়োগও দিতে হয়। এ জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

জাতীয় সাহিত্য-সংস্কৃতি ও ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয় জাতীয় আর্কাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তর। ১৯৮৬ সালের সামরিক অধ্যাদেশ বাতিল হওয়ার পর গত বছর তৈরি হয়েছে জাতীয় আর্কাইভস আইন। প্রতিষ্ঠানের বড় অর্জন ‘বাংলাদেশ জাতীয় আর্কাইভস আইন ২০২১ পাস হওয়া’।

এর ফলে প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক ২৫ বছরের বেশি পুরোনো সরকারি রেকর্ডপত্র এবং ব্যক্তিগত সংগ্রহে থাকা ৩০ বছরের বেশি পুরোনো নথি বা সংগ্রহ আর্কাইভসে স্থানান্তর করার আদেশ দিতে পারবেন। যদিও আদেশ অমান্য হলে কোন ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেটি অস্পষ্ট। তবু এই আইনটিকে কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

সেবা নিয়ে প্রতিক্রিয়া মিশ্র

পুরোনো একটি পত্রিকা খুঁজতে তিন দিন ঘুরেছেন গবেষক রাজিয়া মোস্তফা (ছদ্মনাম)। চতুর্থ দিন প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা জানিয়েছেন, ‘সাময়িকী’ বললে তাঁরা আগেই বুঝতেন। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিযোগ সেবা গ্রহণের মূল্য ও মান নিয়ে। তাঁর কথা, পুরোনো পত্রিকার ইলেকট্রনিক কপি পড়া গেলেও বাংলা কাগজের পৃষ্ঠাগুলো সবই অস্পষ্ট থাকে। সংগ্রহের ফি বেশি, যা বহু গবেষকের পক্ষেই দেওয়া কঠিন। অথচ এখানকার অনেক সংগ্রহই পিআইবি বা বাংলা একাডেমিতে আছে, যেখান থেকে নামমাত্র মূল্যে নেওয়া সম্ভব।

এই প্রতিষ্ঠান থেকে পুরোনো ও দুষ্প্রাপ্য শ্রেণির তথ্যসামগ্রী সংগ্রহ করতে হলে বইয়ের স্ক্যানিং ফি প্রতি পৃষ্ঠা ৫ টাকা, পত্রিকা এবং গেজেট প্রতি পৃষ্ঠা ১০ টাকা এবং ক্যামেরা স্ন্যাপ ইমেজপ্রতি ২ টাকা হারে দিতে হয়। ইলেকট্রনিক কপির মান প্রসঙ্গে আর্কাইভস বিভাগের উপপরিচালক তাহমিনা আক্তার প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, ‌‘ওসিআরে (অপটিক্যাল ক্যারেক্টার রিকগনিশন) এখনো বাংলা অক্ষর নির্ণয়ের ব্যবস্থা বের হয়নি বলে পুরোনো বাংলা পত্রিকার ক্ষেত্রে এ সমস্যা হচ্ছে। তবে ইংরেজি পৃষ্ঠা পড়তে অসুবিধা হয় না।’

গবেষণার সঙ্গে যুক্ত এক তরুণ বললেন দুর্বল ক্যাটালগিং বা তালিকাকরণের কথা। অক্ষর ও বিষয়ভিত্তিক হিসেবে সংগ্রহ সংরক্ষিত হয় না বলে একটি কাগজ খুঁজতে কয়েক শ পৃষ্ঠা ওলটাতে হয়। ফলে গবেষকদের যেমন সময় ও শ্রম নষ্ট হচ্ছে, তেমনই পুরোনো পৃষ্ঠাগুলো অতিব্যবহারে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে আরও দ্রুত। তবে অভিজ্ঞ গবেষকেরা বলছেন, সেখানে কাজে গেলে সময় নিয়ে যেতে হবে। হয়তো যা খোঁজা হচ্ছে, তার চেয়েও অনেক মূল্যবান কিছু পাওয়া যেতে পারে।

তবে তথ্য বলছে, গত পাঁচ বছরে বাড়েনি সেবা গ্রহণকারীর সংখ্যা। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে গবেষণা ও তথ্যসেবা নিয়েছেন ৬৮৬ জন। সবশেষ ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানে গবেষণা ও তথ্য সংগ্রহ করতে এসেছেন ৭২৫ জন।

এ বছরে একাধিকবার সরেজমিনে সেবা নিতে গিয়ে দেখা গেছে, প্রক্রিয়াটি জটিল। দুটির বেশি ভলিউম একসঙ্গে নিয়ে বসতে পারেন না গবেষকেরা। ম্যানুয়াল ক্যাটালগে বিষয় খুঁজে বের করা কঠিন। প্রতিষ্ঠানে তাই ছাত্রাবস্থায় গবেষণারতদের উপস্থিতি বলতে গেলে নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বা বিদেশ থেকে আসা গবেষকেরা কাজ করেন বেশি। দিনে সাত থেকে আটজন আসেন আর্কাইভ বিভাগের সেবা নিতে।

বয়স্ক ও প্রযুক্তি ব্যবহারে পিছিয়ে থাকা মানুষেরা সেবা নিতে গিয়ে বেশি বিড়ম্বনায় পড়েন বলে অভিযোগ রয়েছে।

নেই মুক্তিযুদ্ধের কোনো নথি

মহীশূর রাজ্যের শাসক টিপু সুলতানের সঙ্গে ইংরেজদের চুক্তি হয়েছিল আঠারো শতকের শেষে। ঐতিহাসিক এই চুক্তিনামার মতো আছে বাংলার ১৪টি জেলার ১৭৬০-১৯০০ সালের জেলা রেকর্ডস। ১৮৩২ সাল থেকে প্রকাশিত নানা রকম গেজেট এবং মূল্যবান অনেক দলিল। কিন্তু দেশভাগ এবং ভাষা আন্দোলন সম্পর্কে জানতে গেলে ভরসা শুধু পুরোনো পত্রিকা। এসব পত্রিকা শ্রেণিভুক্ত হয়েছে শুধু নাম আর বছরের হিসাবে। তাই পাঠকের জন্য অবস্থাটা খড়ের গাদা থেকে সুই খুঁজে বের করার মতো।

৫০ বছরেও জাতীয় আর্কাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তর মহান মুক্তিযুদ্ধ-সম্পর্কিত একটি নথিও সংগ্রহ করতে পারেনি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানের সদ্য বিদায়ী মহাপরিচালক ফরিদ আহমদ ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বই আছে, কিন্তু দলিল চাইলেই মন্ত্রণালয়গুলো পিছিয়ে যায়। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকেই তেমন কোনো সহযোগিতা এখনো পাওয়া যায়নি। তবে দেশের সব জেলা ও বিভাগীয় কমিশনার বরাবর ৮২টি চিঠি দেওয়া হয়েছে নথি চেয়ে। আমরা চেষ্টা করছি সংগ্রহের।’

জাতীয় আর্কাইভস ও গ্রন্থাগারের সংগ্রহ সমৃদ্ধ করতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অসহযোগিতার অভিযোগ আছে। তবে সংগ্রহ নিয়ে প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব আগ্রহের কমতি বোঝা যায় পত্রিকা ও সাময়িকী সংখ্যাগুলোর দুর্বল ক্যাটালগ ব্যবস্থা এবং শ্রেণিকরণ না হওয়ায়। ইত্তেফাকবিচিত্রার মতো দুটি পত্রিকার সংগ্রহও এখানে দুর্বল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংরক্ষণাগারে ইত্তেফাক পত্রিকার সংগ্রহ আছে ১৯৫৬ সাল থেকে। জাতীয় আর্কাইভসে ১৯৬৩ সালের আগের সংখ্যা পাওয়া যায় না। বিচিত্রার মতো জনপ্রিয় ম্যাগাজিনের প্রকাশ ১৯৭২ সাল থেকে হলেও এখানকার সংগ্রহ ১৯৮৭ সাল থেকে।

পুরোনো সংখ্যা সংগ্রহ করে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন একজন তরুণ গবেষক। তবে আগ্রহ দেখায়নি কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন কালেক্টরেট অফিস থেকে পুরোনো নথি সংগ্রহের চেষ্টা করছে প্রতিষ্ঠানটি। বাংলাদেশে আর্কাইভস গ্রন্থের রচয়িতা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মো. মাহবুবুর রহমান নিজেই পরিচালনা করেন একটি ব্যক্তিগত সংরক্ষণাগার। মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন জেলা শহরের কালেক্টরেট অফিস থেকে প্রতিষ্ঠানটি এখন নথি-দলিল সংগ্রহ করছে। কিন্তু দক্ষতার অভাবে নতুন তথ্য সংযুক্ত করে ক্যাটালগ তৈরি হয় না। ব্যবস্থাপনায় আছে দুর্বলতা।’

নষ্ট হচ্ছে ইতিহাস

এ বছরের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে দুবার সংরক্ষণ কক্ষগুলো ঘুরে দেখা গেল, কোনো কোনো দেয়ালে উইপোকা ধরার দাগ। সংরক্ষণাগার পুরোপুরি বাইরের আলো-বাতাসমুক্ত থাকার কথা থাকলেও আর্কাইভস ভবনের কক্ষগুলোর তিন দিকে কাচের বড় জানালা। নিচতলার এক পাশের জানালার দুই হাত দূরেই সড়কে মানুষের অবাধ যাতায়াত। রোদ, তাপের পাশাপাশি ঝুঁকি রয়েছে যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটার।

এই ভবনের চতুর্থ তলার সংরক্ষণকক্ষে আছে ব্রিটিশ শাসনামলের বিভিন্ন নথিসহ ৫০ বছর আগের বিভিন্ন জেলার তথ্য। এর মধ্যে ব্রিটিশ আমলের উডেন বান্ডিল নথিগুলোর অবস্থা ভালো অথচ কয়েক দশক আগের নথির কাগজ পাঠ অযোগ্য। ভবনের তিনটি ফ্লোরের মোট আটটি সংরক্ষণকক্ষের (স্ট্যাক ব্লক) কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র নষ্ট সাত বছর ধরে। আর গ্রন্থাগার বিভাগে ১২টি কক্ষের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র নষ্ট দুই বছর ধরে। এই ২০টি কক্ষে রয়েছে শত বছরের পুরোনো মূল্যবান দলিল ও বই। যেগুলো সার্বক্ষণিকভাবে শীতল রাখার ব্যবস্থা থাকার কথা। এই গলদ স্বীকার করল কর্তৃপক্ষও।

বছরের পর বছর ধরে পুরোনো কাগজ সংরক্ষণ করা হচ্ছে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণযন্ত্র ছাড়া। এতে নথিগুলো দ্রুত নষ্ট হচ্ছে। এ বিষয়ে সদ্য বিদায়ী মহাপরিচালক ফরিদ আহমদ ভূঁইয়া জানান, ‘আর্কাইভস ভবনের তৃতীয় পর্যায়ে নির্মাণকাজে ৭ থেকে ১৩ তলা পর্যন্ত তৈরি হওয়ার কথা। তার আগে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজের (যা ২০১২ সালে শেষ হয়) ত্রুটি সংস্কার করতে হবে। তবে বরাদ্দ কম, পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠানের মামলা, প্রকল্প পাস হওয়া—এসব জটিলতায় কাজ শুরুর প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হচ্ছে। বর্তমানে প্রকল্প প্রস্তাব হিসেবে আছে।’

প্রতিষ্ঠানের কাগজ ও নথিপত্র ডিজিটাইজ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে এ প্রক্রিয়া দীর্ঘমেয়াদি। গ্রন্থাগার বিভাগের উপপরিচালক মো. জামাল উদ্দিন প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, আর্কাইভস বিভাগে আছে পাঁচ কোটির বেশি পৃষ্ঠা। গ্রন্থাগারের সংগ্রহ তিন কোটি পৃষ্ঠার বেশি বইপত্র ও সাময়িকী। এর মধ্যে ১৯৬২ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত সব পত্রিকার ডিজিটাইজ করার কাজ শেষ হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক প্রতিবেদন ২০২০-২১ থেকে জানা যাচ্ছে, গত পাঁচ বছরে নথি ডিজিটাইজ করা হয়েছে সোয়া ছয় লাখ পৃষ্ঠার মতো। অর্থাৎ সংগ্রহের আট কোটি পৃষ্ঠা এখনো দুর্ঘটনা, তাপমাত্রা এবং পোকামাকড়ে নষ্ট হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

বহু প্রতিবন্ধকতা, তবে সম্ভাবনাও অনেক

প্রতিষ্ঠানের জন্য বরাদ্দ কম, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অসহযোগিতা অথবা জনবল কম এমন অনেক অভিযোগ আছে কর্তৃপক্ষের। আর্কাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তরের অনুমোদিত পদসংখ্যা ১৪৪টির মধ্যে শূন্য আছে ৫৪টি। এর মধ্যে সহকারী পরিচালকের ৪টি পদের মধ্যে ৩টিই শূন্য।

গত পাঁচ বছরে বরাদ্দের তুলনায় নথি সংগ্রহ বাড়েনি। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৪ কোটি ৫৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা। নথি সংগ্রহ হয়েছে ২ হাজার ১৫০টি। ২০২০-২১ অর্থবছরে বরাদ্দ ৭ কোটি ১৫ লাখ টাকা। নথি সংগ্রহ হয়েছে ১ হাজার ৬৯টি। অর্থাৎ পাঁচ বছরে বরাদ্দ বেড়েছে ২ কোটি ৫৯ লাখ ১০ হাজার টাকা।

চেষ্টা করলে এই প্রতিষ্ঠান একদিন দেশের সবচেয়ে সমৃদ্ধ সংগ্রহশালায় পরিণত হতে পারে বলে বিশ্বাস করেন গবেষকেরা। বাংলাদেশ আর্কাইভস অ্যান্ড রেকর্ডস ম্যানেজমেন্ট সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক শরীফ উদ্দিন আহমেদ দীর্ঘদিন এই প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘ন্যাশনাল আর্কাইভস ভবিষ্যতের জন্য আমাদের ইতিহাস সংরক্ষণ করে। পরিতাপ হচ্ছে, সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শিক্ষাব্যবস্থা গুরুত্ব পাচ্ছে না। এ ধরনের কোনো ইনস্টিটিউশন আমাদের অঞ্চলে ছিল না। তাই বুঝতে এবং পুরোপুরি তৈরি হতে সময় লাগছে।’