জাপান থেকে আসা দুই শিশুর হেফাজত চেয়ে বাবা ইমরানের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ
জাপান থেকে আসা দুই শিশুর হেফাজত ও অভিভাবকত্ব চেয়ে বাবা ইমরান শরীফের মামলা খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন আদালত।
ঢাকার জেলা জজ এ এইচ এম হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া আজ বৃহস্পতিবার এই আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ইমরানের আইনজীবী নাসিমা আখতার।
নাসিমা আখতার প্রথম আলোকে বলেন, ইমরানের করা মামলাটি গত ২৯ জানুয়ারি খারিজ করে রায় দেন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান। এই রায় চ্যালেঞ্জ করে ঢাকার জেলা জজ আদালতে আপিল করা হয়। আপিলটি শুনানির জন্য আজ গ্রহণ করেছেন ঢাকার জেলা জজ।
আইনজীবী নাসিমা আক্তার আরও বলেন, আদালত মামলার বাদী ইমরান ও বিবাদী জাপানি মা নাকানো এরিকোকে আপস করতে বলেছেন। এ জন্য উভয় পক্ষকে আদালত বসতে বলেছেন। ইমরান মীমাংসার জন্য বিবাদীপক্ষের সঙ্গে বসতে ইচ্ছুক।
আজ শুনানিকালে আদালতে উপস্থিত ছিলেন দুই শিশুর জাপানি মা এরিকো। তাঁর আইনজীবী শিশির মনির প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইমরান শরীফের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে উভয় পক্ষকে আপসের জন্য বসতে বলেছেন আদালত।’
জাপান থেকে আসা দুই শিশুর হেফাজত ও অভিভাবকত্ব চেয়ে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকার পারিবারিক আদালতে মামলা করেন বাবা ইমরান শরীফ। মামলায় বাদীপক্ষের তিনজন আদালতে সাক্ষ্য দেন। বিবাদীপক্ষে সাক্ষ্য দেন জাপানি মা এরিকো।
জাপানের নাগরিক এরিকো ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইমরানের ২০০৮ সালের ১১ জুলাই বিয়ে হয়। তাঁদের তিনটি মেয়েসন্তান আছে। ২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি এরিকোর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন ইমরান। একই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি দুই মেয়েকে (বড় ও মেজ) নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি। ছোট মেয়ে জাপানে আছে।
ইমরানের কাছ থেকে দুই মেয়েকে ফিরে পেতে ঢাকায় এসে ২০২১ সালের আগস্টে হাইকোর্টে রিট করেন এরিকো। অন্যদিকে ছোট মেয়েকে ফিরে পেতে পৃথক একটি রিট করেন ইমরান। পৃথক রিটের ওপর শুনানি নিয়ে দুই শিশু তাদের বাবা ইমরানের হেফাজতে থাকবে বলে একই বছরের ২১ নভেম্বর হাইকোর্ট আদেশ দেন। এই আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন এরিকো, যা চেম্বার আদালত হয়ে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে।
এরিকোর করা আবেদন (লিভ টু আপিল) নিষ্পত্তি করে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে আদেশ দেন আপিল বিভাগ। আদেশে বলা হয়, ঢাকার পারিবারিক আদালতে থাকা মামলাটি (২০২১ সালে শিশুদের বাবার করা) নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জাপান থেকে আসা দুই শিশু তাদের মায়ের হেফাজতে থাকবে। শিশুদের বাবা তাদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাবেন।
আদেশে আরও বলা হয়, মামলার পারিপার্শ্বিক বিষয় ও শিশুদের স্বার্থ বিবেচনায় তাদের এ আদালতের এখতিয়ারের বাইরে (দেশের বাইরে) নেওয়া যাবে না। আপিল বিভাগের আদেশের অনুলিপি পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট পারিবারিক আদালতকে মামলাটি নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।