দেশের জনসংখ্যার ৮ শতাংশ সংখ্যালঘু। রাজনৈতিক দলগুলো শুধু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাদের ব্যবহার করে। কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দলই তাদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট নয়। এমন অবস্থা বজায় থাকলে নির্বাচনে ভোট বয়কটের সিদ্ধান্ত নিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতারা।
আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি লিংকন দত্ত ও শ্রীনন্দ দাশ। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ২০২৪–এর কোটা সংস্কার আন্দোলনে দেশের ৮ শতাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায় রাজপথে ছিল। অথচ ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর সহিংস নির্যাতন শুরু হয়েছে, যা এখনো চলমান। এমন অবস্থায় পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারতের ‘অভিবাসন ও বিদেশি আইন, ২০২৫’ বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে দেশত্যাগের বিষয়ে আরও উৎসাহ দেবে।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, গত বছরের ১৩ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতাদের আলোচনা হয়। প্রধান উপদেষ্টা সে সময় তাঁদের জানিয়েছিলেন, সরকার সংখ্যালঘুদের ক্ষতিপূরণ দেওয়াসহ আট দফা দাবি যথাযথ বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে উদ্যোগ গ্রহণ করবে। কিন্তু বছর পার হলেও আট দফা বাস্তবায়নে আশানুরূপ কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেই।
এ সময় সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও অধিকারের কাজ শুরু করতে অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন সংগঠনের নেতারা। দাবি না মানলে ১১ সেপ্টেম্বর থেকে বিভাগীয় পর্যায়ে ‘আমরণ গণ–অনশন’ কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের আট দফা দাবির মধ্যে রয়েছে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘুবিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন, সংখ্যালঘু কমিশন গঠন ও বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে তদন্তের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক হামলায় দোষীদের শাস্তি দেওয়া; আদিবাসীদের জন্য ‘ভূমি কমিশন’ গঠন করা এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়ন করা; সংসদে জনপ্রতিনিধিত্বশীল সব সংস্থায় অংশীদারত্ব ও প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা; শারদীয় দুর্গাপূজায় ৫ দিন, ইস্টার সানডে ১ দিন, প্রবারণা পূর্ণিমায় ১ দিন ও বৈসাবিতে ১ দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা করা।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সংখ্যালঘু আন্দোলনের শিক্ষার্থী প্রতিনিধি সুস্মিতা কর। এ সময় সংখ্যালঘুদের দেশত্যাগ বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এক বছর ধরে অনেকেই বলছে সংখ্যালঘুরা নিজেদের বাংলাদেশের বলে ভাবে না। যেখানে সংখ্যালঘুদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া হচ্ছে তারা এ দেশে নিরাপদ নয়, তাহলে তারা এটা ভাববে কীভাবে।