বান্দরবানের থানচি থানায় পুলিশের সঙ্গে সন্ত্রাসীদের গোলাগুলি

সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করতে থানা প্রাঙ্গণে অস্ত্র নিয়ে পুলিশ সদস্যদের অবস্থান। আজ বৃহস্পতিবার রাতের চিত্রছবি: সংগৃহীত

বান্দরবানের থানচি থানা লক্ষ্য করে অস্ত্রধারীরা আজ বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে গুলি ছুড়তে থাকে। তাদের প্রতিরোধ করতে থানা–পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নূরে আলম মিনা।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জমান খানও আজ রাত পৌনে ১০টার দিকে প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘থানচি থানায় গুলি হয়েছে বলে জেনেছি।’

পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) নূরে আলম মিনা আজ রাত সাড়ে নটায় প্রথম আলোকে বলেন, থানচি থানার দক্ষিণ–পূর্ব পাশের পাহাড় থেকে কে বা কারা গুলি ছুড়তে থাকে। থানা থেকে পুলিশ সদস্যরা পাল্টা গুলি ছোড়ে।

ডিআইজি আরও বলেন, ‘থানায় আমাদের পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য রয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে থানা পরিদর্শনের পর আমি অতিরিক্ত ফোর্স সেখানে মোতায়েন করি। আমাদের পুলিশ সদস্যরা ভালো রয়েছে। কিছুক্ষণ পর থেমে থেমে থানা লক্ষ্য করে গুলি করা হচ্ছে।’

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গুলির শব্দ শোনার পর তাঁরা আতঙ্কে রয়েছেন। গুলি এসে গায়ে পড়তে পারে, সে জন্য অনেকে মাটিতে শুয়ে আছেন। সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ গোলাগুলিতে জড়িত বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন।

বান্দরবানের থানচি থানা। লুট হওয়া ব্যাংক দুটি থেকে ১০০ গজ দক্ষিণে পাহাড়ের ওপর অবস্থান এই থানার
ছবি: প্রথম আলো

থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মামুন আজ রাত ১০টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, রাত সাড়ে আটটার দিকে একদল সন্ত্রাসী বাজারে এসে গোলাগুলি শুরু করে। এরপর তারা থানাতেও গুলি চালায়। এ সময় পুলিশ ও বিজিবিও পাল্টা গুলি চালায়। সন্ত্রাসীরা হাসপাতালের কাছে এসেও গুলি করতে থাকে।

মোহাম্মদ মামুন বলেন, ‘পুলিশের পক্ষ থেকে আমাকে জানানো হয়েছে, ৪০০ থেকে ৫০০টি গুলি ছুড়েছে পুলিশ। বিজিবির ছোড়া গুলির সংখ্যা আগামীকাল জানা যেতে পারে।’

রাত ১০টার দিকে গোলাগুলি থেমে যায় বলে জানান ইউএনও। তিনি বলেন, সন্ত্রাসীরা আশপাশে কোথাও থাকতে পারে। পুরো শহরে পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন আছে। বলিপাড়া থেকে বিজিবির আরও সদস্য যোগ দিয়েছেন।

থানচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসীম উদ্দীন রাত ১০টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, রাত সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত গোলাগুলি হয়। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

ওসি বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, সন্ত্রাসীরা থানার আশপাশে রয়েছে। এ জন্য আমরা সতর্ক অবস্থায় আছি।’

কী পরিমাণ গুলি ছোড়া হয়েছে–এ প্রশ্নের উত্তরে ওসি বলেন, এখনো গণনা করা হয়নি। তবে ৪০০ থেকে ৫০০টি হবে।

গতকাল বুধবার থানচি থানার সামনে সোনালীও কৃষি ব্যাংকের দুটি শাখা থেকে ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা লুট করে কেএনএফ। তাদের প্রতিরোধ করতে আসার পথে থানচি থানা–পুলিশের সদস্যদের লক্ষ্য করে দুবার গুলি ছোড়ে অস্ত্রধারীরা। এর আগে মঙ্গলবার রাতে রুমা বাজারের সোনালী ব্যাংকে হামলা চালায় কেএনএফের সন্ত্রাসীরা। তারা ওই ব্যাংকের ব্যবস্থাপক নিজামউদ্দিনকে ধরে নিয়ে যায়। আজ সন্ধ্যার দিকে র‌্যাব তাঁকে উদ্ধার করে।