রাজউকের কর্মচারীদের বাড়ি-গাড়ি: অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ অনুসন্ধান করে দুই মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ও রাজউক চেয়ারম্যানের প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

‘রাজউক চেরাগে বাড়ি গাড়ি প্লট দোকান’ শিরোনামে আজ একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন ছাপা হয়। প্রতিবেদনটি নজরে আসার পর বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত রুলসহ এ আদেশ দেন। আদালতে প্রতিবেদনটি পড়ে শোনান দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন।

প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভাষ্য, কেউ উচ্চমান সহকারী, কেউ নিম্নমান সহকারী, কেউবা বেঞ্চ সহকারী। তবে এক জায়গায় নিখুঁত মিল! সবাই কোটিপতি। রাজউকের তৃতীয় কিংবা চতুর্থ শ্রেণির ২০-৩০ হাজার টাকা মাসিক বেতনের কর্মচারী হলেও অনেকের রাজধানীতে রয়েছে এক বা একাধিক বহুতল বাড়ি, আধুনিক গাড়ি। অনেকের আছে প্লট, ফ্ল্যাট, দোকানপাট। অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে রাজউকের কয়েকজন কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলা আছে। তবে তদন্তের গতি ধীর। অধিকাংশকে আইন স্পর্শ করছে না।

স্বল্প বেতনের চাকরি করেও ওই কর্মচারীরা কীভাবে বিত্তবৈভবের মালিক—এই প্রসঙ্গে রাজউক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞার বক্তব্য ওই প্রতিবেদনে রয়েছে।

চেয়ারম্যান ভাষ্য, ‘সচিব পদমর্যাদায় চাকরি করলেও তাঁর রাজধানীতে ফ্ল্যাট বা বাড়ি নেই।…ওরা কীভাবে এসব করল, সেটা তাঁরও প্রশ্ন। “রাজউকের অবস্থা এমন মনে হয়, পাবনায় গিয়ে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত চাকরিতে আছি। এ কয়টা দিন যেন ভালোভাবে কাটাতে পারি,” সবার কাছে সেই দোয়া চান তিনি।’

রাজউক চেয়ারম্যানের ওই বক্তব্য উদ্ধৃত করে অভিমতে আদালত বলেছেন, সংশ্লিষ্ট বিভাগের দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে অর্থ অর্জন রোধে রাজউক চেয়ারম্যান অসহায় অবস্থায় আছেন।

প্রকাশিত প্রতিবেদন সূত্রে দুর্নীতি ও অনিয়মে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা কেন বেআইনি হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। দুর্নীতিতে জড়িত বলে প্রকাশিত প্রতিবেদনে যাঁদের নাম এসেছে, তাঁদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তা–ও জানতে চাওয়া হয়েছে। দুদক চেয়ারম্যান, রাজউক চেয়ারম্যান, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিবসহ বিবাদীদের দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আগামী ৫ এপ্রিল শুনানির পরবর্তী দিন রেখেছেন আদালত।