চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা: স্থগিতাদেশ চেয়ে করা আবেদনের শুনানি হবে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে

হাইকোর্ট ভবনফাইল ছবি

সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত বা আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন করপোরেশনের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণার রায় স্থগিত হয়নি।

হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য আগামী ৪ জুলাই দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম আজ রোববার এ আদেশ দেন।

ফলে ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালে হাইকোর্টের রায় স্বাভাবিকভাবেই ওই সময় পর্যন্ত বহাল থাকছে বলে জানিয়েছেন রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী।

এর আগে এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ৫ জুন হাইকোর্ট ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। এ রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করে, যা আজ চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ শুনানি করেন, সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম সাইফুল আলম। রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোতাহার হোসেন সাজু, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম।

পরে রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী মোতাহার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালে হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছেন, তা স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। রায়ে স্থগিতাদেশ না দিয়ে চেম্বার আদালত আবেদনটি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে ৪ জুলাই শুনানির জন্য নির্ধারণ করেছেন। ‍৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডে নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের ওই রায় এ সময় পর্যন্ত বহাল থাকছে।

অবশ্য সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম সাইফুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ যে আবেদনটি করেছে, সেটির ওপর আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য আগামী ৪ জুলাই দিন ধার্য করেছেন চেম্বার আদালত।

এর আগে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত বা আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন করপোরেশনে চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের বিদ্যমান কোটাপদ্ধতি সংশোধন করে পরিপত্র জারি করে। ১৯৯৭ সালের ১৭ মার্চের স্মারক সংশোধন করে জারি করা পরিপত্রের ভাষ্য, ৯ম গ্রেড (পূর্বতন ১ম শ্রেণি) ও ১০ম-১৩তম গ্রেডের (পূর্বতন ২য় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হবে এবং ৯ম গ্রেড (পূর্বতন ১ম শ্রেণি) ও ১০ম-১৩তম গ্রেডের (পূর্বতন ২য় শ্রেণি) পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটাপদ্ধতি বাতিল করা হলো।

ওই পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে রিট করেন চাকরিপ্রত্যাশী ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাতজন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে ওই পরিপত্র কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। চূড়ান্ত শুনানি শেষে রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করে ৫ জুন রায় দেন হাইকোর্ট।