রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের বিধান সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয় বলে উল্লেখ করেছেন হাইকোর্ট। রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের বিধান নিয়ে করা রিট আবেদন খারিজ (রুল ডিসচার্জ) করে হাইকোর্টের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায়ে এই অভিমত এসেছে।
রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের বিধান চ্যালেঞ্জ করে ৩৬ বছর আগে করা ওই রিট আবেদন খারিজ করে ২০১৬ সালের ২৮ মার্চ রায় দেন বিচারপতি নাইমা হায়দারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ। বেঞ্চের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল। ৫২ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি ২১ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
১৯৮৮ সালে অষ্টম সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামকে সংযুক্ত করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। সংবিধানে ২ক অনুচ্ছেদ যুক্ত করে বলা হয়, প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম হবে ইসলাম, তবে অন্যান্য ধর্মও প্রজাতন্ত্রে শান্তিতে পালন করা যাবে। তখন স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ কমিটির পক্ষে ওই বিধানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছিলেন ১৫ জন বরেণ্য ব্যক্তি।
রিট আবেদনের ২৩ বছর পর ২০১১ সালের ৮ জুন হাইকোর্ট রুল দেন। সেদিন আদালত অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের সহায়তাকারী) হিসেবে ১৪ জন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীর নাম ঘোষণা করে আদেশ দেন। এর প্রায় পাঁচ বছর পর ২০১৬ সালের ৮ মার্চ রুল শুনানির জন্য আদালতে ওঠে। সেদিন আদালত অ্যামিকাস কিউরি মনোনীত করার আদেশ প্রত্যাহার করেন। ২০১৬ সালের ২৮ মার্চ রিটটি খারিজ করে রায় দেওয়া হয়।
রুল খারিজ করে দেওয়া রায়টি লিখেছেন বেঞ্চের নেতৃত্বদানকারী বিচারপতি নাইমা হায়দার। এর সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন বেঞ্চের অপর দুই বিচারপতি। রায়ের অভিমতে বলা হয়, ওই সংশোধনীর মাধ্যমে অনুচ্ছেদ ২ক যুক্ত করে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। তবে বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল রায়ে পৃথক পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছেন।
প্রসঙ্গত, পঞ্চদশ সংশোধনীতে সংবিধানে ২ক অনুচ্ছেদ সংশোধনী আনা হয়। এতে বলা হয়, ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, তবে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ অন্যান্য ধর্ম পালনে রাষ্ট্র সমমর্যাদা ও সম অধিকার নিশ্চিত করবেন।’