নিয়মিত ভালো পারফরম্যান্স দেখালেও তিনিই যে হতে পারেন টি-টোয়েন্টির এক্স-ফ্যাক্টর, সেটা এত দিন নির্বাচকদের কাছে প্রমাণ দিতে পারেনি। দলে আসা–যাওয়ার মধ্যেই ছিলেন অনূর্ধ্ব–১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়া মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে সুযোগ পেয়েই বাজিমাত করলেন। ইউনিক স্টাইলে দারুণ বোলিংয়ে ইংল্যান্ডকে বিধ্বস্ত করার পর ব্যাটিংয়েও ইমপ্রেসিভ পারফরম্যান্স করেছেন তিনি। ম্যাচের প্রথম ভাগে তাঁর স্পিনে ভুগেছে ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা। তাঁদের কারও ব্যাটেই ছিল না ইমপ্রেসিভ পারফরম্যান্স। এর মধ্যে মিরাজ ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ে ১২ রানে তুলে নিয়েছেন চার উইকেট।
হোম অব ক্রিকেটের উইকেট সাহায্য করেছে, কন্ডিশন বুঝে ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের জন্য ফাঁদ তৈরি করেছেন মিরাজ। স্পিনের বিরুদ্ধে সুইপ শটে আটকেছেন মঈন আলী। মিরাজ পরের দুই শিকার করেছেন মাথা খাটিয়ে, ফ্লাইট-টার্নে পরাস্ত স্যাম কারেন ও ক্রিস ওকস। দুজনকেই সামনে এসে খেলতে বাধ্য করেছেন মিরাজ। ফলাফল, লিটনের হাতে স্টাম্পিং। ক্রিস জর্ডান বড় শট খেলতে গিয়ে ধরা পড়েছেন ডিপ মিডউইকেটে। ইমপ্রেসিভ পারফরম্যান্সের কারণে চার ওভারে মিরাজকে বাউন্ডারি হাঁকাতে পারেননি ইংলিশরা। ১২ রানে ৪ উইকেট, টি-টোয়েন্টির ইউনিক স্টাইলের বোলিং ফিগার, যা দিন শেষে ম্যাচের এক্স-ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চট্টগ্রামে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ছিলেন সাইড বেঞ্চে, মিরপুরে সুযোগ পেয়ে গেম চেঞ্জার হয়ে গেলেন মিরাজ। ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের দিনে তিনিই কেন্দ্রীয় চরিত্র। মেহেদী হাসান মিরাজ প্রথম আলোকে জানান, ‘আমি সব সময় আমার খেলার মাধ্যমে নির্বাচকদের ইমপ্রেস করতে চাই। প্রতিটি ম্যাচেই ইমপ্রেসিভ পারফরম্যান্স করে দলে টিকে থাকতে চাই। একই সঙ্গে হতে চাই এক্স-ফ্যাক্টর। লম্বা সময় পর টি-টোয়েন্টি খেললাম, ম্যাচজয়ী পারফরম্যান্সে আমি আনন্দিত। সবাই আমাকে সমর্থন দিয়েছেন। উইকেটে টার্ন ছিল, স্পিনারদের জন্য সহায়ক ছিল। আমার বোলিংয়ের ইউনিক স্টাইলই হলো লাইন-লেংথ ঠিক রাখা। সেটা করেই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পেরেছি।’
বল হাতে ইংলিশদের ভুগিয়ে, ব্যাটিংয়েও খেলেন ইমপ্রেস করা ক্যামিও ইনিংস। পাঁচ নম্বরে ব্যাটিং করতে নেমে, তাঁর দুই ছক্কা ম্যাচের এক্স-ফ্যাক্টর টাইগারদের পক্ষেই রেখেছে। আরেক প্রান্তে ইউনিক স্টাইলের শান্তও সাহস পেয়েছেন তাঁকে দেখে, করেছেন ৪৬ রানের ইমপ্রেসিভ পারফরম্যান্স।
একাধিক ম্যাচের টি-টোয়েন্টিতে অষ্টম সিরিজ জয় করল বাংলাদেশ। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হারানো বিশেষ অর্জন হয়ে থাকল টাইগার ক্রিকেটারদের। সিরিজ জয় নিশ্চিত হলো, এবার ইংলিশদের বাংলাওয়াশের পালা! সাকিবের নেতৃত্বে ইমপ্রেসিভ পারফরম্যান্স করে মিরাজ-শান্তরাও সেটি করে দেখাতে মরিয়া।