রেলওয়ের ১ হাজার ১৪০ হেক্টর জমি বেদখলে: রেলমন্ত্রী

রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম
ফাইল ছবি

রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের ১ হাজার ১৪০ দশমিক ৫৩ হেক্টর জমি বেদখলে রয়েছে। এর মধ্যে পূর্বাঞ্চলের ৯৬ দশমিক ৪৩২ হেক্টর এবং পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় আছে ১ হাজার ৪৪ দশমিক ১০৩ হেক্টর। বেদখল হওয়া রেলের জমিতে দোকান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বস্তি, ঘরবাড়ি, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির, বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান এবং ক্লাব ইত্যাদি রয়েছে।

আজ রোববার জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ হাবিব হাসানের প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী এ তথ্য জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকের শুরুতে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপন করা হয়।

রেলপথমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ রেলওয়ের মোট ভূমির পরিমাণ ৫৮ হাজার ৪৬৯ দশমিক ৯১৪৯ একর। এর মধ্যে লিজ (ইজারা) দেওয়া হয়েছে ১৫ হাজার ৮৯ দশমিক ২২১৩ একর। মন্ত্রী জানান, বেদখলকৃত রেলভূমি অবৈধ দখলমুক্ত করার জন্য উচ্ছেদ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়।

সংসদ সদস্য বেনজীর আহমেদের প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের জানান, বিআরটিসির বহরে বর্তমানে ১ হাজার ৩৫০টি বাস রয়েছে। বহরে বিলাসবহুল বাস সংযুক্ত হলে চাহিদা অনুযায়ী দেশের প্রতিটি জেলায় বিলাসবহুল বাস পরিচালনা করা হবে।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেনের প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী জানান, বর্তমানে সারা দেশে তাঁত কারখানার সংখ্যা ২৭৭ এবং তাঁত ইউনিটের সংখ্যা ১ লাখ ১৬ হাজার ১৭৭। ২০১৮ সালের তাঁতশুমারি অনুযায়ী, তাঁতশিল্প থেকে দেশের মোট বস্ত্রের চাহিদার ২৮ শতাংশ পূরণ করা হয়ে থাকে (পাওয়ার লুম ছাড়া)।

সংসদ সদস্য হাবিবর রহমানের প্রশ্নের জবাবে গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, দেশে উৎপাদিত তুলা দিয়ে বস্ত্র খাতের ২ শতাংশ চাহিদা পূরণ হয়। বাকি চাহিদা পূরণে বিদেশ থেকে আমদানি বাবদ ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, তুলা উৎপাদনে ৬ থেকে ৭ মাস লাগে। এই সময়ের মধ্যে চাষিরা একাধিক ফসল উৎপাদন করতে পারেন। এ কারণে চাষিরা তুলা চাষে আগ্রহী হন না। আর তুলা চাষের জমির স্বল্পতা রয়েছে। দেশে উৎপাদিত তৈরি পোশাকের ৭৪ শতাংশই তুলা দিয়ে তৈরি হয়। বিশ্ববাজারে তৈরি পোশাকের ৭৮ শতাংশ হাতে তৈরি সুতা দিয়ে। হাতে তৈরি সুতাভিত্তিক পোশাক উৎপাদনে বিনিয়োগ বৃদ্ধির পরিকল্পনা তুলা আমদানিনির্ভরতা হ্রাস করতে সহায়ক হবে।

সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা রুবিনা আক্তারের প্রশ্নের জবাবে গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, তৈরি পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে নিট সুতার চাহিদা ১৬ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ১২ লাখ টন সুতা দেশে উৎপাদিত হয়, বাকি ৪ লাখ মেট্রিক টন আমদানি করা হয়।

সরকারি দলের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জানান, ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে ২০২০-২১ অর্থবছরে ৪৭ দশমিক ২৭ লাখ টন পাট উৎপাদিত হয়েছে। এর মধ্যে ৪ দশমিক ১৫ লাখ টন পাট রপ্তানি করা হয়েছে।
জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে ১ হাজার ২৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সংসদ সদস্য মোজাফফর হোসেনের প্রশ্নের জবাবে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জানান, উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিবছর ৫ লাখ ৮০ হাজার পাট উৎপাদকারী চাষি এবং ৪৫ হাজার পাটবীজ উৎপাদনকারী চাষিকে বিনা মূল্যে বীজ, সার, কীটনাশক ও কৃষি যন্ত্রপাতি প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।