জাহাঙ্গীরনগরের ক্যানসার আক্রান্ত শিক্ষার্থীকে বাঁচাতে চ্যারিটি কনসার্ট

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে চ্যারিটি কনসার্ট ও আর্টক্যাম্পের আয়োজন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী, ১৮ জুলাই, ২০২৫ছবি: প্রথম আলো

প্রাণ বাঁচাতে গান গাইছেন শিল্পীরা। পাশে বসানো হয়েছে আর্টক্যাম্প। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী চূড়ান্ত সাহাকে বাঁচাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে আজ শুক্রবার বিকেলে এই চ্যারিটি কনসার্ট ও আর্টক্যাম্পের আয়োজন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। চূড়ান্ত সাহা বিরল ক্যানসারে আক্রান্ত। চিকিৎসা চালিয়ে যেতে তাৎক্ষণিকভাবে ৪০ লক্ষাধিক টাকার প্রয়োজন।

চূড়ান্ত সাহা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের (৪৬তম আবর্তন) শিক্ষার্থী। তিনি একজন কবি ও সংগঠক। এ ছাড়া সাহিত্য ও সংস্কৃতিচর্চায় অগ্রগণ্য ভূমিকা রয়েছে তাঁর। কবিতার মাসিক পত্রিকা ‘ঘৃণাপত্র’ প্রকাশের পাশাপাশি ‘গণকৃষ্টি’ নামের সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রেখেছেন তিনি। মঞ্চাভিনেতা হিসেবে অভিনয় করেছেন ‘স্বর্ণবোয়াল’, ‘নিমজ্জন’সহ প্রভৃতি নাটকে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে চ্যারিটি কনসার্ট ও আর্টক্যাম্পের আয়োজন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী, ১৮ জুলাই, ২০২৫
ছবি: প্রথম আলো

ইতিমধ্যে চূড়ান্ত সাহার দুটি বই প্রকাশিত হয়েছে। ২০১৯ সালে প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘বৈকুণ্ঠ হঠাৎ করে চিৎকার করে—কেউ আছো?’ আর দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘পরোক্ষ যাত্রী ও তিনটি কবিতা’ প্রকাশিত হয়েছে ২০২৫ সালের বইমেলায়।

বিরল ক্যানসার, প্রয়োজন আরও ৪০ লাখ টাকা

২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে চূড়ান্তর সাইনোনাসাল কার্সিনোমা (Sinonasal Carcinoma) নামের বিরল প্রকৃতির ক্যানসার ধরা পড়ে, যা মুখের বাঁ পাশের নাক এবং নাকের পার্শ্ববর্তী চোখ ও চোয়ালে বিস্তার লাভ করেছে। বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে দ্রুত দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। ২০২৪ সালের নভেম্বর মাস থেকে ভারতের বেঙ্গালুরুর মণিপাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন চূড়ান্ত সাহা।

চূড়ান্ত সাহাকে বাঁচাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে চ্যারিটি কনসার্ট ও আর্টক্যাম্পের পোস্টার
ছবি: আয়োজকদের সৌজন্যে

গত নভেম্বর থেকে প্রথম ধাপে কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন ও অন্যান্য চিকিৎসা বাবদ ২৬ লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে, যা তাঁর পরিবার আর্থিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বহন করেছে। প্রায় চার মাসব্যাপী কেমোথেরাপি ও রেডিয়েশন গ্রহণের পরও ক্যানসার পুরোপুরি নির্মূল না হওয়ায় ক্যানসারে আক্রান্ত অংশ অর্থাৎ চোখ ও চোয়ালের অংশে দ্রুততম সময়ে সার্জারি এবং তারপর কেমোথেরাপি, ইমিউনোথেরাপি গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন একাধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।

পরবর্তী চিকিৎসা চালিয়ে যেতে তাৎক্ষণিকভাবে ৪০ লক্ষাধিক টাকার প্রয়োজন। প্রাথমিকভাবে চিকিৎসার প্রথম ২৬ লাখ টাকার খরচ পরিবার বহন করলেও এই মুহূর্তে এ বিশাল অঙ্কের (৪০ লাখ টাকা) খরচ বহন করার সামর্থ্য তাঁর পরিবারের নেই। সবার সহযোগিতা, মানবিকতা ও আন্তরিকতাই পারে এই মুহূর্তে চূড়ান্তকে বাঁচিয়ে রাখতে ও সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে দিতে। তাঁর বন্ধু ও সহপাঠীদের আহ্বান, একটি মানুষের জীবন বাঁচাতে যেন সবাই এগিয়ে আসে।