জামিন না দিয়ে আসামিকে পুলিশে দিলেন হাইকোর্ট

আদালতপ্রতীকী ছবি

অপহরণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা মামলায় মো. মাহফুজ সিকদার (১৯) নামের এক আসামিকে পুলিশে দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগাম জামিন চেয়ে আসামির করা আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ আদেশ দেন।

আদালত বলেছেন, ‘এ ধরনের অপরাধকে প্রশ্রয় দেওয়া উচিত হবে না। এ ছাড়া আগাম জামিন রুটিন বিষয় নয়। মামলায় তাঁকে (মাহফুজ সিকদার) আগাম জামিন দেওয়ার প্রাথমিক উপাদান পাওয়া যায়নি। তার আগাম জামিনের প্রার্থনা খারিজ করা হলো।’

১৩ বছর বয়সী এক কিশোরীকে অপহরণের অভিযোগে তিনজনের বিরুদ্ধে গত ২২ এপ্রিল ঝালকাঠির রাজাপুর থানায় মামলাটি করা হয়েছিল। ওই কিশোরীর মায়ের করা মামলাটি ঝালকাঠির চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারাধীন। তিন আসামি হলেন মাহফুজ সিকদার ও তাঁর মা-বাবা। মামলায় ঘটনার তারিখ ১৯ এপ্রিল উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় ফুসলিয়ে অপহরণ ও সহায়তা করাসহ চুরির অভিযোগ আনা হয়েছে।

এ মামলায় হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয়ে মাহফুজ সিকদার ও তাঁর মা-বাবা গত সপ্তাহে আবেদন করেন। আজ আবেদনটি শুনানির জন্য আদালতের কার্যতালিকায় ওঠে। জামিন আবেদনের শুনানি থাকায় মাহফুজ ও তাঁর মা-বাবা আদালতে হাজির হন। শুনানি নিয়ে আদালত জামিন আবেদন নিষ্পত্তি করে আদেশ দেন।

আদালতে মাহফুজসহ তিনজনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. শাহীন খান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ইয়াসমিন বীথি ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাহাবুদ্দিন আহমেদ।

পরে সাহাবুদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনা করে হাইকোর্ট মাহফুজকে আগাম জামিন দেননি। এই আসামিকে বেলা তিনটার দিকে সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তা নিয়োজিত পুলিশ কর্মকর্তার কাছে দিয়েছেন আদালত। আসামিকে হেফাজতে নিয়ে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করতে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই মামলায় মাহফুজকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তাকে হাজির করতে শাহবাগ থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

মাহফুজ শাহবাগ থানা হেফাজতে আছেন বলে জানান তাঁর আইনজীবী মো. শাহীন খান। রাত সাড়ে আটটার দিকে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘মেয়েটি ও মাহফুজ পরস্পর আত্মীয়। মেয়েটির ২২ ধারায় দেওয়া বক্তব্য অনুসারে, তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং তাঁরা পালিয়ে যান। মেয়েটিকে ২৭ এপ্রিল উদ্ধার করা হয়। এরপর সেফ হোমে রাখা হয়। বর্তমানে মেয়েটি তার মায়ের হেফাজতে আছে। মেয়েটি নাবালিকা হওয়ায় তাকে এভাবে নিয়ে যাওয়া অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করে আদালত মাহফুজকে জামিন দেননি। আদালত থেকেই তাঁকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। মাহফুজের বাবা ও মাকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।’