সরাইলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে গর্তে আটকে যাচ্ছে গাড়ি, দীর্ঘ যানজটে ভোগান্তি
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল বিশ্বরোড মোড় গোলচত্বরের চারপাশে টানা বৃষ্টিতে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এসব গর্তে প্রতিনিয়িত আটকা পড়ছে পণ্যবাহী ট্রাক ও অন্যান্য যানবাহন। এতে সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ যানজটের। পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি।
গত সোমবার বিকেল পাঁচটার দিকে ঢাকা থেকে সিলেটগামী পণ্যবাহী একটি ট্রাক সরাইল বিশ্বরোড মোড়ের পশ্চিম পাশের বড় গর্তে আটকা পড়ে। এর পর থেকে টানা তিন দিন ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সরাইলে দেখা দিয়েছে দীর্ঘ যানজট।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মধ্যে গত সোমবার দুপুর ১২ থেকে সরাইল বিশ্বরোড মোড়ের দুই দিকে নিত্যদিনের মতো চার–পাঁচ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট চলছিল। কিন্তু বিকেল পাঁচটার দিকে বিশ্বরোড মোড় গোলচত্বরের পশ্চিম অংশে পণ্যবাহী একটি ট্রাক গর্তে পড়ে আটকে যায়। এর পর থেকে যানজট বাড়তে থাকে। রাত আটটার দিকে যানজট মহাসড়কের সরাইল উপজেলার বেড়তলা থেকে শুরু হয়ে শাহবাজপুর সেতু পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।
সোমবার দিবাগত রাত ১২টার পর কিছুটা যানজট কমলেও গতকাল মঙ্গলবার ভোর থেকে যানজট বাড়তে থাকে। দিনভর চলে দীর্ঘ যানজট। এরপর আজ বুধবার ভোর থেকে শুরু হয় যানজট। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সরাইল উপজেলার বেড়তলা থেকে বাড়িউড়া পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়।
সড়ক ও জনপথ, জেলা প্রশাসন এবং পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভারতকে ট্রানজিট সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যে ভারতীয় ঋণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে সরাইল বিশ্বরোড মোড় হয়ে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণ কাজ চলছে ধীরগতিতে। কাজটি করছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। ৭ থেকে ৮ বছর ধরে তারা ধীরগতিতে কাজটি করছিল। মহাসড়কের এক পাশের কাজ প্রায় শেষ হলেও বিভিন্ন স্থানে গর্তের কারণে সড়কটি যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। গত চার মাসে কয়েকবার ইটবালু দিয়ে গর্ত ভরাট করা হলেও তা টেকেনি। আজ দুপুর থেকে ফের ইট দিয়ে গর্ত ভরাট করা হচ্ছে।
আজ সরেজমিনে দেখা গেছে, বিশ্বরোড় মোড় গোলচত্বরের চারপাশে অসংখ্য ছোট-বড় গর্তের কারণে দূরপাল্লার যানবাহন মহাসড়কের গোলচত্বর এলাকায় এসে থেমে যাচ্ছে। এসব গর্ত অতিক্রম করতে যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী যানবাহনকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। কিছুক্ষণ পরপর এসব গর্তে যানবাহন আটকে যাচ্ছে। লোকজন টেনেটুনে বা ধাক্কা দিয়ে গর্ত থেকে যানবাহন উদ্ধার করছে।
সিলেট থেকে ঢাকাগামী পণ্যবাহী ট্রাকচালক মো. হামিম আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘শাহবাজপুরে সকাল ৯টায় আইছি, অহন পর্যন্ত কুট্টপাড়া এলাকায় ৮ কিলোমিটার আইছি। এই এলাকায় আইলে আমাদের ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়।’
মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করতে সরাইল খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরা বৃষ্টি উপেক্ষা করে কাজ করছেন। সরাইল খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম আজ বেলা একটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে আমরা ইটের ব্যবস্থা করেছি। আজ থেকে এগুলো দিয়ে গর্ত ভরাট করা হচ্ছে। এতে কিছুটা হলেও দুর্ভোগ লাঘব হবে।’