ঢাকা জেলা প্রশাসনের কার্যালয় প্রাঙ্গণে বিজয় মেলা শুরু
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ঢাকা জেলা প্রশাসনের কার্যালয় প্রাঙ্গণে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য ‘বিজয় মেলা’। পুরান ঢাকার জনসন রোডে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় মাঠে এ মেলা চলছে।
মঙ্গলবার বেলা সোয়া তিনটায় মেলার উদ্বোধন করেন ঢাকার জেলা প্রশাসক মো. রেজাউল করিম। মেলা ১৭ ও ১৮ ডিসেম্বর প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
উদ্বোধনী বক্তব্যে রেজাউল করিম উপস্থিত সবাইকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা ও মেলায় স্বাগত জানান। দেশীয় পণ্যের প্রসারে এই মেলার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমাদের জেলা প্রশাসন আয়োজিত এই মেলা মূলত দেশীয় পণ্যের জন্য।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখানে চমৎকার সব দেশীয় পণ্যের সমাহার ঘটেছে, যা আমাদের পণ্যের বাহার ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরার একটি বড় সুযোগ।’
স্টলের মালিক ও দর্শনার্থীদের উদ্দেশে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘আমরা আশা করব, যাঁরা স্টল দিয়েছেন, তাঁরা পুরো সময় সক্রিয়ভাবে মেলায় অংশ নেবেন। এখানে যাঁরা দর্শনার্থী ও ক্রেতা-বিক্রেতা হিসেবে এসেছেন, তাঁরা সবাই এর মাধ্যমে উপকৃত হবেন বলে আমার বিশ্বাস।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষে সবার সহযোগিতা কামনা করে তিনি মেলার শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিজয় মেলা উপলক্ষে এবার ২৮টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে নারী মৈত্রী, সর্বজয়া নারী উদ্যোক্তা, কারাপণ্য, সুলতানা বুটিকস, শাকিল জামদানি তাঁতঘর, আর কে ফ্যাশন এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন স্টল রয়েছে। মেলার স্টলগুলোতে দেশীয় শাড়ি, হস্তশিল্প, চারু ও কারুপণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা।
উদ্বোধনের পর থেকেই মেলা প্রাঙ্গণে দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের আনাগোনা শুরু হয়। সন্ধ্যার সংগীতানুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে ভিড় আরও বাড়তে থাকে। অনেকেই আগ্রহ নিয়ে হাতে বোনা শাড়ি ও বিভিন্ন দেশীয় পণ্য দেখছিলেন।
ঢাকা জেলা প্রশাসন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মেলার তিন দিনই সন্ধ্যা ছয়টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত বিজয়ের গান পরিবেশিত হবে। প্রথম দিন শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা ২০টি গান পরিবেশন করবেন। বাকি দুই দিন অন্য শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করবেন। মেলায় পিভিসি প্লাস্টিকের ছাউনি দিয়ে স্টলগুলো সাজানো হয়েছে, ফলে বৃষ্টি হলেও পণ্যের ক্ষতির আশঙ্কা নেই।
নারী মৈত্রী স্টলে আড়ং কটন, বেক্সি ভয়েল কাপড়ের পাঞ্জাবি, সুতি, পিওর কটন, হাতে তৈরি পণ্য ও হাতের কাজের শাড়ি দেখা যায়। স্টলটির ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা হেলেন আক্তার বলেন, ‘বিসমিল্লাহ করেছি। অনেকে ঘুরে ঘুরে দেখছেন। এখনো তেমন বিক্রি শুরু হয়নি। আজ তো শুরু হলো। কাল ও পরশু আশা করছি, ভালো বিক্রি হবে।’
পার্শ্ববর্তী এলাকা কলতাবাজার থেকে মেলায় এসেছেন মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘পাট ও তাঁত আমাদের দেশীয় পণ্য। এটা দেখতে যেমন সুন্দর, ব্যবহার করেও আরাম পাওয়া যায়। এ জন্য প্রতি বছরের মতো এবারও মেলায় এসেছি। পছন্দ হলে কিনব।’
এবারের মেলা শুরু হতে কিছুটা বিলম্ব হওয়ার কারণ জানালেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) লিটুস লরেন চিরান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এবারের মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি ছিল মোহাম্মদপুরে। সে জন্য মেলা শুরু হতে কিছুটা দেরি হয়েছে।’