২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

সকালে মা হওয়ার উচ্ছ্বাস নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস, রাতে মারা গেলেন তিনি

স্বামীর সঙ্গে মাহবুবা নাজমিনছবি সংগৃহীত

সকালে পুত্র সন্তানের মা হয়ে নিজের ফেসবুক ওয়ালে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন মাহবুবা নাজমিন। স্ট্যাটাসে উচ্ছ্বাস জানিয়ে লিখেছিলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, পুত্র সন্তানের মা হলাম।’ পরিবারে নতুন মুখের আগমনে সবার মধ্যেই ছিল খুশির আমেজ। নাজমিনের স্বামী মো. রিমন দুবাই প্রবাসী। সেখানে বসে তিনিও সন্তান জন্মের আনন্দে শামিল হয়েছিলেন। ফেসবুকে দোয়া কামনা করে স্ট্যাটাসও দিয়েছিলেন। কিন্তু এই আনন্দ স্থায়ী হলো না। রাতে শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় নাজমিনের। একপর্যায়ে হাসপাতালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি।

স্বামীর সঙ্গে মাহবুবা নাজমিন
ছবি সংগৃহীত

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার চন্দ্রঘোনা-কদমতলি ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড ফেরিঘাট এলাকায় নাজমিনের শ্বশুরবাড়ি। সেখানেই গত সোমবার রাতে নাজমিনের প্রসব ব্যথা উঠলে স্বজনরা তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। গতকাল মঙ্গলবার সকালে সিজারিয়ার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে নাজমিনের পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। এরপর তিনি সুস্থ ছিলেন বলে জানান স্বজনেরা। তবে বিকেলের পর তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। রাতে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।

নাজমিনের স্বজনদের দাবি, প্রসবজনিত জটিলতা থেকেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এমন কিছু ঘটবে তাঁরা কল্পনাও করেননি। তাই এই মৃত্যু মানতেও পারছেন না কেউ।

পুত্রসন্ত্রান্ত জন্ম দেওয়ার পর নাজমিনের স্ট্যাটাস
ছবি সংগৃহীত

চন্দ্রঘোনা-কদমতলি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. হারুন বলেন, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার চন্দ্রঘোনা-কদমতলি ইউনিয়নে নাজমিনদের বাড়ি। একই ইউনিয়নের মো. রিমনের সঙ্গে মাত্র দেড় বছর আগে তাঁর বিয়ে হয়। তিন মাস আগে চাকরি নিয়ে দুবাই চলে যান রিমন। ছেলের জন্মে ভীষণ উচ্ছ্বসিত ছিলেন। সেখান থেকেই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন তিনি। রিমন লিখেছিলেন, ‘আল্লাহ তায়লার দরবারে লাখো কোটি শুকরিয়া, আমাকে রাজপুত্র দান করেছেন। মা ও সন্তান দুজনেই সুস্থ আছেন, আলহামদুলিল্লাহ। সকলের কাছে দোয়া প্রার্থী।’ কিন্তু রিমনের এই আনন্দ স্থায়ী হয়নি। স্ত্রীকে দাফন করতে দেশে আসবেন তিনি। দেখবেন তার শিশুপুত্রকেও। তবে সেই দেখায় আর আনন্দ থাকবে না।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ঘটনায় অনেকেই শোক প্রকাশ করেছেন। এফ আই বাবু নামে একজন লিখেছেন, ‘মা এমনিই হয়। সকালে ছেলেকে দুনিয়ার আলো দেখিয়েছে। রাতে মা শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করল।’