রিমালে বেশি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত খুলনায় 

ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে বিভিন্ন এলাকায় বিধ্বস্ত হয়েছে অনেক ঘরবাড়ি। গতকাল বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার ঘুরিয়াখালী গ্রামেছবি: প্রথম আলো

প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমাল চলে যাওয়ার পর এর ক্ষতচিহ্ন এখন বেরিয়ে আসছে। সরকারের তথ্য বলছে, রিমালের আঘাতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় পৌনে ২ লাখ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে খুলনা জেলায়। এ ছাড়া ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে ৭ জেলায় মারা গেছেন মোট ১৬ জন।

গত রোববার রাতে বাংলাদেশে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় রিমাল। সরকারের তথ্য বলছে, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতির মুখে পড়ে উপকূল ও আশপাশের ১৯ জেলা। এগুলো হলো সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, বরিশাল, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বরগুনা, ভোলা, ফেনী, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নড়াইল, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর ও যশোর। এই ঝড়ের প্রভাবে ব্যাপক জলোচ্ছ্বাসে উপকূলের অনেক এলাকা প্লাবিত হয়।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স কো–অর্ডিনেশন সেন্টারের দুর্যোগসংক্রান্ত দৈনিক প্রতিবেদনে গতকাল বুধবার ক্ষয়ক্ষতির তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এর আগে ঘূর্ণিঝড় রিমালের পরদিন গত সোমবার একেবারে প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে ৩৫ হাজারের বেশি ঘরবাড়ি। এ ছাড়া আংশিকভাবে বিধ্বস্ত হয় ১ লাখ ১৪ হাজার ৯৯২টি ঘরবাড়ি।

তবে সরকারের সর্বশেষ দুর্যোগসংক্রান্ত দৈনিক প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে দেশের উপকূলীয় ও এর আশপাশের ১৯টি জেলায় পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে ৪০ হাজার ৩৩৮টি ঘরবাড়ি এবং আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৫২৮টি ঘরবাড়ি।

ওই প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি ঘরবাড়ি পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে খুলনা জেলায়। এই জেলায় ২০ হাজার ৭৬২টি ঘরবাড়ি পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে। বাগেরহাটে বিধ্বস্ত হয়েছে ১০ হাজার ঘরবাড়ি। বাকিগুলো বিভিন্ন জেলায়। দুর্যোগসংক্রান্ত দৈনিক প্রতিবেদনে তথ্য বলছে, এই ঝড়ে দুর্গত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৪৬ লাখ।

মৃত্যু বেশি পিরোজপুরে

দুর্যোগসংক্রান্ত দৈনিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, রিমালের প্রভাবে যে ১৬ জন মারা গেছেন, তার মধ্যে ৪ জন মারা গেছেন পিরোজপুর জেলায়। বরিশাল, পটুয়াখালী ও ভোলায় মারা গেছেন ৩ জন করে। এ ছাড়া খুলনা, সাতক্ষীরা ও চট্টগ্রামে মারা গেছেন ১ জন করে। 

সহায়তার চিত্র

দুর্যোগসংক্রান্ত দৈনিক প্রতিবেদনে ক্ষতিগ্রস্ত কোন জেলায় কী পরিমাণ সরকারি সহায়তা দেওয়া হয়েছে, তারও তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোতে ২৫ থেকে ২৭ মে পর্যন্ত মোট ৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা নগদ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। চাল দেওয়া হয়েছে সাড়ে ৫ হাজার টন এবং শিশুখাদ্য কেনার জন্য দেওয়া হয়েছে দেড় কোটি টাকা। এ ছাড়া গোখাদ্য বাবদ দেওয়া হয়েছে দেড় কোটি টাকা। এর বাইরে শুকনা খাবারও দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, এই ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ৮ লাখের বেশি মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছিলেন।

আরও পড়ুন