ডিএমপির সাবেক কমিশনারসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়ার আবেদন খারিজ

ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত
ফাইল ছবি

আট বছর আগে পুলিশি হেফাজতে ছাত্রদল নেতা নুরুজ্জামানকে নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তৎকালীন কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়াসহ ১৫ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। পরে আদালত শুনানি নিয়ে এ আবেদন খারিজ করে দেন।

আজ সোমবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে ‘নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন-২০১৩’–এর অধীন এ আবেদন করেন ছাত্রদল নেতা নুরুজ্জামানের বাবা ইয়াকুব আলী।

ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আসাদুজ্জামান বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন। পরে আদালত ওই আবেদন খারিজ করে দেন। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি তাপস কুমার পাল।

এজাহারে বাদীপক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, রাজধানীর খিলগাঁও থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামানকে ২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি আটক করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরে তাঁকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। নুরুজ্জামানের খোঁজে তাঁর মা মরিয়ম বেগম, অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মুনিয়া পারভীনসহ স্বজনেরা ডিবি অফিস ও খিলগাঁও থানায় খোঁজ নেন। দুই দিন পর খিলগাঁওয়ের জোড়পুকুর মাঠে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নুরুজ্জামান মারা যান। তাঁর বুকে, দুই হাতের তালু ও কবজিতে ১৬টি গুলির ক্ষতচিহ্ন পাওয়া যায়।

এজাহারে বাদীপক্ষ আরও অভিযোগ করেছে, নুরুজ্জামানের মৃত্যুর পর পুলিশ বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে খিলগাঁও থানায় মামলা করে। মামলায় দাবি করা হয়, সন্ত্রাসীরা নুরুজ্জামানকে গুলি করে হত্যা করেছে। তবে ঢাকা মহানগর ডিবি দক্ষিণের সাধারণ ডায়েরির তথ্য বলছে, ২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় নুরুজ্জামানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পুলিশি হেফাজতে থাকা অবস্থায় নুরুজ্জামানকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।

যাঁদের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণের আর্জি জানানো হয়েছে, তাঁরা হলেন ডিএমপির সাবেক কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া, ডিবির তৎকালীন উপকমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, ডিবির এসআই দীপক কুমার দাস, জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ কমিশনার হাসান আরাফাত, জাহিদুল হক তালুকদার, পুলিশ পরিদর্শক ফজলুর রহমান, ওহিদুজ্জামান, এস এম শাহরিয়ার হাসান, এসআই শিহাব উদ্দিন, বাহাউদ্দিন ফারুকী, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, কনস্টেবল সোলাইমান, আবু সায়েদ, লুৎফর রহমান ও খিলগাঁও থানার এসআই আলাউদ্দিন।

নুরুজ্জামানের মৃত্যুর বিষয়ে ২০১৫ সালের ২০ জানুয়ারি ডিবির (দক্ষিণ) তৎকালীন উপকমিশনার কৃষ্ণপদ রায় বলেছিলেন, নুরুজ্জামান ছাত্রদলের নেতা বলে জানা গেছে। তিনি রাজধানীর মৎস্য ভবনের সামনে পুলিশের ওপর সর্বশেষ বোমা হামলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এ ছাড়া তখন ডিবি বলেছিল, ‘বন্দুকযুদ্ধ’ চলাকালে প্রতিপক্ষের ছোড়া গুলিতে নুরুজ্জামান গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনাস্থল থেকে ককটেল, গুলি ও বেশ কয়েকটি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।