দেশের ভোটার তালিকায় কতজন রোহিঙ্গা, জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট

হাইকোর্ট ভবনফাইল ছবি

সারা দেশে কতজন রোহিঙ্গাকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে আগামী ৮ আগস্ট প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এক আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।

এর আগে কক্সবাজার জেলার ঈদগাঁও উপজেলার ঈদগাঁও ইউনিয়নে রোহিঙ্গাদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ না দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদটির নির্বাচনের তফসিলের বৈধতা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ হামিদ হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ২৪ এপ্রিল হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। পুরো কক্সবাজার জেলায় কতজন রোহিঙ্গাকে ভোটার করা হয়েছে, তা তদন্ত করে ৬ জুন আদালতে প্রতিবেদন দিতে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকসহ বিবাদীদের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়।

ওই রিটের ধারাবাহিকতায় সারা দেশে কতজন রোহিঙ্গা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, সে বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা চেয়ে গতকাল সোমবার ওই আবেদন করে রিট আবেদনকারীপক্ষ।

আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্ল্যাহ মিয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।

পরে আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্ল্যাহ মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, কক্সবাজারের কতজন রোহিঙ্গাকে ভোটার করা হয়েছে, এ–সংক্রান্ত প্রতিবেদন এখনো জমা পড়েনি। রাষ্ট্রপক্ষ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময়ের আরজি জানায়। ইতিমধ্যে কক্সবাজারের বাইরে বিভিন্ন জায়গায় রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। যে কারণে আগের রিটের ধারাবাহিকতায় আবেদনটি করা হয়। সারা দেশে কতজন রোহিঙ্গাকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, তা জানিয়ে আগামী ৮ আগস্ট আদালতে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। স্থানীয় সরকার সচিব ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ বিবাদীদের প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রিট আবেদনকারীপক্ষ জানায়, ২০১৬ সাল থেকে কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ঈদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের ক্ষমতাধর কথিত জনপ্রতিনিধির যোগসাজশে অর্থের বিনিময়ে অসংখ্য রোহিঙ্গাকে জাল ঠিকানা, ভুয়া মা–বাবা সাজিয়ে ও জাল কাগজপত্র তৈরি করে জন্মনিবন্ধন, ভোটার আইডিসহ দেশের নাগরিকত্ব দিতে সরাসরি সহায়তা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় স্থানীয় এক বাসিন্দা ৩৮ জন রোহিঙ্গার নাম উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেন। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ২৯ অক্টোবর এক তদন্ত প্রতিবেদনে ৩৮ জনের মধ্যে ৩৫ জন রোহিঙ্গার বিষয়ে সত্যতা পাওয়া যায়। এসব রোহিঙ্গার নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। রোহিঙ্গাদের ভোটার রেখেই ওই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। এ অবস্থায় ওই রিট করা হয়।