প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান
সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইনসহ অঙ্গীকারগুলো বাস্তবায়ন করুন: রানা দাশগুপ্ত
সরকার অঙ্গীকার করে, কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয় না বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত। আওয়ামী লীগের দেওয়া নির্বাচনী অঙ্গীকারগুলো বাস্তবায়ন করার জন্য পদক্ষেপ নিতে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানান। ঐক্য পরিষদের পরবর্তী লড়াই আওয়ামী লীগের দেওয়া নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়ন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন ও জাতীয় কাউন্সিলে প্রধান বক্তা হিসেবে রানা দাশগুপ্ত এসব কথা বলেন। আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সরকার অঙ্গীকার করলে তা বাস্তবায়ন হয় না উল্লেখ করে রানা দাশগুপ্ত বলেন, ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন, বৈষম্য বিলোপ আইন ও দেবোত্তর সম্পত্তি সংরক্ষণ আইন করবে। জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন করা হবে। তিনি বলেন, ‘২০১৮ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে এসব অঙ্গীকার বাস্তবায়নের জন্য লড়াই করেছি, কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি।’
১৫ বছরের বেশি সময় ধরে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেও সরকারে, রাষ্ট্রে, প্রশাসনে, রাজনীতিতে সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদ রয়েছে বলে অভিযোগ করেন রানা দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, ‘এ কারণে প্রধানমন্ত্রীর অনেক সদিচ্ছা বাস্তবায়ন হয় না। আমাদের আন্দোলন সফল হয়েও হয় না। অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন হলেও আজও এই আইনের বাস্তবায়ন হয় না।’
প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আবেদন জানিয়ে রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘যে অঙ্গীকারগুলো নির্বাচনী ইশতেহারে করেছেন, তা বাস্তবায়নে দ্রুততম সময়ের মধ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন, এটা আশা করি। আমাদের পরবর্তী লড়াই হলো সরকারি দলের দেওয়া অঙ্গীকার বাস্তবায়নের লড়াই। এই লড়াইয়ে সবাই ঐক্যবদ্ধ থেকে সামনের দিকে এগিয়ে যাব।’
রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘আমরা অঙ্গীকারের বাস্তবায়ন চাই। আমরা আমাদের অস্তিত্ব, সমানাধিকার ও সমমর্যাদা প্রতিষ্ঠা চাই। আমরা বাংলাদেশে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে থাকার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করিনি।’
এই সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সম্পত্তি যাঁরা হাতিয়ে নেন, তাঁদের হাত থেকে প্রত্যেক নাগরিককে রক্ষা করতে হবে। বিশেষ করে যারা দরিদ্র জনগোষ্ঠী, সংখ্যালঘু ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, তাদের রক্ষা করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে ‘চেটে খাওয়ার দল’ রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, যাঁরা সবকিছু খেয়ে ফেলতে চান, তাঁদের হাত থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করতে হবে।
সম্মেলনের উদ্বোধন করেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি নিমচন্দ্র ভৌমিক। এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি ঊষাতন তালুকদার ও নির্মল রোজারিও, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সুব্রত চৌধুরী, মিলন কান্তি দত্ত, রঞ্জন কর্মকার, বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি জে এল ভৌমিক প্রমুখ। এ সময় ঐক্য পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজল দেবনাথ উপস্থিত ছিলেন।