ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ভুক্তভোগীদের কারাভোগ সামঞ্জস্যপূর্ণ হচ্ছে না: মাহ্‌ফুজ আনাম

‘বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস’ উপলক্ষে সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন সংগঠনের সভাপতি ও দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্‌ফুজ আনাম (ডানে)। জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা, ৪ মেছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ) রহিত হওয়ার পরও এই আইনে ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের কারাভোগ করা সামঞ্জস্যপূর্ণ হচ্ছে না বলে মনে করেন সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহ্‌ফুজ আনাম।

‘বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস-২০২৪’ উপলক্ষে সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে মাহ্‌ফুজ আনাম এ কথা বলেন। আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘গ্রহের জন্য গণমাধ্যম: পরিবেশগত সংকট মোকাবিলায় সাংবাদিকতা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় সভায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

তথ্য প্রতিমন্ত্রীর উদ্দেশে মাহ্‌ফুজ আনাম বলেন, ডিএসএ উঠে গেছে। কিন্তু ডিএসএর মামলায় ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা এখনো কারাগারে। একটি আইন মনে করা হলো প্রয়োজন নেই, চলে গেল। কিন্তু সেই আইনে ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা জেল খাটছেন, এটি সামঞ্জস্যপূর্ণ হচ্ছে না।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পরিবর্তে করা সাইবার নিরাপত্তা আইন নিয়ে প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে আরও বিস্তারিত আলোচনা করতে চান বলে জানান মাহ্‌ফুজ আনাম। তিনি বলেন, এখনো কিছু ভীতিকর বিষয় আছে। এ ছাড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন চলে গেলেও আরও ৯টি আইন রয়ে গেছে, যেগুলো প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে স্বাধীন সাংবাদিকতাকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে।

আরও পড়ুন

পরিবেশবিষয়ক সাংবাদিকতায় সহায়ক আইন করার দাবি জানান মাহ্‌ফুজ আনাম। তিনি বলেন, যাঁরা অবৈধ বালু ব্যবসা করেন, নদী দখল করে তাঁরা সমাজে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি। অন্যকিছু বাদ দিলেও শুধু পরিবেশ সাংবাদিকতা করলেও অনেক ক্ষমতাধর ব্যক্তি তাঁর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যাবেন। তাই সরকারের কাছ থেকে এ বিষয়ে (পরিবেশ সাংবাদিকতায় সহায়ক) দ্ব্যর্থহীন সমর্থন পেলে শুধু পরিবেশ সাংবাদিকতা করে দেশের উন্নয়নে বিরাট সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করতে চায় সংবাদমাধ্যম।

বাংলাদেশ ব্যাংকে বিনা অনুমতিতে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞাকে অগণতান্ত্রিক বলে উল্লেখ করেন মাহ্‌ফুজ আনাম। আর এই অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের বিষয়ে সরকার কিছু করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

আরও পড়ুন

সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন সংবাদপত্রের মালিকদের সংগঠন নিউজ পেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (নোয়াব) সভাপতি এ কে আজাদ, ভোরের কাগজের সম্পাদক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ঢাকা ট্রিবিউনের সম্পাদক জাফর সোবহান, দেশ রূপান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোস্তফা মামুন। আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, ইনকিলাবের সম্পাদক এ এম এম বাহাউদ্দীনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের সাংবাদিকেরা।

আলোচনা সভায় প্রতিপাদ্যের ওপর সূচনা বক্তব্য দেন পরিবেশ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিকতা করা দ্য ডেইলি স্টারের প্রধান প্রতিবেদক পিনাকী রায়।