দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান গণতান্ত্রিক যুক্তফ্রন্টের
গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সিঙ্গাপুরে মারা যাওয়া ওসমান হাদির জন্য গভীর শোক প্রকাশ করেছে গণতান্ত্রিক যুক্তফ্রন্ট। শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ওসমান হাদির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানায় গণতান্ত্রিক যুক্তফ্রন্ট।
নেতারা বলেন, ওসমান হাদির মৃত্যু গোটা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতির চিত্র আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।
জুলাই অভ্যুত্থানের পর মানুষ একটা নিরাপদ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিল উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, কিন্তু গত দেড় বছরে অন্তর্বর্তী সরকারের একের পর এক ব্যর্থতা সেই আশাকে দুরাশায় পরিণত করেছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে।
নেতারা অভিযোগ করেন, সরকারের তরফ থেকে এসব কর্মকাণ্ড বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার পরিবর্তে কখনো কখনো এসবকে প্রেশার গ্রুপ বলে মদদ জোগানো হয়েছে। প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
ওসমান হাদির মৃত্যু স্বাভাবিকভাবেই মানুষের মনে ক্ষোভের সঞ্চার করেছে। কিন্তু এই সুযোগে একটি উগ্র ফ্যাসিস্ট শক্তি এ ঘটনা কাজে লাগিয়ে তাদের হীন তৎপরতা চালাচ্ছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
নেতারা বলেন, এরই অংশ হিসেবে গতকাল রাতব্যাপী ঢাকায় এবং সারা দেশে তাণ্ডব চালানো হয়েছে। ছায়ানট ভবন, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর–অগ্নিসংযোগ ও লুটের ঘটনা ঘটেছে। সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক নূরুল কবীরের ওপর হামলা করা হয়েছে, তাঁকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। এ ছাড়া ময়মনসিংহে কথিত ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে এক শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
এসব ঘটনা দেশকে চূড়ান্ত নৈরাজ্যের দিকে নিয়ে যাবে এবং দেশে একটা গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে বলে নেতারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তাঁরা আরও বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসের নির্বাচন বানচাল করে নিজেদের হীন স্বার্থ-সুবিধা চরিতার্থ করতে একটি মহল এই নৈরাজ্যকে উসকে দিচ্ছে।
সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে নেতারা বলেন, অবিলম্বে এই নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের কঠোর হস্তে দমন করুন, হাদির হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনুন এবং নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে তৎপর হোন।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, সিপিবির সভাপতি সাজ্জাদ জহির চন্দন, সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ ক্কাফী রতন, বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নূরুল আম্বিয়া, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদ (মার্ক্সবাদী) সমন্বয়ক মাসুদ রানা, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আবদুল আলী।