ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন রহমত উল্লাহর পদত্যাগ
শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে পদত্যাগ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন মো. রহমত উল্লাহ। একই সঙ্গে আইন বিভাগের চেয়ারম্যানের পদ থেকেও সরে দাঁড়িয়েছেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর পদত্যাগপত্র দিয়েছেন রহমত উল্লাহ। পদত্যাগপত্রে তিনি লিখেছেন, নিজের সম্মান, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক নিরাপত্তা এবং অনুষদ ও বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার স্বার্থে তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হচ্ছেন।
আইন অনুষদের ডিন মো. রহমত উল্লাহর পদত্যাগ চেয়ে গত কয়েক দিন বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও শিক্ষার্থীরা তাঁকে নিয়ে সমালোচনা করতে থাকেন। এমন অবস্থায় আজ পদত্যাগ করেন রহমত উল্লাহ।
গত ১ জানুয়ারি থেকে আইন বিভাগের চেয়ারম্যান এবং একই সঙ্গে আইন অনুষদের শিক্ষকদের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে অনুষদের ডিনের দায়িত্বপালন করছিলেন বলে পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করেন রহমত উল্লাহ। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ প্রসঙ্গে পদত্যাগপত্রে তিনি লিখেছেন, অনুষদের শিক্ষার্থীরা ১৭ আগস্ট তাঁকে উদ্দেশ করে তাঁর ও অনুষদের শিক্ষকদের ব্যক্তিগত ই–মেইলে ‘স্পষ্ট বিবৃতি’ শিরোনামে তাঁর বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ করেন। অভিযোগগুলোর মধ্যে আছে কোটা সংস্কার আন্দোলনে হত্যাযজ্ঞ, হামলা ও হয়রানি চলাকালে শিক্ষার্থীদের কাছে নিজের অবস্থান স্পষ্ট না করা, নীল দলের বৈঠক ও সংবাদ সম্মেলনে অংশগ্রহণ এবং গত রমজানে বঙ্গবন্ধু টাওয়ারে ‘প্রোডাক্টিভ রামাদান’ অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলায় নীরব ভূমিকা পালন করা।
রহমত উল্লাহ লিখেছেন, ‘এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ আগস্ট শিক্ষার্থীরা আমাকে আইন বিভাগের চেয়ারম্যান ও অনুষদের ডিনের পদ থেকে পদত্যাগ করার জন্য ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয়। পরে ১৯ আগস্ট আমার ও অনুষদের সব শিক্ষকের ব্যক্তিগত ই–মেইলে ১৭ আগস্ট পাঠানো “স্পষ্ট বিবৃতি” অনুযায়ী পদত্যাগ করতে অনুরোধ করে এবং ওই দিন আইন বিভাগ ও আইন অনুষদের সব অফিসকক্ষে তালা লাগিয়ে দেয়। এ ছাড়া তারা আইন বিভাগ ও আইন অনুষদে নানা কুরুচিপূর্ণ পোস্টারিং এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অরুচিকর ও সম্মানহানিকর প্রচারণা অব্যাহত রেখেছে। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ বা কারণগুলোর কোনো বস্তুনিষ্ঠতা ও যৌক্তিকতা না থাকা সত্ত্বেও উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আমার সম্মান, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক নিরাপত্তা এবং আইন বিভাগ ও আইন অনুষদে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার স্বার্থে বিভাগের চেয়ারম্যান এবং অনুষদের ডিনের পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হচ্ছি।’
এর আগে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন আবদুল বাছির ও চারুকলা অনুষদের ডিন নিসার হোসেন পদত্যাগ করেন। তবে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ শূন্য থাকায় এখনই এসব পদত্যাগ কার্যকর হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সহ-উপাচার্য সীতেশ চন্দ্র বাছার।