প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলাকারীদের বিচার দাবি ঢাবির সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীদের

প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক নূরুল কবীরের ওপর হামলার ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

আজ শুক্রবার বিকেলে এক বিবৃতিতে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা এসব ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দেশবিরোধী সন্ত্রাসীদের গুলিতে নির্মমভাবে শহীদ হন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদি। আমরা তাঁর আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। আমরা শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানাচ্ছি।’

গণমাধ্যমের ওপর হামলার বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভের সঙ্গে লক্ষ করছি, ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডকে পুঁজি করে একটি স্বার্থান্বেষী উগ্র গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় বাংলা দৈনিক প্রথম আলো, ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের কার্যালয় এবং সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানটে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালিয়েছে। এ ছাড়া ইংরেজি দৈনিক নিউ এজের সম্পাদক নূরুল কবীরের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে। আমরা এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাই। অবিলম্বে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করার জোর দাবি জানাচ্ছি।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘ফ্যাসিবাদী আওয়ামী শাসনামলে প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার রাষ্ট্রীয় রোষানলে পড়েছিল। একই কায়দায় জুলাই গণ–অভ্যুত্থানপরবর্তী সময়ে সংঘটিত এ ধরনের হামলা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের অধিকারের ওপর সরাসরি আঘাত তো বটেই, একই সঙ্গে এটি গণ–অভ্যুত্থানের চেতনার সঙ্গেও সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক।’

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার প্রায় এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও অন্তর্বর্তী সরকার এখনো অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে ব্যর্থ হয়েছে। উপরন্তু, বিভিন্ন গণমাধ্যমে খুনিদের ভারতে পালিয়ে যাওয়ার খবর প্রকাশিত হয়েছে। আমরা মনে করি, জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে গণহত্যার সঙ্গে জড়িত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপি ও সন্ত্রাসীদের ভারতে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা এবং হাদি হত্যার সঙ্গে যুক্ত খুনিদের একইভাবে সীমান্ত অতিক্রম—এ দুটি ঘটনা একটি অভিন্ন সূত্রে গাঁথা।’

বিবৃতিতে দেশবাসীর উদ্দেশে বলা হয়, ‘আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ড এবং গতকালের (বৃহস্পতিবার) নৈরাজ্য বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার পাশাপাশি গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথকে বাধাগ্রস্ত করার একটি ঘৃণ্য অপচেষ্টা। আমরা দেশবাসীকে শান্তিপূর্ণ উপায়ে আন্দোলন পরিচালনা এবং যেকোনো ধরনের সহিংস আচরণ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।’