চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতিকে আবার ধাওয়া, লাঠিসোঁটা রামদা নিয়ে মহড়া

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হককে ধাওয়া দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ধাওয়া দেওয়া ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াছের অনুসারী।

ধাওয়া দেওয়ার এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে দুই পক্ষের নেতা–কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। ইলিয়াছের অনুসারীরা লাঠিসোঁটা, রামদা নিয়ে ক্যাম্পাসে মহড়া দেয়। পরে রাত সাড়ে আটটার দিকে পুলিশ ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় হাটহাজারী উপজেলার মেখেল ইউনিয়নের শ্রীশ্রী ধাম মন্দিরে এক অনুষ্ঠানের অতিথি হিসেবে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। তাঁকে শুভেচ্ছা জানাতে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াছ ও তাঁদের অনুসারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেট এলাকার চট্টগ্রাম-রাঙামাটি হাইওয়ে সড়কে অবস্থান নেন। এ সময় সড়কে দাঁড়ানো নিয়ে এই দুই পক্ষের অনুসারীদের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তা মারামারিতে রূপ নেয়। এরপর ইলিয়াছের অনুসারীরা রেজাউল হকসহ তাঁর অনুসারীদের ধাওয়া দিলে তাঁরা ১ নম্বর গেট এলাকা থেকে ২ নম্বর গেটের দিকে চলে যান।

উল্লেখ্য, রেজাউল হক ও মোহাম্মদ ইলিয়াছ দুজনেই শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে নিজেদের পরিচয় দেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, ১ নম্বর গেট এলাকার ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ইলিয়াছের অনুসারীরা তাঁদের নিয়ন্ত্রণাধীন আলাওল এবং এ এফ রহমান হলের সামনে এসে জড়ো হন। এখান থেকে লাঠিসোঁটা ও রামদা নিয়ে শহীদ আবদুর রব হলের দিকে যান। ওই হলের ফটকের সামনে গিয়ে ইলিয়াছের অনুসারীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন। পরে প্রক্টরিয়াল বডি পুলিশ নিয়ে সেখানে উপস্থিত হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

জানতে চাইলে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াছ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি তাঁর অনুসারী শাখা ছাত্রলীগের উপ–আপ্যায়নবিষয়ক সম্পাদক নয়ন চন্দ্র মোদকের বক্তব্য নেওয়ার পরামর্শ দেন।

পরে নয়ন চন্দ্র মোদক প্রথম আলোকে বলেন, রেজাউল হক বহিরাগতদের নিয়ে ক্যাম্পাস অস্থিতিশীল করতে চেয়েছিলেন। তাঁরা যখন শিক্ষা উপমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে ১ নম্বর গেট এলাকায় অবস্থান করছিলেন, তখন রেজাউল হক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে বহিরাগতদের নিয়ে এসেছিলেন। তাঁরা তাঁদের প্রতিহত করেছেন।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক। তিনি বলেন, তিনি শিক্ষা উপমন্ত্রীর গাড়ির পেছনে মোটরসাইকেল নিয়ে হাটহাজারী গিয়েছিলেন। ১ নম্বর গেট এলাকায় কী হয়েছে এ বিষয়ে তিনি জানেন না। খোঁজ নিয়ে জানাবেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হককে ধাওয়া দেওয়ার ঘটনা এবারই প্রথম নয়। গত ৮ জুন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াছের অনুসারীরা রেজাউল হককে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে কুশপুত্তলিকা দাহ করেছিলেন। এরপর  ২০ জুলাই রাতে ইলিয়াছের অনুসারীরা রেজাউলকে ধাওয়া দিয়েছিলেন।