২৫ বছর পর দেশে ফিরে পরিবার খুঁজছেন সৌদিপ্রবাসী

সম্প্রতি সৌদি আরবের জেদ্দা থেকে দেশে ফেরেন আবুল কাশেম। তবে বাড়ির ঠিকানা বলতে পারছেন না তিনি
ছবি: সংগৃহীত

সৌদিপ্রবাসী এক প্রবীণ দেশে ফিরে পরিবারকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন। তাঁর দাবি, ২৫ বছর আগে তিনি সৌদি গিয়েছিলেন। দেশে তিন ছেলে ও ছয় মেয়েসহ অনেক আত্মীয়স্বজন আছে তাঁর। তবে সুনির্দিষ্টভাবে কারও ঠিকানা বলতে পারছেন না তিনি। বর্তমানে তিনি বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারে অবস্থান করছেন।

ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে। এতে বলা হয়, বিমানবন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক, এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশসহ সবার সহযোগিতায় বিদেশফেরতদের নানা সেবা দেয় ব্র্যাক। এরই অংশ হিসেবে বিমানবন্দরের আর্মড পুলিশ গত শনিবার বিকেলে ওই প্রবীণকে তাঁর পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের কাছে দেয়। ইমিগ্রেশন পুলিশের তথ্য অনুযায়ী ওই বৃদ্ধ শুক্রবার (সম্ভবত) দিবাগত রাতে সৌদি আরবের জেদ্দা থেকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন। তাঁর কাছে কোনো পাসপোর্ট ছিল না। তিনি ট্রাভেল পাস (ভ্রমণের অনুমতিপত্র) নিয়ে এসেছেন।

ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের কর্মসূচি প্রধান শরিফুল হাসান বলেন, শারীরিকভাবে সুস্থ মনে হলেও সম্ভবত ওই প্রবীণ ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রংশ রোগে আক্রান্ত। এ কারণেই তিনি সঠিকভাবে ঠিকানা বলতে পারছেন না। তিনি বলেছেন, তাঁর নাম আবুল কাশেম। বাবার নাম ফজেল আহমেদ। মা শাবানা। স্ত্রীর নাম বলছেন আমেনা।

ব্র্যাকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আবুল কাশেম নিজের ঠিকানা নিয়েও একেক সময় একেক কথা বলছেন। কখনো বলছেন, তাঁর বাড়ি চট্টগ্রামের নয়াবাজার। কখনো বলছেন, টেকনাফ। আবার রাউজানের পাহাড়তলী ইউনিয়নের গরিশংকরহাটের কথাও বলছেন। আবার বলছেন, চট্টগ্রামের নতুন বাজার হালিশহরের কাছে, ঈদগাহের মাঠ বউবাজার এলাকায় তাঁর ছেলের তরকারির দোকান আছে। তাঁর বাড়ি কোথায় সেটি নিশ্চিত হতে না পারলেও ভাষা শুনে বাড়ি চট্টগ্রাম অঞ্চলে বলেই মনে হচ্ছে।

আবুল কাশেমের দাবি, তাঁর তিন ছেলের নাম মান্নান, নূর হাসান, এনামুল হাসান। এর মধ্যে নূর হাসানের তরকারির দোকান আছে। ছোট ছেলে এনামুল হাসান দুবাই থাকেন। মান্নান সৌদি থাকেন বলে দাবি তাঁর। ৮ থেকে ১০ জন নাতি–নাতনিও আছেন। জেদ্দা থেকে বিমানে ওঠার আগে পরিবারের সঙ্গে কথাও বলেছেন।

প্রবীণকে বাড়ি পৌঁছে দিতে চট্টগ্রাম পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে ব্র্যাক। হালিশহর ও টেকনাফে খোঁজখবর করা হয়েছে। বিমানবন্দরের পুলিশসহ পুলিশের বিশেষ শাখার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছে। কেউ তাঁকে চিনতে পারলে বা কোনো তথ্য পেলে ব্র্যাক মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টারের ম্যানেজার আল-আমিন নয়নের সঙ্গে এই নম্বরে ০১৭১২১৯৭৮৫৪ যোগাযোগ করার অনুরোধ করেছে ব্র্যাক।