স্কুলছাত্র আয়াজ হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে হাইকোর্টে তলব
গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুলের ছাত্র আয়াজ হক হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরিন আক্তারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ আদেশ দেন।
কলেজের প্রীতি ফুটবল টুর্নামেন্টের বিরোধের জেরে এক দশকের বেশি সময় আগে আয়াজ হত্যাকাণ্ড ঘটে। এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (ধানমন্ডি থানার তৎকালীন এসআই) সাহিদুল বিশ্বাসকে ৯ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টায় আদালতে হাজির হয়ে নিজের ভূমিকার ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন হাইকোর্ট।
ওই মামলায় ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর বিচারিক আদালত রায় দেন। আসামিরা তখন সিটি কলেজের ছাত্র ছিলেন। রায়ে ইনজামামুল ইসলাম ওরফে জিসানকে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তৌহিদুল ইসলাম, মশিউর রহমান, আবু সালেহ মো. নাসিম ও আরিফ হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে জিসান ও তৌহিদুল ২০২১ সালে পৃথক আপিল করেন। আপিলের ওপর গত ১৯ জানুয়ারি হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়।
আজ শুনানিতে আসামি জিসানকে হেফাজতে নিয়ে নির্যাতনের মাধ্যমে তাঁর কাছ থেকে স্বীকারোক্তি আদায়ের অভিযোগ তুলে ধরেন তাঁর আইনজীবী। আদালতে জিসানের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ। রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বদিউজ্জামান তপাদার শুনানিতে ছিলেন।
পরে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, দুবার রিমান্ডে নিয়ে জিসানের কাছ থেকে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়। তাঁর পায়ে পচন ধরে যায়, এ জন্য তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তিও করতে হয়। এই নির্যাতনের কারণে সেখানে বার্ন ইউনিটে রেখে তাঁকে ১৫ দিন চিকিৎসা দিতে হয়। শিশির মনির বলেন, ‘এ বিষয়গুলো আদালতের সামনে উপস্থাপন করেছি, নথি থেকে দেখিয়েছি। ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন সাহিদুল বিশ্বাস। তখন তিনি ধানমন্ডি থানার এসআই ছিলেন। আগামী রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় সশরীর আদালতে হাজির হয়ে তাঁকে আচরণের ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৪ সালের ৯ জুন সিটি কলেজের প্রীতি ফুটবল টুর্নামেন্টের প্রস্তুতি ও খরচ বাবদ টাকা তোলার বিষয় নিয়ে আয়াজের বড় ভাই সিটি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আশদিন হকের সঙ্গে আসামিদের কথা-কাটাকাটি ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে ওই দিন বিকেলে ধানমন্ডি থানার জিগাতলায় যাত্রীছাউনির কাছে আয়াজকে একা পেয়ে আসামিরা ছুরিকাঘাত করেন। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় তার বাবা আইনজীবী শহীদুল হক ২০১৪ সালের ৯ জুন ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন। ২০১৫ সালের ১৩ মে ধানমন্ডি থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক এসআই সাহিদুল বিশ্বাস আদালতে অভিযোগপত্র দেন।