মন্ত্রীরা ভোটের মাঠে, চাপ নেই সচিবালয়ে

বাংলাদেশ সচিবালয়ফাইল ছবি

আজ বেলা দেড়টায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি দপ্তরে গিয়ে দেখা গেল দায়িত্বরত কর্মকর্তা বসে আছেন। দেখেই বোঝা যায়, হাতে তেমন গুরুত্বপূর্ণ কাজ নেই। কথা প্রসঙ্গে ওই কর্মকর্তা বললেন, নির্বাচন সামনে রেখে এখন কাজের তেমন চাপ নেই। এই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী দীপু মনি ও উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী দুজনই আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী। তাই দুজনই এখন তাঁদের নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায়। তবে কাজের চাপ কম থাকলেও নিয়ম করে প্রতিদিনই অফিসে আসছেন বলে জানালেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা।

তার আগে পাব৴ত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দপ্তরে গেলে একজন কর্মকর্তা জানালেন, মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং বান্দরবান থেকে নির্বাচন করছেন (আওয়ামী লীগের প্রার্থী)। সে জন্য তিনি এখন নির্বাচনী এলাকায় আছেন। তাই মন্ত্রণালয়ে এখন কাজের চাপ কম।

শুধু এই দুই মন্ত্রণালয় নয়, সবগুলো মন্ত্রণালয়েই কমবেশি এখন একই ধরনের চিত্র বিরাজ করছে। স্বাভাবিকভাবেই নির্বাচনকালে সব সময় কাজকর্ম কম হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে এবার তিনজন প্রতিমন্ত্রী ছাড়া মন্ত্রিসভার বাকি সব সদস্যই আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাই স্বাভাবিকভাবেই তাঁরা সবাই নিজ নিজ নির্বাচনী আসনে ভোটের মাঠে প্রচারে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। ফলে মন্ত্রণালয়ে কাজের চাপ কমেছে। স্বাভাবিক সময়ে দর্শনার্থীদের যত ভিড় দেখা যায়, তার চেয়ে এখন তাঁদের ভিড়ও কম।

আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও মন্ত্রিসভায় ২৩ মন্ত্রী, ১৮ প্রতিমন্ত্রী ও ৩ উপমন্ত্রী রয়েছেন। যে তিনজন মনোনয়ন পাননি, তাঁরা হলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন।

আজ দুপুরে আইন মন্ত্রণালয়ে গেলে একজন কর্মকর্তা জানালেন, এখন মূলত ‘রুটিনকাজ’ হচ্ছে। পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত এই পরিস্থিতি থাকবে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আজ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাঁর নির্বাচনী এলাকায় আছেন বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

তবে যে প্রতিমন্ত্রীরা মনোনয়ন পাননি, তাঁদের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন আজ মন্ত্রণালয়ে অফিস করেছেন। ওই মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, আজ তাঁদের মন্ত্রণালয়ে একটি সভা ছিল।

সংবিধানে নির্বাচনকালীন সরকার বলে কিছু নেই। তবে নির্বাচনের আগে সাধারণত বড় ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় না। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনের আগে আর মন্ত্রিসভার বৈঠক হওয়ার সম্ভাবন কম। যদি অতি গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয় থাকে, তাহলেই কেবল বৈঠক হতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রেও শুধু সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীদের উপস্থিতিতে সেই বৈঠক হতে পারে।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের পর নতুন মন্ত্রিসভা কাদের দিয়ে কেমন হবে, সেসব নিয়েও এখন নানা আলোচনা হয় সচিবালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে। সব মিলিয়ে নির্বাচন পর্যন্ত এভাবে ‘রুটিনকাজেই’ চলবে সচিবালয়।