গণমাধ্যমের তথ্য পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করা হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী

তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত ‘তথ্য অধিকার আইন ও গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় বক্তব্য দেন। ঢাকা, ৮ মেছবি: সংগৃহীত

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেন, তথ্য অধিকার আইনের আওতায় গণমাধ্যমের তথ্য পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করা হবে। আজ বুধবার রাজধানীর দারুস সালামে জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘তথ্য অধিকার আইন ও গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কর্মশালায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার তথ্য অধিকার আইনের কার্যকর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে চায়। এই আইন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে পাস করা হয়। সরকার নিজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য এ আইন করেছে। তবে যেকোনো একটি আইন সমাজে তৈরি হলে সেটি বাস্তবায়নে বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে। এ আইনে যাঁরা তথ্য নেবেন বা যাঁরা তথ্য দেবেন—দুই পক্ষেরই কিছু বোঝাপড়ার অভাব থাকতে পারে।

তথ্য অধিকার আইন শক্তিশালী অস্ত্র হিসেবে গণমাধ্যমকে আরও শক্তিশালী করেছে, এমন মন্তব্য করে মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন, কিন্তু সে অস্ত্রের ব্যবহার নাকি অপব্যবহার হবে, সেটা বোঝা এবং এ আইনে যাঁদের কাছে তথ্য চাওয়া হবে, তাঁদের মধ্যে একটি সংস্কৃতিগত রূপান্তর দরকার। গণমাধ্যমের সাংবাদিকদেরও তথ্য চাওয়ার ক্ষেত্রে পেশাদারি দৃষ্টিভঙ্গি (অ্যাপ্রোচ) থাকা প্রয়োজন।

মোহাম্মদ আলী আরাফাত আরও বলেন, তথ্য অধিকার আইনের অধীন তথ্য চাওয়ার সময়ও কিছুটা ভুল–বোঝাবুঝি থাকে। কোন তথ্য সর্বসাধারণের জন্য এবং কোন তথ্য গোপন তথ্য, সেটার পার্থক্য করতে পারা জরুরি। কিছু তথ্য আছে স্পর্শকাতর, যেগুলো গোপনীয় আইনের অধীন রক্ষিত আছে। এগুলো সর্বসাধারণের জন্য নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক, বিটিআরসিসহ এ ধরনের স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বেশ কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হয়। এসব কৌশল বাস্তবায়নের আগপর্যন্ত অনেক সময় গোপন রাখতে হয়। এগুলো প্রকাশ করলে অনেক সময় বৃহত্তর স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ক্ষেত্রে সাংবাদিকতা, তথ্যের অবাধ প্রবাহ, তথ্য মানুষের কাছে পৌঁছানো এবং স্পর্শকাতর তথ্য—এগুলোর মধ্যে ভারসাম্য করতে হয়। সেখানে প্রশিক্ষণ, যোগাযোগ ও মিথস্ক্রিয়া—সব পক্ষের করা প্রয়োজন।

তথ্য প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তথ্য অধিকার আইনকে আমরা আরও প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। আমরা চাই, সাংবাদিকেরা যেন এই আইন ব্যবহার করে আরও ক্ষমতাপ্রাপ্ত হন, এই আইনের পুরোপুরি ব্যবহার করতে পারেন এবং তার উপযোগিতা আমরা সমাজে পাই। যাদের এই আইনের অধীন তথ্য দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আছে, তাদের প্রতি আহ্বান থাকবে যেন তথ্য চাওয়া হলে সেটি দেওয়া হয়। জনগণের পক্ষ থেকে যখন গণমাধ্যম তথ্য চাইবে, সে তথ্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে দেওয়া নিশ্চিত করতে হবে। সঠিক তথ্য যত দ্রুততম সময়ের মধ্যে সরবরাহ করা হবে, তত গুজব বা অপপ্রচার হওয়ার সুযোগ কম হবে।’

জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের অতিরিক্ত মহাপরিচালক সুফী জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য কমিশনের প্রধান তথ্য কমিশনার আবদুল মালেক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. খুরশীদ আলম। এ সময় তথ্য অধিদপ্তরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. শাহেনুর মিয়া, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী ফায়জুল হকসহ তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। কর্মশালায় বিভিন্ন গণমাধ্যমের অর্থনীতি বিটের ৫০ সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন।