উত্তাল সাগর: আপাতত পাইপলাইনে তেল খালাস হচ্ছে না

সৌদি আরব থেকে ৮২ হাজার টন অপরিশোধিত তেল নিয়ে আসা ট্যাংকার ‘এমটি হোরে’
ছবি: সংগৃহীত

সাগরে বড় ট্যাংকার থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে পরীক্ষামূলকভাবে জ্বালানি তেল খালাস শুরু হয়েছিল গত সোমবার। তবে পাঁচ ঘণ্টার মাথায় মুরিং পয়েন্ট (বিশেষায়িত বয়া) থেকে ট্যাংকারের রশি ছিঁড়ে যায়। পরীক্ষামূলক উদ্যোগ সফল না হওয়ায় এখন আপাতত আমদানি করা তেল নিয়ে আসা সেই বড় ট্যাংকার থেকে ছোট ট্যাংকারের মাধ্যমে তেল খালাসের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সরকারি তেল শোধনাগার প্রতিষ্ঠান ইস্টার্ন রিফাইনারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. লোকমান শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, ট্যাংকারটি থেকে নতুন করে পাইপলাইনে তেল খালাস হবে না। ছোট ট্যাংকারের মাধ্যমে তেল স্থানান্তর করে জেটিতে এনে তেল খালাস করা হবে। আগামী মঙ্গল বা বুধবার থেকে আগের পদ্ধতিতে তেল খালাস করা হবে।

সময় ও খরচ কমাতে বঙ্গোপসাগরে বড় ট্যাংকার থেকে ১১০ কিলোমিটার লম্বা পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল খালাস করে বন্দরনগরীর পতেঙ্গায় ইস্টার্ন রিফাইনারিতে আনার নতুন এ প্রকল্প নেওয়া হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) অধীন প্রতিষ্ঠান ইস্টার্ন রিফাইনারি। এর আওতায় সাগরে বিশেষায়িত বয়ার মতো স্থাপনা বসানো হয়।

প্রকল্পের পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সৌদি আরব থেকে আনা ৮২ হাজার টন অপরিশোধিত তেল এমটি হোরে নামের ট্যাংকার থেকে পাইপলাইনে খালাসের এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।

পাইপলাইনে দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একজন নাবিক শনিবার প্রথম আলোকে জানান, ৮২ হাজার টন তেলবাহী ট্যাংকারটি সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং বা এসপিএম প্রকল্পের বিশেষায়িত বয়ার সঙ্গে চেইন দিয়ে বাঁধা হয়েছিল। সাগরে তীব্র ঢেউয়ে চেইনটি ছিঁড়ে যায়। সে সময় পাইপলাইনে ট্যাংকারটি থেকে তেল খালাস করা হচ্ছিল। রশি ছিঁড়ে যাওয়ার পর ট্যাংকারের সঙ্গে থাকা পাইপও ছুটে যায়। এ সময় ভাসমান পাইপে থাকা তেল সাগরে ছড়িয়ে পড়ে। তবে বন্দরের সাহায্যকারী নৌযান থেকে রাসায়নিক ছিটিয়ে তেলের দূষণ কমানো হয়।

বাণিজ্যিক জাহাজের একজন ক্যাপ্টেন প্রথম আলোকে জানান, বন্দরের বিশেষায়িত মুরিংয়ে ছোট ট্যাংকারও তিন–চারটি মুরিং পয়েন্টে রশি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিংয়ে ট্যাংকার বেঁধে রাখার একটি পয়েন্ট আছে। বর্ষা মৌসুমে সাগর উত্তাল থাকায় একটি মুরিং পয়েন্টে বিশালাকার জাহাজ বেঁধে রেখে তেল খালাস করা কঠিন। বর্ষা মৌসুমে উত্তাল সাগরে ট্যাংকার যাতে ভারসাম্য না হারায় সে জন্য বিকল্প ভাবতে হবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।