ড. ইউনূসের লিভ টু আপিলের শুনানি আগামী সোমবার

হাইকোর্ট ভবনফাইল ছবি

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা একটি মামলা বাতিলের আবেদন খারিজের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের করা লিভ টু আপিল শুনানি আগামী সোমবার পর্যন্ত মুলতবি করেছেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ আজ বৃহস্পতিবার এই সময় পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ওই মামলা হয়।

দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে গত বছরের ৩০ মে মামলাটি করেন। ওই মামলায় গত ১২ জুন ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক। অভিযোগ গঠনের আদেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলে মামলার কার্যধারা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের তৎকালীন শীর্ষ ছয় কর্মকর্তা গত ৮ জুলাই আবেদন করেন। অন্য ছয় আবেদনকারী হলেন গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল ইসলাম, পরিচালক আশরাফুল হাসান, নাজনীন সুলতানা, শাহজাহান, নূরজাহান বেগম ও এস এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী।

আবেদনের শুনানি নিয়ে ২৪ জুলাই হাইকোর্ট আবেদনটি খারিজ করে আদেশ দেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল (আপিল করার অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের শীর্ষ কর্মকর্তারা। রাষ্ট্রপক্ষ বা দুদক পক্ষে পিপির মামলাটি প্রত্যাহার চেয়ে করা আবেদন ১১ আগস্ট মঞ্জুর করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪–এর বিচারক।

আজ আপিল বিভাগে আবেদনকারীদের পক্ষে আইনজীবী আবদুল্লাহ-আল-মামুন শুনানিতে অংশ নেন। রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও দুদকের পক্ষে আইনজীবী এ কে এম ফজলুল হক শুনানিতে অংশ নেন।

শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, তিনি (প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস) ক্ষমতার অপব্যবহার করে কোনো মামলা প্রত্যাহার চান না। যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আদালতের মাধ্যমে তিনি অভিযোগ থেকে খালাস পাবেন, যেখানে মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই।

দুদকের আইনজীবী এ কে এম ফজলুল হক বলেন, মামলাটি করে দুদক। আইন অনুসারে মামলা প্রত্যাহারে কমিশন থেকে পিপিকে লিখিত অনুমতি নিতে হয়। লিখিত অনুমতি ছাড়া মামলা প্রত্যাহার হয় না। দুদক পিপিকে লিখিত অনুমতি দেয়নি।

এর আগে আবেদনকারীদের আইনজীবী আবদুল্লাহ-আল-মামুন শুনানিতে বলেন, ‘অভিযোগ গঠনের আদেশের বিরুদ্ধে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ গ্রামীণ টেলিকমের শীর্ষ কর্মকর্তারা হাইকোর্টে আবেদন করেন। হাইকোর্ট আবেদনটি খারিজ করে দেন, যা প্রকাশের অপেক্ষায় ছিল। বিচারিক আদালত সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ৫ সেপ্টেম্বর দিন রাখেন। এ অবস্থায় মামলাটি ১১ আগস্ট প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা পিপি জানান বলে গণমাধ্যমে এসেছে। এ ক্ষেত্রে আসামিপক্ষকে জানানো হয়নি। আইনগতভাবে বিষয়টির নিষ্পত্তি চাই।’

শুনানির এক পর্যায়ে আদালত বলেন, ১১ আগস্ট দেওয়া আদেশটি আছে কি না? তখন আবেদনকারীপক্ষের আইনজীবী সময়ের আরজি জানালে আদালত সোমবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।