শ্রম খাতে মার্কিন উদ্বেগ কাটেনি, গণতান্ত্রিক উত্তরণে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে
বাংলাদেশের শ্রম খাতে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের তাগিদের বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরেই চলমান। বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ তাই নতুন নয়। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অন্তর্বর্তী সরকার এ খাতের বৈশ্বিক উদ্বেগগুলো দূর করবে, এমনটাই আশা করে যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টার প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে মার্কিন সহযোগিতা অব্যাহত থাকার কথাও জানিয়েছে দেশটি।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে প্রথমবারের মতো আলোচনায় শ্রম খাতসহ বিভিন্ন বিষয় তুলেছেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্বর্তীকালীন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন। গতকাল রোববার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশের শীর্ষ কূটনীতিকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। ১১ জানুয়ারি ঢাকায় দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি এই প্রথম পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন।
সূত্র জানায়, বৈঠকগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে শ্রম খাতের অসংগতিগুলো দূর করার প্রত্যাশা করা হয়। সেই সঙ্গে শ্রম খাতের সংস্কারের মাধ্যমে আইন সংশোধন করে আন্তর্জাতিক মানে নেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়। বাংলাদেশে শ্রমিকদের জন্য একটি শ্রম আইনের প্রত্যাশার কথা তুলে ধরা হয় বৈঠকে।
এ ছাড়া রোহিঙ্গা ও মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় বৈঠকে। যুক্তরাষ্ট্র জানতে চায়, বর্তমানে মিয়ানমারের রাখাইন সীমান্তে দেশটির সরকারি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ নেই। এ পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা ইস্যুতে বাংলাদেশ কীভাবে সেখানে দখলে থাকা আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। সেই সঙ্গে বৈঠকে মানবাধিকারসহ সংস্কারের বিষয়ে আলোচনা হয়।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে মার্কিন কূটনীতিকের আলোচনার পর মার্কিন দূতাবাসের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, উভয় বৈঠকেই সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক পথ তৈরিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে অভিন্ন স্বার্থ এবং অগ্রাধিকার নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জ্যাকবসনের সঙ্গে সাক্ষাতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, মানবাধিকার, শ্রম সংস্কার, রোহিঙ্গাসহ অন্যান্য অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে সম্পর্ক গভীর করার বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বর্তমান সরকারের কার্যক্রম তুলে ধরে অবাধ, স্বচ্ছ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে প্রধান উপদেষ্টার প্রতিশ্রুতির কথা আবারও তুলে ধরেন। সেই সঙ্গে সংস্কার কার্যক্রমে মার্কিন সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে মার্কিন সহযোগিতা অব্যাহত থাকার কথা বলেন জ্যাকবসন। বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরি নিয়ে সরকারের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন তিনি। সেই সঙ্গে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফেরত আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন জ্যাকবসন।