প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের পোস্ট, বিচার দাবি শিক্ষক সমিতির
ফেসবুকে সরকারবিরোধী পোস্ট দেওয়ার অভিযোগ এনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের বিচার চেয়েছে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি। ওই শিক্ষকের নাম মাইদুল ইসলাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। গতকাল রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিরীণ আখতারকে চিঠি দিয়ে এ বিচার চায় শিক্ষক সমিতি। ১৩ আগস্ট সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের বৈঠকের আলোকে এ চিঠি দেওয়া হয়। সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল হক এ চিঠিতে স্বাক্ষর করেন।
সমিতির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, মাইদুল ইসলাম ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারের বিরুদ্ধে নানা কুৎসা রটনা করে যাচ্ছেন। এর আগেও রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর নামে বিভিন্ন কুৎসা রটনাসহ আপত্তিকর পোস্ট করেছেন, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত শিক্ষক হিসেবে অসদাচরণের শামিল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লেখালেখির কারণে ছাত্রলীগের হুমকির মুখে ২০১৮ সালের ১৫ জুলাই ক্যাম্পাস ছাড়েন মাইদুল ইসলাম। প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় মামলা করেছিলেন এক ছাত্রলীগ নেতা। ওই মামলায় গত ওই বছর ৩৭ দিন কারাগারে ছিলেন তিনি। ওই সময় তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত তুলে নেয় কর্তৃপক্ষ। এরপর তিনি ক্যাম্পাসে ফিরেছিলেন।
মাইদুল ইসলাম বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা ছুটি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পিটসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্যতম সংগঠন ‘শিক্ষক নেটওয়ার্কের’ একজন সদস্য। এ ব্যাপারে মাইদুল ইসলামের সঙ্গে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তাঁকে মেসেঞ্জারের মাধ্যমে খুদে বার্তা পাঠালেও তিনি সাড়া দেননি।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, মাইদুল ইসলাম এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে আছেন। এ পেশায় যুক্ত থেকে এভাবে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট তিনি দিতে পারেন না। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় রাষ্ট্রপতিকে নিয়েও কটূক্তিমূলক পোস্ট করতে দেখা গেছে। তাই সমিতি থেকে ব্যবস্থা নিতে উপাচার্যকে জানানো হয়েছে।
জানতে চাইলে উপাচার্য শিরীণ আখতার প্রথম আলোকে বলেন, ‘মাইদুল শিক্ষক হওয়ার মতো মানুষ না। আমি এখন ঢাকায় আছি। সিন্ডিকেট, সিনেট ও শিক্ষকদের নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’