স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে একসঙ্গে কাজ করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী
জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশে ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্টের যেকোনো পদক্ষেপ ও জাতির অগ্রগতির বিরুদ্ধে অপপ্রচার সম্পর্কে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বানও জানান তিনি।
শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার গণভবনে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের মাতৃভূমিকে এগিয়ে নিতে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান—সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করব। আমরা আমাদের জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা ও ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ব।’
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। স্মার্ট জনশক্তি, স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট সোসাইটি নিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে আরও এগিয়ে যাবে স্মার্ট সরকার। কারণ, তাঁর সরকার ২০০৮ সালের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ইতিমধ্যে দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার ক্ষমতায় আসার পর সংবিধান সংশোধন করে জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে জনগণের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও অধিকার পুনরুদ্ধার করেছে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী হিন্দু সম্প্রদায়কে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, দেশটি সবার। কারণ, জাতি-ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ৯ মাস যুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হয়েছে।
হিন্দু সম্প্রদায়কে নিজেদের সংখ্যালঘু মনে না করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা কেন নিজেদের সংখ্যালঘু বলেন? এ দেশে সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু বলতে কিছু নেই; বরং বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করেন। নিজেদের সংখ্যালঘু বা দুর্বল মনে করবেন না। তা ছাড়া আপনারা কেনই এমনটা মনে করেন, যেখানে আপনারা এ দেশেরই মানুষ?’
তাঁর সরকার সব সময় বাংলাদেশে ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার এবং এমন একটি সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষার চেষ্টা করে যাচ্ছে, যেখানে একজন আরেকজনের অধিকার ক্ষুণ্ন করবে না এবং সব মানুষ সমান অধিকার উপভোগ করবে, বলেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জানি, সব জয়গায় কিছু স্বার্থান্বেষী লোক আছে, যারা কিছু সমস্যা তৈরি করতে চায়। কেউ যেন কোনো সমস্যা তৈরি করতে না পারে, সবাইকে সেদিকে নজর দিতে হবে।’
দেশ-বিদেশে অপপ্রচার চালাচ্ছে, এমন কিছু মানুষের বিরুদ্ধেও শেখ হাসিনা সবাইকে সতর্ক করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি সবাইকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর দেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধ্বংস হয়। জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পর হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ বারবার অমানবিক নির্যাতন ও দমনপীড়নের শিকার হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আবারও সংবিধান সংশোধন করে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষের জন্য সমান অধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছি।’
শেখ হাসিনা তাঁর দলকে ভোট দিয়ে দেশে অসাম্প্রদায়িক চেতনা পুনরুদ্ধারের সুযোগ দেওয়ার জন্য দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানান।