যুবদল নেতা মুকিতকে ধরে ডিবি বলছে, তিনি ‘বোমার কারিগর’

গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মুকিত হোসেনছবি: সংগৃহীত

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মুকিত হোসেনের ডান হাত নেই। তিনি কৃত্রিম হাত ব্যবহার করেন। তাঁকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) দাবি করেছে, কৃত্রিম ওই হাত দিয়েই মুকিত বোমা বানান। ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় তাঁর বানানো বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন যুবদলের নেতা–কর্মীরা।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও ডিবিপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এসব কথা বলেন। তিনি দাবি করেন, মুকিতের ডান হাত না থাকলেও সেখানে প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি কৃত্রিম হাত লাগিয়ে তিনি প্রায় ৪০০ বোমা বানিয়েছেন। সেসব বোমা ব্যবহার করে গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশের দিন পুলিশ হত্যাসহ ঢাকা শহরে তাণ্ডব চালায় দলটি।

মুকিতকে গতকাল সোমবার পুরান ঢাকার চকবাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান গোয়েন্দা কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, মুকিত আলিয়া মাদ্রাসা ছাত্রদলের সহসভাপতি ও সভাপতি ছিলেন। পরে তিনি ছাত্রদল মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০১৩-১৪ সালে বোমা বানাতে গিয়ে তাঁর ডান হাতের কবজি উড়ে যায়। দলীয় আনুগত্য ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য ২০২৩ সালের জুলাই মাসে তাঁকে মহানগর দক্ষিণ যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মনোনীত করা হয়।

ডিবি কর্মকর্তা হারুন অর রশীদের ভাষ্য, গত ২৭ অক্টোবর রাতে মতিঝিল ব্যাংক কলোনিতে যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিনের (টুকু) পাঠানো ১০ কেজি গান পাউডার দিয়ে কয়েক দফায় প্রায় ৪০০ হাতবোমা তৈরি করেন মুকিত। সেসব বোমা বিভিন্ন থানা যুবদলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবদের সরবরাহ করা হয়। তাঁর সরবরাহ করা ২০টি হাতবোমা থেকে ১টি হাতবোমা ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রাঙ্গণে বিস্ফোরণ ঘটান ওয়ারীর আবদুল হামিদ ভূঁইয়া ও তাঁর স্ত্রী হাফসা আক্তার।

হারুন অর রশীদ দাবি করেন, গত ২৮ অক্টোবর এবং পরবর্তী হরতাল, অবরোধে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক ছড়ানোর কাজে মহানগর যুবদল দক্ষিণে আটটি টিম গঠন করে। কেন্দ্রীয় যুবদল ও মহানগর যুবদলের সঙ্গে সমন্বয় করে বিভিন্ন জায়গা থেকে গান পাউডার সংগ্রহ করে তা দিয়ে বোমা বানিয়ে বিস্ফোরণ ঘটানো, ওয়ার্ড এবং থানা পর্যায়ের যুবদলের কর্মীদের দিয়ে যানবাহনে আগুন দেওয়ার কমপক্ষে ছয়টি ঘটনার সমন্বয় করেছেন মুকিত।

তবে পুলিশের এই বক্তব্য নাকচ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির এক দফার আন্দোলনকে কালিমালিপ্ত করা এবং তরুণ নেতৃত্বকে ধ্বংস করার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এই ঘটনাগুলো অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে করছে। এসব ঘটনা ২০১৩ ও ২০১৪ সালের ঘটনাবলির পুনরাবৃত্তি। নেতা–কর্মীদের ধরে নিয়ে নির্যাতন করে, গুম করে স্বীকারোক্তি আদায় করে গণমাধ্যমে বলছে।