‘সময়মতো’ খাবার না দেওয়ায় দোকানিকে মারধর ছাত্রলীগ নেতার

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
ফাইল ছবি

সময়মতো খাবার পরিবেশন না করায় এক দোকানদারকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। রোববার বিকেলে কলা অনুষদের ঝুপড়ির এক খাবারের দোকানে এ ঘটনা ঘটে। মারধরের প্রতিবাদে ওই সময় থেকে ঝুপড়ি এলাকার ১২টি দোকান বন্ধ রেখেছেন দোকানদারেরা।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা ইছহাক আলম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা বিষয়ক উপ সম্পাদক এবং ‘উপপক্ষ’ সিক্সটি নাইনের কর্মী।

মারধরের শিকার দোকানি মোহাম্মদ রাসেল প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্রলীগ নেতা ইসহাক রোববার বিকেলে দোকানে এসে ভাত দেওয়ার জন্য বলেন। তাঁদের দোকানে ততক্ষণে রান্না ভাত শেষ। এ জন্য তিনি ওই নেতাকে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার জন্য বলেন। কারণ, ওই সময় তাঁরা নতুন করে ভাত রান্না শুরু করেছিলেন। কিন্তু নেতা তাঁর কথায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল দেন। এঁটো পানি তাঁর গায়ে ছুঁড়ে মারেন। দোকানের জগ, বাসনকোসনও ভাঙচুর করেন।

মোহাম্মদ আলম ঘটনাটি আশপাশের দোকানের মালিকদের জানালে তাঁরা এ বিচারের দাবিতে ঝুপড়ির সব দোকান বন্ধ করে দেন। তবে এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে ইছহাক আলমের মুঠোফোন একাধিকবার কল করা হলেও তাঁর সাড়া পাওয়া যায়নি। পরে মুঠোফোন ঘটনাটির উল্লেখ করে খুদেবার্তা পাঠালেও তিনি সাড়া দেননি।

দোকান বন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের এক খাবারের দোকানদারকে ছাত্রলীগের এক নেতার মারধরের প্রতিবাদে দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। পরে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন এসে অভিযুক্ত নেতার বিচার করার আশ্বাস দিয়েছেন। তাঁর আশ্বাসের পর দোকানদারেরা দোকান খুলতে রাজি হয়েছেন। সোমবার থেকে দোকান খোলা থাকবে।’

তবে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন ছাত্রলীগের কারও এ ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে খাবারের দোকানির ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। তিনি বসে বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করে নিয়েছেন। এটি সাংগঠনিক কোনো বিষয় নয়।

চট্টগ্রাম বিশ্ববদ্যালয় ছাত্রলীগের রাজনীতি দীর্ঘদিন ধরে দুটি পক্ষে বিভক্ত। একটি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর ও আরেকটি সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী। দুটি পক্ষের উপপক্ষ আছে ১১টি। এর মধ্যে শিক্ষা উপমন্ত্রীর দুটি ও বাকি ৯টি উপপক্ষ নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসাবে পরিচিত। সিক্সটি নাইন উপপক্ষ আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসাবে নিজেদের পরিচয় দেন। এই উপপক্ষের নেতৃত্ব দেন শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন।