বাংলাদেশ থেকে অন্যদের মানবাধিকারের শিক্ষা নেওয়া দরকার: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনছবি: সংগৃহীত

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশে বিরোধী দলের নেতা–কর্মীদের হয়রানি, নির্যাতন ও জেলে আটকে রাখা নিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ নাকচ করেছেন। তাঁর দাবি, বিরোধী দল বা ভিন্নমতের যাঁদের শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে, তাঁরা সন্ত্রাসী। ছবি ও ভিডিও ফুটেজে তাঁদের নাশকতামূলক কর্মে সম্পৃক্ততার প্রমাণ রয়েছে।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে অন্যদের মানবাধিকারের শিক্ষা নেওয়া দরকার।

রাজনৈতিক কারণে বিরোধী দলের কোনো নেতা বা কর্মীকে হয়রানি করা হচ্ছে না দাবি করে আব্দুল মোমেন বলেন, বিরোধী দলের একজনকেও হয়রানি, নির্যাতন করা হচ্ছে না। যাঁরা সন্ত্রাসী, মানুষের বাড়িঘর জ্বালায়, সরকারি ও বেসরকারি সম্পদ বিশেষ করে বাস, ট্রেন, ট্রাক জ্বালাতে গিয়ে ধরা পড়ছেন, মানুষকে পোড়াচ্ছেন, তাঁদের শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে।

যাঁদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, তাঁদের বারবার ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে মন্ত্রী বলেন, যাঁরা সন্ত্রাসী কাজে লিপ্ত রয়েছেন, তাঁদের উচিত, তা এখনই পরিহার করা। তাঁদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানাই।

নির্বাচন ও নির্যাতনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর উদ্বেগের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মানবাধিকারের দিক থেকে অন্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ একটি আদর্শ দেশ। উন্নত দেশে বিপণিবিতানে, ক্লাবে, স্কুলে যখন–তখন মানুষ মারা হয়। বাংলাদেশে কোথাও মসজিদে, শপিং মলে বা ক্লাবে প্রকাশ্যে আক্রমণ করে মানুষ মেরে ফেলার ঘটনা নেই। বাংলাদেশে বিনা বিচারে কাউকে মেরে ফেলা হয় না।

এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে কোনো টানাপোড়েন নেই। যেটুকু ভুল–বোঝাবুঝি ছিল, তার অবসান ঘটেছে।

বিগত পাঁচ বছরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন দলের কোনো ব্যর্থতা চোখে পড়ে কি না, জানতে চাইলে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমাদের অনেক সাফল্য রয়েছে, যা আমি বলতে পারি। কোনো ব্যর্থতা রয়েছে বলে আমার জানা নেই।’

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন করতে না পারা কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী, মন্ত্রণালয় তথা সরকারের ব্যর্থতা নয়? এমন সম্পূরক প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘না, এটা ঠিক ব্যর্থতা নয়। রোহিঙ্গারা যেকোনো সময় ফেরত যাবে বলে আশা রাখি।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘এখানে একটি কথা বলে রাখি, শুধু বাংলাদেশ বা মিয়ানমার চাইলেই রোহিঙ্গা ফেরত যাবে না, অন্যান্য বহু প্রতিষ্ঠান, বিদেশি বন্ধু, যারা বন্ধু হিসেবে আমাদের পরামর্শ দেয়, তাদের অনেকেই চায় না, এ অবস্থায় রোহিঙ্গারা ফেরত যাক। তারা এ-ও বলে, বাংলাদেশে ১৭ কোটি মানুষ রয়েছে, সেখানে বাড়তি ১০ লাখ থাকলে সমস্যা কী?’

মন্ত্রী জানান, কেউ কেউ রোহিঙ্গাদের দক্ষতার উন্নয়ন করে মূলস্রোতে সম্পৃক্ত করারও পরামর্শ দিচ্ছেন।