ছবিতে যে ঘটনা বলা হয়, প্রত্যেক সরকারই তা অস্বীকার করে: শহিদুল আলম

অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন দৃক পিকচার লাইব্রেরির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলম। ঢাকা, ১৯ এপ্রিলছবি: সংগৃহীত

দৃক পিকচার লাইব্রেরির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলম বলেছেন, প্রতিবছর ছবিতে যে ঘটনাগুলোর কথা বলা হয়, প্রত্যেক সরকারই তা অস্বীকার করে গেছে। নাগরিক হিসেবে সব সময় সচেতন ও অনড় থাকতে হবে, আলোকচিত্রীরা সেটা ভুলে যাননি।

বাংলাদেশ প্রেস ফটো প্রতিযোগিতা ২০২৫-এর পুরস্কার প্রদান ও প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্যে এ কথা বলেন শহিদুল আলম। শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর পান্থপথে দৃকপাঠ ভবনে এই আয়োজন করে দৃক পিকচার লাইব্রেরি।

শুভেচ্ছা বক্তব্যে শহিদুল আলম বলেন, ‘যখন যেই সরকারই থাকুক, আমাদের কাছে এটাই থাকবে। আলোকচিত্রীদের কাজ, ফটোসাংবাদিকদের কাজ সারাক্ষণই চোখে আঙুল লাগিয়ে ধরিয়ে দেওয়া, না, এটা আমরা গ্রহণ করব না। আমরা যদি সত্যিকার অর্থে বৈষম্যহীন বাংলাদেশের কথা বলি, তাহলে সকল স্তরে সকল মানুষের ক্ষেত্রে এটা বৈষম্যহীন হতে হবে।’

প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে ছিলেন আলোকচিত্রী ও শিক্ষক মুনেম ওয়াসিফ। তিনি মনে করেন, মিডিয়া জগতে ফটোসাংবাদিকেরা সবচেয়ে বেশি অবহেলিত।

বাংলাদেশের অনেক ফটোসাংবাদিক এখন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। অসাধারণ কাজ করছেন। ফটোসাংবাদিকদের নিজেদের অধিকারের জায়গাটা আরেকটু প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। সেটা করার জন্য প্রত্যেক ফটোসাংবাদিকের নিজের ছবি নিয়ে নিজের লেখা উচিত।

ছবি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে যে ছবিগুলো বাস্তবতাকে প্রশ্ন করে, সেগুলোকে প্রাধান্য দিয়েছেন বলে জানান আরেক বিচারক চাকমা সার্কেলের উপদেষ্টা ও মানবাধিকারকর্মী রানি ইয়ান ইয়ান।

এ সময় আরও বক্তব্য দেন প্রথম আলোর বিশেষ ফটোসাংবাদিক জাহিদুল করিম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছেন এই প্রদর্শনীর কিউরেটর এ এস এম রেজাউর রহমান।

বিচারকদের সঙ্গে পুরস্কারজয়ী আলোকচিত্রীরা। ঢাকা, ১৯ এপ্রিল
ছবি: প্রথম আলো

প্রতিযোগিতায় ‘বর্ষসেরা আলোকচিত্র পুরস্কার’ পেয়েছেন প্রথম আলোর সাবেক ফটোসাংবাদিক আশরাফুল আলম। পুরস্কার হিসেবে তাঁকে এক লাখ টাকা, ক্রেস্ট ও সনদ দেওয়া হয়েছে। রাজনীতি বিভাগে বণিক বার্তার ফটোসাংবাদিক কাজী সালাহউদ্দিন রাজু, জনমুখী সাংবাদিকতা বিভাগে বিজনেস বাংলাদেশের ফটোসাংবাদিক এম ইউসুফ তুষার এবং শিল্প, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া বিভাগে ইমেজ ফর ফটোগ্রাফিক সোসাইটির জহির আহাম্মেদ শাকিল বিজয়ী হয়েছেন। তাঁদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা, ক্রেস্ট ও সনদ দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া রাজনীতি বিভাগে ফটোসাংবাদিক কুমার বিশ্বজিৎ, জনমুখী সাংবাদিকতা বিভাগে ফটোসাংবাদিক মো. আবু নোমান এবং শিল্প, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া বিভাগে দ্য ডেইলি স্টারের ফটোসাংবাদিক রাশেদ সুমনকে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। তাঁদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা, ক্রেস্ট ও দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আদিবাসী জনগোষ্ঠী গ্রান্ট পেয়েছেন আলোকচিত্রী জাজং নকরেক।

দৃক পিকচার লাইব্রেরি জানিয়েছে, বাংলাদেশের সম্মুখসারিতে কর্মরত আলোকচিত্র সাংবাদিকদের অর্জনকে উদ্‌যাপন ও সম্মান জানাতে প্রদর্শনীতে গত বছরের শ্রেষ্ঠ আলোকচিত্র সাংবাদিকতার কাজগুলো প্রদর্শিত হবে। এই প্রদর্শনী চলবে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে প্রদর্শনী।