জুলাই শহীদদের স্মরণে ‘এক শহীদ, এক বৃক্ষ’ রোপণ হবে
জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের আত্মত্যাগকে সম্মান জানিয়ে ‘এক শহীদ, এক বৃক্ষ’ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। প্রতিজন শহীদের সম্মানে একটি করে বৃক্ষরোপণ করা হবে। ঢাকাসহ দেশের ৬৪ জেলায় এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে বন অধিদপ্তর।
জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালার অংশ হিসেবে ১৯ জুলাই ৬৪টি জেলায় সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে এ বৃক্ষরোপণ করবে বন অধিদপ্তর। শহীদদের স্মরণে বিভিন্ন ফলদ, ঔষধি, বনজ ও শোভাবর্ধনকারী গাছ লাগানো হবে।
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে এ ধরনের একটি কর্মসূচির উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরপর ২ জুলাই তাদের পক্ষ থেকে দেওয়া এক চিঠিতে এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা চাওয়া হয়। এরপর মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে বন অধিদপ্তরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
৯ জুলাই দেশের ৬৪ জেলায় শহীদদের স্মরণে বৃক্ষরোপণের স্থান নির্বাচন ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ের লক্ষ্যে একটি সভা করে বন অধিদপ্তর। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, প্রতিটি গাছের সঙ্গে থাকবে জুলাই শহীদদের স্মৃতিফলক। সেখানে শহীদদের পরিচয় দেওয়া থাকবে। পাশাপাশি ফলকের সঙ্গে থাকবে একটি কিউআর কোড। এটি স্ক্যান করলে নির্দিষ্ট শহীদের জুলাই অভ্যুত্থানে ভূমিকা উঠে আসবে।
জানতে চাইলে বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা কেন্দ্রীয়ভাবে ৮৫৩ জন শহীদের স্মরণে গাজীপুরের চন্দ্রায় বৃক্ষরোপণ করবেন। এ ছাড়া প্রতিটি জেলায় যতজন শহীদ আছেন, তাঁদের স্মরণে ততটি বৃক্ষরোপণ করবে বন বিভাগ।
গত বুধবার বন অধিদপ্তরের এক ভার্চ্যুয়াল সভায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দেশীয়, ফলদ, বনজ, ঔষধি ও শোভাবর্ধনকারী গাছের প্রয়োজনীয় সংখ্যক চারা যথাস্থানে সরবরাহের বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রতিটি গাছের পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বন অধিদপ্তরের বিভাগীয় কার্যালয়গুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পড়েছে ঢাকা বন বিভাগের ওপর। এ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. বশীরুল আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে গাজীপুরের চন্দ্রার ফায়ার সার্ভিসের বিপরীতে একটা স্থানকে নির্বাচন করেছি। এখানে চার একরের মধ্যে এ বৃক্ষরোপণ করার পরিকল্পনা আছে আমাদের।’
বন বিভাগের নির্দেশনায় বৃক্ষরোপণের স্থান হিসেবে দৃষ্টিনন্দন স্থান নির্বাচনের জন্য বলা হয়েছে। বন অধিদপ্তরের ২৯টি বিভাগীয় বন কার্যালয়ের অধীনে শহীদদের জন্য এ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রকল্প ব্যবস্থাপক (প্রজেক্ট ম্যানেজার) মো. মেহেদি হাসান প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিটি গাছের সঙ্গে একটা স্মৃতিফলক থাকবে। সেখানে একটা কিউআর কোড ও এমআইএস (ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সার্ভিস) নম্বর দেওয়া থাকবে। আগ্রহীরা ফলকের কিউআর কোড স্ক্যান করে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটের লিংক পাবেন। লিংকে ক্লিক করে এমআইএস নম্বর দিলে জুলাই অভ্যুত্থানে ওই শহীদের অবদান ও পরিচিতি চলে আসবে।