বগুড়ায় বিএনপি নেতা হত্যা মামলার প্রধান আসামি কাউন্সিলর আমিনুল কারাগারে

আমিনুল ইসলাম
ছবি: সংগৃহীত

বগুড়া সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম ওরফে শাহীন হত্যা মামলার প্রধান আসামি আমিনুল ইসলামকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ বুধবার বগুড়ার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন তিনি।

তবে আদালতের বিচারক ও জেলা দায়রা জজ এ কে এম মোজাম্মেল হক চৌধুরী তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশে দেন। বগুড়া আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আবদুল মতিন প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর মামলার অভিযোগ গঠনের দিনও আদালত আসামির জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন। তারও আগে ২০১৯ সালে রাজধানীর মতিঝিল এলাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম এলাকা থেকে পুলিশ এ হত্যা মামলায় পলাতক আসামি আমিনুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছিল।

আমিনুল ইসলাম বগুড়া পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং রাজশাহী বিভাগীয় সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি ও বগুড়া জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়া তিনি বগুড়া সদর উপজেলা যুবলীগের সাবেক সহসভাপতি। ঢাকা-উত্তরবঙ্গ রুটে চলাচলকারী শাহ ফতেহ আলী পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালকও তিনি।

পুলিশ জানায়, ২০১৯ সালের ১৪ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০টার দিকে বগুড়া শহরের উপশহর বাজারের দশতলা বিল্ডিং এলাকায় বিএনপির নেতা মাহবুব আলমকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মাহবুবের স্ত্রী আকতার জাহান বাদী হয়ে ১৬ এপ্রিল বগুড়া সদর থানায় ১১ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মামলায় বগুড়া পৌরসভার তৎকালীন প্যানেল মেয়র ও যুবলীগ নেতা আমিনুল ইসলামকে প্রধান আসামি করা হয়।

বিএনপির নেতা ও আইনজীবী মাহবুব হত্যাকাণ্ডের পর থেকে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বগুড়া জেলা বিএনপি ও জেলা আইনজীবী সমিতি শহরে বিক্ষোভ সমাবেশ, মানববন্ধনসহ লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি পালন করে। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও নিহত নেতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এসে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

মাহবুব আলম
ছবি: সংগৃহীত

হত্যা মামলায় পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার পায়েল শেখ ও রাসেল নামের দুই আসামি বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিল্লাল হোসাইনের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। স্বীকারোক্তিতে দুজনই উল্লেখ করেছেন, জেলা মোটর মালিক গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধের জেরে বিএনপির নেতা মাহবুব আলমকে হত্যা করা হয়েছে। মোটর মালিক গ্রুপের এক ‌‘বড় ভাই’–এর নির্দেশে এ হত্যাকাণ্ডে ১২ জন অংশ নিয়েছেন।

পুলিশ জানায়, মাহবুব আলম হত্যাকাণ্ডের পর গা ঢাকা দেন মোটর মালিক সমিতির নেতা আমিনুল ইসলাম। এ মামলায় গ্রেপ্তার আসামি পায়েল শেখ, রাসেলসহ চার আসামি আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতেও হত্যাকাণ্ডে আমিনুল ইসলামের সম্পৃক্ততার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এ কারণে ২৩ এপ্রিল তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তদন্ত শেষে পুলিশ আমিনুল ইসলামসহ এ মামলার ১৪ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।

বগুড়ার আদালতের প‌রিদর্শক মোসা‌দ্দেক হোসেন ব‌লেন, মাহবুব আলম হত্যা মামলায় পৌর কাউন্সিলর আমিনুল ইসলাম আদাল‌তে হা‌জির হ‌য়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জা‌মিনের আবেদন জানালে আদালত জা‌মিন নামঞ্জুর ক‌রে তাঁকে কারাগা‌রে পাঠা‌নোর নি‌র্দেশ দেন।