জালিয়াতির মাধ্যমে এনআইডি তৈরির মামলায় চিকিৎসক সাবরিনার বিচার শুরু

চিকিৎসক সাবরিনা আরিফ চৌধুরী
ছবি: সাবরিনার ফেসবুক থেকে নেওয়া

জালিয়াতির মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তৈরির অভিযোগে করা মামলায় জেকেজি হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান চিকিৎসক সাবরিনা আরিফ চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত।

ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আহমেদ আজ সোমবার অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন। এর মধ্য দিয়ে মামলাটির বিচারকাজ শুরু হলো। মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ১৩ জুন তারিখ ধার্য করেছেন আদালত। প্রথম আলোকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী রাসেল সরকার।

আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, জালিয়াতির মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তৈরির অভিযোগে করা মামলায় সাবরিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ধার্য ছিল আজ। আসামিপক্ষ আজ মামলা থেকে সাবরিনার অব্যাহতি চেয়ে আদালতে আবেদন করে। আবেদনটি নাকচ করে সাবরিনার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।

মামলায় জামিনে আছেন সাবরিনা। তিনি আজ আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অভিযোগ গঠনের শুনানিতে তিনি নিজেকে নিরপরাধ দাবি করেন।

আরও পড়ুন

মহামারির মধ্যে করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা না করে ভুয়া সনদ দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় ২০২০ সালে ১২ জুলাই সাবরিনাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি জাতীয় হৃদ্‌রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার ছিলেন। গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করে কর্তৃপক্ষ।

জালিয়াতি করে জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির অভিযোগে একই বছরের ৩০ আগস্ট সাবরিনার বিরুদ্ধে রাজধানীর বাড্ডা থানায় আরেকটি মামলা হয়। মামলাটি করেন গুলশান থানার নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মমিন মিয়া।

মামলাটি তদন্ত করে গত বছরের ২৪ নভেম্বর সাবরিনার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, সাবরিনা ২০০৯ সালে প্রথম জাতীয় পরিচয়পত্র করেন। এতে তাঁর নাম লেখা রয়েছে সাবরিনা শারমিন হোসেন। তাঁর বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা মোহাম্মদপুরের শ্যামলী বলে উল্লেখ আছে এই পরিচয়পত্রে। জন্মতারিখ দেওয়া আছে ১৯৭৮ সালের ২ ডিসেম্বর। পেশা হিসেবে সরকারি চাকরির কথা উল্লেখ আছে। বাবার নাম সৈয়দ মুশাররফ হোসেন। মায়ের নাম কিশোয়ার জেসমিন। এরপর ২০১৬ সালে সাবরিনার আরেকটি জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য পায় ডিবি। এতে সাবরিনার নাম আছে সাবরিনা শারমিন হুসেন। বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা দেওয়া আছে বাড্ডা। জন্মতারিখ দেওয়া আছে ১৯৮৩ সালের ২ ডিসেম্বর। পেশা চিকিৎসক। বাবার নাম সৈয়দ মুশাররফ হোসেন, মায়ের নাম জেসমিন হুসেন।

আরও পড়ুন

অভিযোগপত্রে বলা হয়, মিথ্যা ও তথ্য বিকৃতি করে সাবরিনার একাধিক জাতীয় পরিচয়পত্র গ্রহণের সত্যতা তদন্তে উঠে এসেছে। এর মাধ্যমে তিনি জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন আইন-২০১০-এর ১৪/১৫ ধারায় অপরাধ করেছেন। এ ছাড়া জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে করা আয়কর বিবরণী খাঁটি দলিল হিসেবে তাঁর ব্যবহার করার প্রমাণও পাওয়া গেছে। যা দণ্ডবিধির ৪৬৫, ৪৬৮ ও ৪৭১ ধারায় অপরাধ।

করোনার ভুয়া প্রতিবেদন দেওয়ার মামলায় ২০২২ সালের ১৯ জুলাই সাবরিনা, তাঁর স্বামী আরিফুল হক চৌধুরীসহ আটজনকে ১১ বছর করে কারাদণ্ড দেন ঢাকার সিএমএম আদালত। পরে সাবরিনা জামিনে মুক্ত হন।

আরও পড়ুন