আঞ্চলিক যোগাযোগের প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর
ছবি: বাসস

বাংলাদেশ ও ভারতের পাশাপাশি নেপাল ও ভুটানের জনগণের কল্যাণে কাজে আসবে, এমন প্রকল্পে অগ্রাধিকার দিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার বিকেলে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে চার দেশকে যুক্ত করে, এমন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে জোর দেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাতের পর পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। দিল্লির মৌর্য শেরাটন হোটেলে পররাষ্ট্রসচিব সাংবাদিকদের বলেন, আলোচনায় সংযুক্তিতে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কাছ থেকে ভারতের যেসব চাওয়া রয়েছে এবং বাংলাদেশের অনিষ্পন্ন বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়েছে।

মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভারতসহ নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশ মিলিয়ে পুরো অঞ্চলের মানুষের কল্যাণের জন্য যেসব প্রকল্প রয়েছে, সেগুলোতে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। আমরা জানি যে বেশ কিছু প্রকল্প যেমন বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল (বিবিআইএন) বেশ দেরি হচ্ছে। একইভাবে আমাদের বন্দর নেপাল ও ভুটানের ব্যবহার করার বিষয় আছে।’

পররাষ্ট্রসচিব বলেন, সংযুক্তি মানে শুধু অবকাঠামোর সংযুক্তি নয়, জনগণের মেলবন্ধন, জ্বালানির সংযোগসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে যেভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ নিতে পারে, একইভাবে নেপাল ও ভুটানের এক অংশ থেকে আরেক অংশে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁর সঙ্গে সহমত প্রকাশ করেছেন। এ ছাড়া পানির বিষয়ে কীভাবে অগ্রগতি করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

আঞ্চলিক প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনার সময় মিয়ানমারের রাখাইনের সাম্প্রতিক অস্থিরতা এবং রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে একে অপরকে সহযোগিতার বিষয়গুলো এসেছে বলে উল্লেখ করেন মাসুদ বিন মোমেন। প্রধানমন্ত্রী সৌজন্য সাক্ষাতের সময় বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমারের রাখাইনে যে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে, সেটা প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলবে কি না, তা নিয়ে সবার মনে শঙ্কা রয়েছে। এ সময় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ভারতও লক্ষ করছে সেখানে কিছুটা অশান্তি বিরাজ করছে, যেটা কারও জন্যই মঙ্গলজনক নয়।

আরও পড়ুন

পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ইউক্রেন–রাশিয়া সংকটে পুরো বিশ্বে অর্থনীতিসহ নানা ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সংকট মোকাবিলায় সহযোগিতা বাড়াতে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।

মাসুদ বিন মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর চার দিনের ভারত সফরের প্রথম দিন বিকেলে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে শুভেচ্ছা বার্তা পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি তাঁকে স্বাগত জানান এস জয়শঙ্কর।

আরও পড়ুন

এ সময় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে একই বছরে ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সফর করেছিলেন। তাঁরা বলছেন এবার প্রধানমন্ত্রীর ফিরতি ভারত সফরের মধ্য দিয়ে পুরো চক্রটি শেষ হলো। এর মধ্য দিয়ে দুই দেশের সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে।